
গত কয়েক মাস নাটকপাড়ার অনেকেরই খারাপ সময় যাচ্ছে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো স্পন্সর সংকটে ভুগছে, পরিচালকদের অনেকেই কাজ পাচ্ছেন না, তারকা শিল্পীদেরও নাটকের সংখ্যা কমেছে। শিল্পীদের হাতে আগের মতো কাজ নেই বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
অভিনেত্রী মৌ শিখার ফেসবুক পোস্ট সেটি আরো স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই অভিনেত্রী আগে মাসে যেখানে ১৫ থেকে ২০ দিন কাজ করতেন, সেখানে এখন মাসে চার থেকে পাঁচ দিন কাজ করছেন।
ঈদের পর থেকে দর্শকপ্রিয় অভিনয়শিল্পীদের অনেককেই নিয়মিত কাজে ফিরতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে জোভান দুই মাসের বিরতির কথা জানিয়েছেন। আবার অনেকে এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। নির্মাতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাজ কমে যাওয়ায় তারকা শিল্পীদের অনেকে দেশের বাইরে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ কেউ তার কাজের জন্য অপেক্ষা করছেন।
নাটকপাড়ার বর্তমান অবস্থা নিয়ে সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে কথা বলেন জনপ্রিয় অভিনেতা জামিল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি আগে মাসে ১৫ দিনের মতো কাজ করতাম। এখন সেটা ১০ দিনের মধ্যে নেমে এসেছে। অনেকে এর চেয়ে কম সময়ও এখন কাজ করছেন। কেউ বলতে পারছেন, কেউ বলছেন না। সত্যি বলতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চলমান না থাকার কারণে অনেক প্রযোজক এখন আগের মতো পৃষ্ঠপোষকতা করছেন না।’
অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মামুন অপু বলেন, ‘করোনার চেয়ে খারাপ সময় আমরা পার করছি। সে সময় আমরা সাহায্য-সহযোগিতা করতে পেরেছি। কিন্তু এখন সেই পরিবেশটাও নেই। অনেক শিল্পীই মুখ খুলে তার কথাটা বলতে পারছেন না। বিশেষ করে যারা নাটকে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে জীবন যাপন করতেন, তারা এখন খুব খারাপ সময় পার করছেন।’
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এবারের ঈদে গত চার বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম নাটক প্রচারিত হয়েছে। টেলিভিশন প্রযোজকদের সংগঠন থেকে জানা যায়, শুধু ঈদেই নয়, ঈদের পরও নাটক নির্মাণের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমছে। যে কারণে বেশির ভাগ শিল্পী ও কলাকুশলীই শুটিং থেকে দূরে। নাটক ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বেকার হয়ে পড়ছেন। শুটিং বাড়িগুলোও বুকড হচ্ছে না। এতে সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন কম আয়ের অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি জানান, তার অনেক নাটক এবার ঈদে শুধু স্পন্সর সংকটের কারণে প্রচার হয়নি।
রাজধানীর উত্তরা, ৩০০ ফিট এলাকায় সব মিলিয়ে ১৫টির মতো শুটিং বাড়ি ছিল। এই সংখ্যা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। শুটিং বাড়ির মালিকদের সংগঠন ‘শুটিং হাউস অ্যাসোসিয়েশন’-এর উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার দুটি শুটিং হাউস আছে। এক বছর আগেও এটি মাসে ২৫ দিনের মতো ভাড়া যেত। কিন্তু এখন সেটি অর্ধেকে নেমে এলো। মাসে ১১ থেকে ১২ দিন এখন শুটিং হচ্ছে আমার হাউসে। প্রায় প্রতি মাসেই আমাকে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।’