Logo
×

Follow Us

বিনোদন

ওয়েব সিরিজ নিয়ে বিতর্ক কেন?

Icon

জয় শিকদার

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২০, ১০:৫১

ওয়েব সিরিজ নিয়ে বিতর্ক কেন?

সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির কল্যাণে বদলের ছোঁয়া লেগেছে শোবিজ অঙ্গনে। নির্মাণ ও প্রদর্শনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি; গল্প, গান, অ্যাকশন, লোকেশনে বৈচিত্র্যে- সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ওয়েব সিরিজ; কিন্তু এই ওয়েব সিরিজ আসলে কী? কী আছে এই ওয়েব সিরিজে? কেন এই সিরিজ নিয়ে এত বিতর্ক? 

নতুন সংযোজন ওয়েব সিরিজ

অনেকের কাছে এখনো ‘ওয়েব সিরিজ’ শব্দটা অপরিচিত থাকলেও বিনোদন ভুবনে এটি খুব পরিচিত একটি নাম। যারা প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তারাই কেবল এর সঙ্গে বেশি পরিচিত। চলচ্চিত্র বা নাটক নির্মাণ করে ইন্টারনেটের বিভিন্ন স্ট্রিমিং সাইটে প্রকাশ করা হয় বলে এর নামকরণ হয়েছে ওয়েব সিরিজ। তবে এই সব ওয়েব সিরিজ দেখতে হয় অর্থ খরচ করে।

কী আছে এই ওয়েব সিরিজে?

আসলে কথাটা হবে- কী নেই এখানে? শিশুতোষ অনুষ্ঠান, কার্টুনসহ বিভিন্ন সিরিজ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধ্রুপদী চলচ্চিত্রের পাশাপাশি নতুন চলচ্চিত্র- সবই রয়েছে এই সিরিজে। ফলে এই সাইটগুলো এখন দখল করে নিয়েছে ছেলে-বুড়ো সবার মন। হুমড়ি খেয়ে যেভাবে এক সময় টিভি দেখত মানুষ, এখন দেখে ইউটিউব বা ওয়েব সিরিজ। 

বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজ

বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজের যাত্রা ২০১৭ সালে। ওই বছর ঈদুল ফিতরে টিভির পাশাপাশি ইউটিউব চ্যানেলে একাধিক ধারাবাহিক নাটক প্রকাশ পায়। এর মধ্যে সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে ৭ পর্বের ‘আমি ক্রিকেটার হতে চাই’ ও ‘অ্যাডমিশন টেস্ট, ‘এল আমোর টিভি’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ‘টেস্টিং সল্ট’, বাংলা ঢোলের উদ্যোগে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম বাংলাফ্লিক্সে প্রচার পায় বিশেষ নাটক ‘উপহার’। বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজের আনুষ্ঠানিক প্রকাশটা মূলত তখন। এরপর ঈদুল ফিতরের ধারাবাহিকতায় ঈদুল আজহায়ও প্রকাশ পায় একাধিক নাটক।

বিতর্কের কারণ

হালের কিছু ওয়েব সিরিজকে ঘিরে স্যোশাল মিডিয়ায় এখন অসংখ্য মন্তব্যের ঝড়। বাংলাদেশের দর্শক কখনো কল্পনা করেননি, নাটক দেখতে গিয়ে তাদের পর্নোসদৃশ কিছু দেখতে হবে। কখনো ভাবেননি, শালীন-কুলীন প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এমন নগ্ন ও অশালীনরূপে তাদের সামনে হাজির হবেন। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘বুমেরাং’-এর ‘তোমার ঘরে বাস করে কয়জনা’ পর্বটি শুরুই হয় অভিনেতা আদনান ফারুক হিল্লোল ও অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষার দীর্ঘ শয্যাদৃশ্য দিয়ে। দেশীয় নাটকে এমন পর্নো দৃশ্যের সংযোজন সম্ভবত এই-ই প্রথম। ইন্টারনেটে এমন ভিডিও অহরহ; কিন্তু এমন ভিডিওতে দেশের প্রথম সারির নির্মাতা বা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সাবলীল অংশগ্রহণ অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্য।

পুরো নাটকে প্রিয় পাত্র-পাত্রীদের এমন খোলামেলা ও রগরগে উপস্থিতি- সত্যিই প্রথম দেখাতে চোখ কপালে ওঠার মতো। অন্যদিকে ‘বুমেরাং’-এর ‘ঝড়ো হাওয়া লেগে তার শিখা নিভে যাবে’ পর্বটি আরও বেশি রগরগে ও যৌন উত্তেজক। এমন নাটকে পরিচিত মুখ মৌটুসী বিশ্বাস, ইমি, শ্যামল মাওলা ও তানভীরদের দেখে সত্যি লজ্জায় মুখ ঢাকতে ইচ্ছা হয়। আর ‘সদরঘাটের টাইগার’কে নাটক না বলে ‘গালি ব্যাংক’ বললে অত্যুক্তি হবে না। এমন ‘অশ্লীল গালিময়’ নাটক দেশে আর হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। অন্যদিকে ‘১৪ আগস্ট’ সিরিজটিতে যৌনতা, সহিংসতা, মাদক, অশ্লীল সংলাপের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় বখে যাওয়া ঐশীর কাহিনী।

ওয়েব সিরিজ নিয়ে তারকারা বিভক্ত

ওয়েব সিরিজ নিয়ে দেশের তারকারা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাস বলেন, একজন অভিনেত্রী হিসেবে আমি আমার কাজটা করেছি। এটা শুধু চরিত্রের প্রয়োজনে করা। দর্শকের প্রতিক্রিয়া থাকতেই পারে। আমি প্রফেশনাল জায়গা থেকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে কাজটি করেছি।

এ নিয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ও নির্মাতা এসএ হক অলীক তার এক ফেসবুকে পোস্টে লেখেন, আধুনিক হওয়া ভালো; কিন্তু এমন আধুনিক হওয়া উচিত নয়। যে আধুনিকতা নিজের পরিবারকে লজ্জার মধ্যে ফেলে। সাহস দেখানো ভালো; কিন্তু এমন সাহস দেখানো উচিত নয়, যে সাহস দেখানোর জন্য অতীতের সব ভালো কাজ ঢাকা পড়ে যায়। স্বাধীনতা ভালো; কিন্তু এমন স্বাধীনতা ভালো নয়, যে স্বাধীনতা নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। শিল্পীদের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫