মসজিদের সামনে নায়িকা মুনমুনের নাচ নিয়ে তোলপাড়

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:৫৯
টাঙ্গাইলের সখিপুরে পলাশতলি বাজার মসজিদের সামনে চিত্রনায়িকা মুনমুনের নাচের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে পুরো আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
ধিক্কার জানিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও করেছেন অনেকেই। উপজেলার পলাশতলী বাজারে মসজিদের সামনে কুরুচিপূর্ণ এ নাচের আসর বসানো হয়।
জানা গেছে, গেলো শুক্রবার চিত্রনায়িকা মুনমুনকে সখিপুর পৌর এলাকার স্থানীয় কিছু লোক উপজেলার পলাশতলীতে নৌকা ভ্রমণে নিয়ে যায়। ভ্রমণ শেষে ওই বাজার মসজিদের সামনে সাউন্ড সিস্টেম বাজিয়ে নায়িকা মুনমুনকে নিয়ে বসানো হয় নাচের আসর।
উপস্থিত অনেকেই সেখান থেকে ফেসবুক লাইভ চালান, আবার অনেকেই সেই নাচের দৃশ্য ভিডিও করে নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন। পরে সেই নাচের ভিডিও ফেসবুকে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, গানের তালে তালে চিত্রনায়িকা মুনমুন মসজিদের খুবই কাছে কুরুচিপূর্ণ নাচ পরিবেশন করছেন। আর কিছু উৎসুক জনতা চেয়ারে বসে সেই নাচ দেখছেন ও মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছেন।
ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিও থেকে দেখা যায়, মসজিদের সামনে নায়িকা মুনমুনের ওই নাচের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সখিপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিউল ইসলাম কাজী বাদলের ছোট ভাই কাজী শহীদ, পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মিল্টন মিয়া, সখিপুর মাইক্রো বাস মালিক সমিতির সভাপতি স্বপন, সাধারণ সম্পাদক বাবুল মেলেটারি, শাজ্জাদ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের পরিচালক রাসেল, কাকড়াজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হাসান প্রমুখ।
স্থানীয়রা বলছেন, মসজিদ একটি পবিত্র স্থাপনা। আর মসজিদের সামনে এমন কুরুচিপূর্ণ নাচ কোনভাবেই কাম্য নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান তারা।
এদিকে সখিপুর উপজেলা আলেম ওলামা পরিষদ মসজিদের সামনে অশ্লীল নৃত্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার মানবন্ধন করবেন এমন সংবাদ পেয়ে নৃত্যের আয়োজকরা আলেম ওলামা পরিষদের নিকট ক্ষমা চায় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘৃণ্য কাজ করবে না বলে তওবা করে।
তওবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আলেম ওলামা পরিষদের সভাপতি সখিপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সাইফুল্লাহ বেলালী। একই সাথে দুঃখ প্রকাশ, ক্ষমা ও বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধ করে কারো নাম উল্লেখ না করে ভ্রমণ আয়োজক ব্যানারে সোমবার স্থানীয় একটি অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ জানান, বহিরাগতরা নৌকা ভ্রমণে এসে এ ন্যক্কারজনক কাজ করেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তবে বিষয়টি নিয়ে সখিপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিউল ইসলাম কাজী বাদল বলেন, আমি নৃত্যের সময় উপস্থিত ছিলাম না। পিকনিকের যাওয়ার আগেই মুনমুন আমার সাথে একটি ছবি তুলেছিলেন। মসজিদের সামনে তারা যে কাজটি করেছে এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।
এ বিষয়ে চিত্রনায়িকা মুনমুন বলেন, নৌকা ভ্রমণের মাঝপথে আমরা এক জায়গায় সবাই খাওয়ার জন্য মিলিত হই। ওই জায়গাটা ছিলো পরিত্যক্ত। সেখানে খাওয়া শেষে আসরের পর অনেকের রিকোয়েস্টে সামান্য আমাকে নাচতে হয়। তবে মসজিদ লেখা সাইনবোর্ডটি আমি দেখিনি। যদি দেখতাম তাহলে ওখানে নাচ তো দূরের কথা বসে আড্ডাও দিতাম না।