
দক্ষিণ কোরিয়ার বিনোদন মাধ্যমের সবচেয়ে বড় অংশ সিনেমা। পশ্চিমা বিশ্বের রয়েছে এর বিশাল বাজার। বেশির ভাগ কোরীয় ছবি টান টান রোমাঞ্চকর ঘটনাপ্রবাহ দিয়ে দর্শককে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে।
কোরিয়ার ভৌতিক, থ্রিলার, অ্যাকশন ঘরানার ছবিগুলো হরহামেশাই হলিউডের বড় বড় নির্মাতা ও প্রযোজকরা অনুসরণ করছেন। চলুন একনজরে চার ধাঁচের চারটি কোরীয় সিনেমার ব্যাপারে জেনে নিই। যেগুলো দেখা হয়েছে, আরেকবার দেখে নিতে পারেন। আর যাদের দেখা হয়নি, তারা এই তালিকা সংগ্রহে রাখতে পারেন..........
ট্রেন টু বুসান
‘ট্রেন টু বুসান’ ছবিটি দিয়েই কোরীয় চলচ্চিত্রের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে অনেকের। ট্রেন টু বুসান পরিচালনা করেছেন ইয়ন স্যাং-হো। সারা শহর তখন জম্বি দখলে। এরই মধ্যে সিয়োক-য়ু ও সু-আন যাচ্ছে বুসানে। জম্বি আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করে তারা কি শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে? জানতে হলে ১ ঘণ্টা ৫৮ মিনিটের ছবিটি আপনাকে দেখে ফেলতে হবে। জম্বি কাহিনি নিয়ে বানানো হলিউডের ছবিগুলো যদি একঘেয়ে লাগতে শুরু করে, তাহলে স্বাদ বদলের জন্য দেখে ফেলুন এই ছবি। সিয়োক-য়ু ও সু-আন, বাপ-বেটির সঙ্গে আপনিও চড়ে বসুন ভয় আর আবেগমিশ্রিত এক রোমাঞ্চকর ট্রেনে।!
আ মোমেন্ট টু রিমেম্বার
২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আ মোমেন্ট টু রিমেম্বার’। চুল-সু ও সু জিন নামে দুই তরুণ-তরুণীর গল্প। ভালোবেসে বিয়ে করে দু’জন। ছবির গল্প মোড় নেয় তখন, যখন সু জিনের আলঝেইমার ধরা পড়ে। একে একে সবকিছুই ভুলে যেতে থাকে সে, এমনকি প্রিয়তম স্বামীর মুখটাও! স্ত্রী সবকিছু ভুলে গেছে জেনেও তার হাত ছাড়ে না চুল-সু, সে ঠিকই পাশে থাকতে চায়। ছবি শেষেও দর্র্শককে ঘোর কাটতে সময় লাগবে মূলত তিনটি কারণে। প্রথমত, চমৎকার আবহসংগীত। দ্বিতীয়ত, মূল চরিত্রে থাকা জাং য়ু-সাং এবং সন য়ি-জিনের অভিনয়। তৃতীয়ত, ছবির দুর্দান্ত সমাপ্তি।
ওল্ড বয়
পার্ক চ্যান-য়ুক পরিচালিত ওল্ড বয় ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। ২০০৪ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ওল্ড বয় গ্রাঁ প্রি পুরস্কার পেয়েছিল। পাম দ্যু-এর পর এটিই কান চলচ্চিত্র উৎসবের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার। ওল্ড বয় দেখে অবধারিতভাবেই আপনি ভাববেন একটা গল্প এমনও হতে পারে! কিছু কিছু ছবি আছে, যা সিনেমা সম্পর্কে আমাদের ধারণা, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান আমূল পাল্টে দেয়। ওল্ড বয় সে রকমই একটি ছবি।
ছবির শুরুতেই কে বা কারা যেন অপহরণ করে নিয়ে যায় ছবির প্রধান চরিত্র ডে-সুকে। একটা ছোট্ট ঘরে আটকে রাখা হয় তাকে। সঙ্গী কেবল একটা টেলিভিশন। বদ্ধ ঘরে একটা টেলিভিশনের সঙ্গে কেটে যায় ডে-সুর জীবনের ১৫টা বছর। এরপর হঠাৎই একদিন ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। কে, কেন তাকে ১৫ বছর আটকে রাখল? আবার কেনই বা ছেড়ে দিল? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করে খ্যাপাটে লোকটা।
মিরাকল ইন সেল নাম্বার সেভেন
মিরাকল ইন সেল নাম্বার সেভেন একটি কমেডি ছবি। তবে জেনে রাখুন, আপনি যদি খুব কঠিন হৃদয়ের মানুষ না হয়ে থাকেন, তাহলে সম্ভবত হাসির ছবিটি দেখতে বসে আপনাকে চোখও মুছতে হবে!
ছবির গল্প লি ইয়ং-গু নামে এক প্রতিবন্ধী বাবা আর তার মেয়ে য়ি-সিয়ুংকে নিয়ে। ঘটনাচক্রে খুন ও ধর্ষণের মামলায় ফেঁসে যায় লি। জেলখানায় তার জায়গা হয় কুখ্যাত সব অপরাধীর সঙ্গে, ৭ নম্বর সেলে। একসময় সেলের অপরাধীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে লির। তারাই জেলখানার ভেতরে য়ি-সিয়ুংকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে। কুখ্যাত সব অপরাধী আর বাবার সঙ্গে ৭ নম্বর সেলে লুকিয়ে থাকে একটা ছোট্ট মেয়ে।
ছবিতে য়ি-সিয়ুং-এর চরিত্রে অভিনয় করেছে কাল সো-য়োন। বাচ্চা মেয়েটির অভিনয় এত অপূর্ব, নিশ্চয়ই ছবি শেষেও তার মায়াকাড়া মুখটা দীর্ঘক্ষণ আপনার মনে গেঁথে থাকবে।