
সুজাতা, আসাদ ও পাপিয়া
সাংস্কৃতিক অঙ্গনের তিন গুণীজন রাইসুল ইসলাম আসাদ, সুজাতা ও পাপিয়া সারোয়ারসহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানস্বরূপ ২১ জনকে এ বছর একুশে পদক দেয়া হয়েছে। একুশে পদক প্রাপ্তিতে এই তিনজন সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সুজাতা
একুশে পদক পাওয়ায় ‘রূপবান’ খ্যাত অভিনেত্রী সুজাতা বলেন, আমি মরে গেলেও ‘রূপবান’ ছবিটি দর্শকদের মনে থাকবে। চলচ্চিত্রের কল্যাণে আজ এতদূর আসতে পেরেছি। তাই সব সময় অভিনয়ে থাকতে চাই।
সুজাতার আসল নাম তন্দ্রা মজুমদার। চলচ্চিত্রে ‘সুজাতা আজিম’ নামেই তিনি পরিচিত। তিনি কুষ্টিয়ার থানাপাড়া জমিদার বাড়ির মেয়ে। রুপালি পর্দার প্রথম ‘রূপবান’ তিনি। ১৯৬৫ সালের রূপবান চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি সবার প্রিয় হয়ে ওঠেন। অভিনেতা আজিমের সাথে ১৯৬৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৮ সালের পর প্রায় একযুগ অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও বর্তমানে তিনি টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন।
আসাদ
একুশে পদক নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেন রাইসুল ইসলাম আসাদ। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি বলেই অভিনেতা হতে পেরেছি। না হয় আজ হয়তো এমন সম্মাননা আমাকে দেয়া হতো না। এই সম্মানের পাশাপাশি আরো ভালো লাগছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষীয় সরকারের কাছ থেকে সম্মাননা অর্জন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ আমাকে এমন সম্মান দেয়ার জন্য। এই অভিনেতা এখন বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে অভিনয় করছেন বলে জানান।
আাসাদের আসল নাম আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম। তিনি রাইসুল ইসলাম আসাদ নামে পরিচিত। ১৯৫২ সালের ১৫ জুন তার জন্ম। তিনি বেতার, মঞ্চ, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি চারবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭২ সালে আসাদ প্রথম মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন, ‘আমি রাজা হব না’ ও ‘সর্পবিষয়ক’ নামের দুটি নাটকে। তার প্রথম চলচ্চিত্র ১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া আবার তোরা মানুষ হ। আসাদ নাটক পরিচালনাও করছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন আসাদ ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
পাপিয়া সারোয়ার
পাপিয়া সারোয়ার রবীন্দ্রসংগীতের একজন প্রকাশক। ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালের বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরবর্তিতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীত দীক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ‘গীতসুধা’ নামে একটি গানের দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এই সংগীত শিল্পী বলেন, যেকোনো পুরস্কার দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। আর সেটি যদি হয় রাষ্ট্রীয় তাহলে এর পরিধি আরো বেড়ে যায়। সংগীতের সাথে আছি সব সময়। এর মধ্য দিয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে যাব।