Logo
×

Follow Us

বিনোদন

এক জীবনে সব পেয়েছি : শাবানা

Icon

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২১, ১২:৩৯

এক জীবনে সব পেয়েছি : শাবানা

শাবানা। ফাইল ছবি

দেশের একজন কিংবদন্তী অভিনেত্রী শাবানা। ২০০০ সালে সিনেমা জগত থেকে নিজেকে আড়াল করলেও এখন পর্যন্ত লোকের মুখে মুখে তার নাম। পেয়েছেন অগণিত দর্শকের ভালোবাসা। জীবনে কোনো অপূর্ণতা নেই বলেও মনে করেন তিনি। 

আট বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ের সূচনা হলেও, নায়িকা হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন ‘চকোরী’ সিনেমায়। এরপর একে একে তিনশো সিনেমা উপহার দিয়েছেন। গুণী এই শিল্পীর জন্মদিন আজ ১৫ জুন (মঙ্গলবার)। শুভ জন্মদিন শাবানা। 

গুণী এই অভিনেত্রী জানান, ২৩ বছর ধরে চলচ্চিত্রের বাইরে থাকলেও আগের দিনগুলোকে খুব মিস করেন। সিনেমার শুটিং ও বিভিন্ন ঘটনা মনে পড়লে স্মৃতিকাতর হয়ে যান। 


তার সময়ে রূপালি পর্দার রাজত্ব ও প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে শাবানা বলেন, ‘এফডিসির কোনো ফ্লোর তখন ফাঁকা থাকতো না। ববিতা, কবরীসহ বেশ কয়েকজন নায়িকা তখন বেশ জনপ্রিয়। আমাদের দেখা হতো কম। কারণ সবাই তখন কাজ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত থাকতাম। পাশাপাশি ফ্লোরে শুটিং হলেও দেখা করার সুযোগ হতো কম। সবার মধ্যে ভালো কাজের প্রতিযোগিতা যেমন ছিল, তেমনি ছিল ভালো সম্পর্কও।’

দেশে না থাকলেও শাবানা এখনকার চলচ্চিত্র অঙ্গন ও হল সম্পর্কে ধারণা রাখেন। তিনি বলেন, দেশে আসলে সিনেমার পুরনো মানুষজনের সাথে দেখা হয়। তাদের কাছ থেকেই কিছু খবর পাই। এখন শাকিব খান ভালো করছে এটা জানি। বাংলাদেশের সিনেমার হাল ধরে আছে একাই। এর আগে রিয়াজ, ফেরদৌস ভালো কাজ করতো। এখন নাকি সিনেমায় লগ্নী উঠে আসে না প্রযোজকদের। আমাদের সময়ে এক হাজার ২০০ হল ছিল। এখন সেই সংখ্যা নাকি ৬০। এটা শুনে খারাপ লাগে।

অভিনয় ও ব্যক্তিজীবনে কোনো অপূর্ণতা আছে কিনা তা নিয়ে তিনি বলেন, একজন শাবানার কোনো অপূর্ণতা নেই। একজীবনে সবই পেয়েছি। অভিনয় করে দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছি। এখনো অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি। সিনেমার সোনালি দিনের সাক্ষী। পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখেই আছি। আমি চলে গেলে মানুষ আমাকে হয়তো মনে রাখবেন এমন কিছু কাজ করেছি। কোনো অপূর্ণতা নেই আমার জীবনে।


গুণী এই নায়িকা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ মোট ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তার অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে আছে ১৯৯১ সালে প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, ১৯৮২ ও ১৯৮৭ সালে বাচসাস পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে নাট্যসভা পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে কামরুল হাসান পুরস্কার, ১৯৮২ সালে নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সায়েন্স ক্লাব পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে কথক একাডেমি পুরস্কার। 

জন্মদিন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শাবানা মুঠোফোনে জানান, জন্মদিন মানে নতুন জীবন পাওয়া আর জীবন থেকে একটি বছর বিয়োগ হওয়া। ছোটবেলা থেকে চলচ্চিত্র জীবন পর্যন্ত আমার খুব ইচ্ছা না থাকলেও সবাই আমার জন্মদিনের আয়োজন করত। একটা সময় যখন অভিনয় জীবন থেকে দূরে সরলাম তখন থেকে স্বামী, পুত্র, কন্যা আর নাতি-নাতনিরা আমার জন্মদিনের আয়োজন করতে চাইলেও আমি সায় দিই না। এখন বয়স হয়েছে, প্রার্থনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে সুস্থ জীবন কামনা করি। এবারো তাই করব। সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।


১৯৭৩ সালে এক সুতায় জীবন বাঁধেন সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিকের সাথে। পরবর্তীতে দুজনে মিলে গড়ে তোলেন চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ‘এসএস প্রোডাকশন’। ১৯৭৯ সালে আজিজুর রহমানকে দিয়ে শাবানা প্রথম প্রযোজনা করেন ‘মাটির ঘর’ ছবিটি। প্রায় ২৫টির মতো ছবি প্রযোজনা করেছেন তিনি। এর মধ্যে যৌথ প্রযোজনার ছবিও রয়েছে। ১৯৯৭ সালে আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ ছবিই তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র। 

২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে সপরিবারে থিতু হন। তার পরিবারে স্বামী ছাড়াও আছেন দুই মেয়ে সুমি ইকবাল, ঊর্মি সাদিক ও পুত্র নাহিন সাদিক।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫