
মুনমুন আহমেদ
দেশের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ। করোনাকালীন তার কাজ ও নানান প্রসঙ্গে কথা বলেছেন মাহমুদ সালেহীন খান এর সাথে।
এই সময়ে কী নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন?
আমি নিয়মিত অনলাইন আড্ডায় বসছি। অনলাইন আড্ডায় আমাদের নাচের জগতের জ্যেষ্ঠ শিল্পী বা নৃত্যগুরুরা রয়েছেন, তাদেরকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তাদের নাচের যাত্রাপথের গল্প শুনতে। মূলত নবীনদের জন্যই এই আয়োজন। তারা যেন এই নৃত্যগুরুদের সম্পর্কে জানতে পারে। তারা কতটা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে নাচের জগতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, নবীনরা যেন সেটি জানতে পারে। আর নতুন করে যুক্ত হলাম আরেকটি আয়োজনে। ভারতীয় দূতাবাসের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের (আইজিসিসি) অনলাইনে নৃত্যশিক্ষার ওয়ার্কশপ ‘গুরুপ্রথা-২’। অনলাইনে কত্থক ও মনিপুরী নৃত্যের ওয়ার্কশপ। ২৪ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই ওয়ার্কশপে কত্থক নৃত্যে তিনটি ব্যাচে ১৫ জন করে ৪৫ জন শিক্ষার্থীকে কত্থক শেখাব।
অনলাইন ক্লাস আড্ডার পাশাপাশি করোনাকাল কেমন কাটছে?
বাসায় বসে অনেক কিছু করছি। করোনার শুরুর দিকে বেশ অলস সময় কাটাচ্ছিলাম। ভীষণরকম ডিপ্রেশন আর টেনশনও করছিলাম। আমি এই সময়ে প্রচুর সিনেমা দেখছি। সময় পেলে বইও পড়ি। এর মধ্যে আরো একটা কাজ করছি, শিক্ষাজীবনে দিল্লিতে আমার যত বন্ধু-বান্ধব ছিল তাদের মধ্যে প্রায় ২৮ জনকে ফোন করেছি। তাদের বলেছি, তোমরা আমাকে ‘গঙ্গা-সিন্ধু-নর্মদা’ গানের একেকটা লাইন সবাই ভিডিও করে পাঠিয়ে দাও। তারা পাঠিয়েছিল। তখন নজরুলের জন্মবার্ষিকী ছিল। বন্ধুদের পাঠানো সেসব ভিডিও বাড়িতে বসে এডিটিং শিখে তা এডিট করলাম। সেটা ফেসবুকে আপলোড করলাম। এরপর আমাদের ম্যারেজডে ছিল। এজন্য ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ’ ম্যাচ করে চিলেকোঠায় গিয়ে রেকর্ডিং করলাম। সেসবও ফেসবুকে আপলোড করলাম। এইসব করেই আছি। এর বাইরে আমার নাচের বন্ধু বান্ধবদেরও খোঁজ-খবর নিচ্ছি। যাকে যতটুকু পারছি সহায়তা দেয়ারও চেষ্টা করছি। এখন তো সবাই দুরবস্থার মধ্যে আছে। আমি নিজেও সমস্যায় পড়ে গেছি। কারণ আমার নিজেরও নাচের স্কুলের ভাড়া, বাসার ভাড়া টানতে হচ্ছে। ‘মুনমুনস কিচেন’ নামে একটা রেস্টুরেন্ট করেছিলাম সেটাও চালু করতে পারছি না। এরও ভাড়া চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ফলে সবকিছু মিলিয়ে অসম্ভব টেনশনে আছি। তারপরও নিজেকে বাবরবার মোটিভেট করার চেষ্টা করছি। এই দুঃসময় অবশ্যই আমরা পার করব, ভালো সময়ের দিকে যাব। হতাশ যেন না হয়। যেভাবে পারি আমাদের টিকে থাকতে হবে। সুস্থ থাকতে হবে।
চেনা পৃথিবীর কতোটা বদলেছে বলে আপনি মনে করেন?
মানুষের আর বদলটা হলো কই? ভেবেছিলাম মানুষ একটু সংযত হবে। ইতিবাচকতার দিকে যাবে। টাকার জন্য মানুষ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ভেবেছিলাম মানুষের মধ্যে যে আধিপত্যভাব আছে সেটা একটু কমে যাবে। কিন্তু না, মানুষ আরো দুর্বিচারী হয়ে উঠেছে।