
মডেল পিয়াসা।
সহযোগী জিসানের গরুর ব্যবসার আড়ালে মডেল পিয়াসা ও মিশু মাদকের ব্যবসা করতেন বলে দাবি করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু।
শুক্রবার (৬ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে পিয়াসার রিমান্ড শুনানির সময় তিনি এ দাবি করেন।
এ দাবির বিপরীতে পিয়াসা বলেন, আমার বাবা ব্যারিস্টারি পড়াশোনা করেছেন। আমি নিজেও ২০২১ সাল পর্যন্ত চাকরি করেছি। এশিয়ান টিভিতে চাকরি করেছি। আমি মাদকের সঙ্গে জড়িত নই। জিসান ও মিশু আমার বন্ধু। জিসানের স্ত্রীর সঙ্গে আমার ভালো বন্ধুত্ব। আমি গরুর ব্যবসা করতে যাব কেন?
পিয়াসা বলেন, স্যার, একটি বিষয় বলে রাখি। আপন জুয়েলার্সের ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল। আমি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছি। তারপর থেকেই আমাকে বিভিন্ন হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। হঠাৎ করে একদিন রাতে আমার বাসায় ডিবি পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। পরে বলা হয় আমার বাসায় নাকি ৬৭ পিস ইয়াবা পাওয়া গিয়েছে। আমি ইয়াবার সঙ্গে জড়িত নই।
এদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিল সিদ্দিক বাপ্পি রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী পৃথক তিন মামলায় পিয়াসার ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সোমবার পিয়াসার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে সোমবার (২ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলামের আদালত মডেল পিয়াসার তিনদিন এবং ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালত মৌয়ের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রবিবার (১ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে প্রথমে রাজধানীর বারিধারায় মডেল পিয়াসার বাসায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
এদিকে পিয়াসার দেয়া তথ্যে আরেক মডেল মরিয়ম আক্তার মৌয়ের রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাবর রোডের বাসায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মদ উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে মৌকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকেও ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
পুলিশ জানায়, মডেল পিয়াসা ও মৌ সংঘবদ্ধ একটি চক্রের সদস্য। তারা পার্টির নামে উচ্চবিত্তদের বাসায় ডেকে মদ ও ইয়াবা খাইয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখতেন। পরে সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
রবিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের একটি দল বারিধারায় পিয়াসার বাসায় অভিযান চালায়। এ সময় তার ঘরে টেবিল থেকে চার প্যাকেট ইয়াবা জব্দ করা হয়। তার রান্নাঘরের ক্যাবিনেট থেকে ৯ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। ফ্রিজে পাওয়া যায় সিসা তৈরির কাঁচামাল। পরে তার দুই সহযোগী মিশু ও জিসানকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়।