
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ট্রান্সমিটার। ছবি: গুগল
যুদ্ধ চলাকালে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত গানগুলো মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রেরণা জুগিয়েছে।
এক কথায় বলতে গেলে ওই সময়ে প্রচার হওয়া দেশাত্মবোধক গানগুলোই ছিল জনজাগরণের মূল হাতিয়ার-শক্তি।
মহান বিজয় দিবসে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রের সেরা পাঁচ গান নিয়ে আমাদের আয়োজন পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-
জয় বাংলা, বাংলার জয়
বাংলার আকাশে যতদিন সূর্য উঠবে, এই গান ও তার আবেদন ততদিন থাকবে। দেশ বরেণ্য সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহর কণ্ঠে এই গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সেরা গান। গানটির কথা লিখেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সুর করেন আনোয়ার পারভেজ।
কারার ওই লৌহকপাট
গানটির কথা ও সুরারোপ করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার অনবদ্য এই গানটি কয়েকজন শিল্পীর সমবেত কণ্ঠে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার করা হয়। গানটি যুদ্ধকালীন সময়ে মানুষের মনে উদ্যম ও শক্তি সঞ্চার করে। গানের কথা আর সুর হাজারো ঘরকোণা যুবককে স্বপ্ন দেখায় পরাধীনতা গ্লানি মুছে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনার।
তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে
একাত্তরের জুনের শেষের দিকে এ গানটি তৈরি করা হয়। দেশাত্মবোধক চেতনায় জাতিকে এক করার জন্য, একই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত করার জন্য তখন এ রকম গানের বিকল্প ছিল না। আর আমাদের মুক্তির সংগ্রামে ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’ গানটি জনজাগরণের আরেকটি শক্তি। এই গানটির কথা ও সুরারোপ করেন আপেল মাহমুদ। যৌথভাবে আপেল মাহমুদ ও রথীন্দ্রনাথ রায়ের কণ্ঠে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত গানের মধ্যে এটি অন্যতম সেরা।
পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল
এই গানটির গীতিকার গোবিন্দ হালদার। সুরারোপে সমর দাস। গানটি কয়েকজন শিল্পীর সমবেত কণ্ঠে প্রচার করা হয়। এটি এমন একটি গান, যার কথা, সুর ও গায়কী লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধাকে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহী করে তুলেছিল অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যাওয়ার।
মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি
গানটির গীতিকার গোবিন্দ হালদার। সুর করার পাশাপাশি গানটি কণ্ঠে তোলেন আপেল মাহমুদ। তার কণ্ঠে বাংলাদেশ বেতারের গানটি প্রচারের পর জনমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এছাড়া গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার হওয়ার পর পুরো কলকাতাতেও এর বন্দনা শুরু হয়।