Logo
×

Follow Us

বিনোদন

আমাদের ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবার সময় এখন : নওশাবা

Icon

তৌফিকুল ইসলাম

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১০:১৪

আমাদের ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবার সময় এখন : নওশাবা

কাজী নওশাবা আহমেদ

সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে কাজী নওশাবা আহমেদ অভিনীত চলচ্চিত্র ‘চন্দ্রাবতীর কথা’। দুর্গাপূজায় তার অভিনীত বিশেষ নাটক ‘সিঁদুর’ প্রচারিত হয়েছে একুশে টিভিতে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যস্ততা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌফিকুল ইসলাম

এখন কী নিয়ে ব্যস্ততা চলছে?

রাশেদ রাহা পরিচালিত ‘লাশ কাটা ঘর’ সিনেমার ডাবিংয়ের কাজ চলছে। আগের তুলনায় কাজে নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করছি, এর মধ্যে তিনটি ওয়েবফিল্মের কাজ করেছি। পূজা উপলক্ষ্যে ‘সিঁদুর’ নাটকটি করলাম। আমার অভিনীত ‘চন্দ্রাবতীর কথা’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছে। সৈকত নাসিরের ‘নেটওয়ার্ক’ ওয়েবসিরিজের কাজ শুরু হয়েছে খাগড়াছড়িতে। এ ছাড়া ‘অমানুষ’ ও ‘আলগা নগর’ চলচ্চিত্র দুটি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

মনে হয়, খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন?

অনেক বছর পর একটা সিনেমা রিলিজ পাচ্ছে। যদিও করোনার কারণে সবার কাজই কম ছিল। তবে আমার অনুপস্থিতি অন্যদের তুলনায় একটু বেশি ছিল। কারণটা হলো, আমি কাজ শুরু করার পরও আমাকে ডাকা হচ্ছিল না; কিন্তু আমি অপেক্ষায় ছিলাম এবং লেগে ছিলাম। আশপাশ থেকে সবাই বলছিল, অভিনয়টা ছেড়ে দাও, আমি ছাড়িনি। আমার একটা বিশ্বাস ছিল, দর্শক আমাকে অনেক ভালোবাসে। তাই একটা সময় আমি যাদের সঙ্গে কাজ করব, তারা অন্তত দর্শকদের চাপের কারণে আবার আমাকে আগের মতো ডাকবে। আমি একেবারেই বানিয়ে বলছি না, এটার পুরো কৃতিত্ব দর্শকদের। আমি একটা ছোট কাজ করে যে পরিমাণ সাড়া পাই, সেটা আমার কাছে খুবই অবাক করা বিষয়। এটা আসলে আমার পুনর্জন্ম বলা যায়, কারণ নাটকটির কথা বারবার আসে। যা কি-না একদম শূন্য থেকে ঘুরে দাঁড়ানো।

হইচইসহ বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কাজ করেছেন, এখন ওয়েব সিরিজের মানের বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশে কতটা উন্নতমানের কন্টেন্ট নির্মিত হচ্ছে বলে মনে করেন?

একদম সোজাসাপ্টা কথা হচ্ছে, ভালোর কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে আমরা কন্টেন্টের মান কী রাখছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন দেখা যাচ্ছে, হইচই প্ল্যাটফর্মে ‘দুপুর ঠাকুরপো’ ওয়েবসিরিজ সর্বোচ্চ দর্শক পাচ্ছে, আবার সে একই প্ল্যাটফর্মে ‘তাকদীর’ও বেস্ট কন্টেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে, যেখানে কোনো গ্ল্যামার নেই; কিন্তু বিশুদ্ধ শিল্পচর্চা, অভিনয়, গল্প, নির্মাণসহ সব আছে। এখন আসলে আমাদের ঠিক করতে হবে আমরা আসলে মানটা কী করব। আমি একেবারেই নিরাশবাদীদের দলের মানুষ না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবার সময় কিন্তু এখন। সে ক্ষেত্রে অনেক ভালো ভালো কাজ হচ্ছে, তারই প্রতিফলন হিসেবে আমাদের দেশের চরকি প্ল্যাটফর্মে ‘আধখানা ভালো ছেলে আধা মাস্তান’, ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’র মতো কাজ দর্শক দেখতে পেয়েছে। 

আপনি শিল্পীদের স্বার্থ নিয়ে কথা বলেন, সে ক্ষেত্রে শিল্পসত্তা নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?

একজন শিল্পী সমাজের অলঙ্কার। আমরা পৃথিবীর মাঝে দেশের প্রতিনিধিত্ব করি। আমরা সংস্কৃতির ধারক-বাহক, বলতে পারেন। একটা সমাজে শিল্পীরা সবচেয়ে সংবেদনশীল মানুষ। শিল্পী সংবেদনশীল বলেই আমি দর্শককে কাঁদাচ্ছি, হাসাচ্ছি। আমি সংবেদনশীল না হলে দর্শক আমার নাটক দেখত না। একটা সমাজে অনেক স্তর আছে, সেখানে সবচেয়ে স্পর্শকাতর অংশ হচ্ছে সংবেদনশীল মানুষ অর্থাৎ শিল্পীরা। এখন কথা হচ্ছে, তাদের আমরা কীভাবে দেখব? আমি সবার কথা বলছি না, অধিকাংশ শিল্পীদের কথা বলছি। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সম্মানীর ক্ষেত্রে ভারসাম্য নেই, আবার সে সম্মানী সময়মতো পেতে একজন শিল্পীকে বেগ পেতে হয়। এটা তো তার প্রাপ্য। দেখা যায় যে, আগামীকাল ঈদ অথবা পূজা, তখনো একজন শিল্পীকে সম্মানী চাইতে হয়। এ জায়গাটা নিয়ে আমি সবসময় কথা বলি। আমার কথা হচ্ছে, একজন শিল্পীকে কেন তার প্রাপ্য সম্মানী পেতে এত বেগ পেতে হবে? এটা কী খুব একটা ভালো চিত্র?

পথশিশুদের পাশে প্রায় আপনাকে দেখা যায়, এ সম্পর্কে বলুন।

আমি যখনই সময় পাই, তখনই আমার মেয়েকে নিয়ে বাচ্চাদের কাছে চলে যাই। ওদের সঙ্গে নাচি, গান গাই, ছবি আঁকা শেখাই। আমি ওদের কাছ থেকেও শিখি। এটা আমি অনেক ছোটবেলা থেকেই করে আসছি এবং সেটার ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রাখছি। আমি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে পাপেট থিয়েটার করেছিলাম। তাদের নিয়ে আরও কাজ করতে চাই। আল্লাহ যতদিন আমাকে সুস্থ রাখবেন, আমি এটা করে যেতে চাই। 

শিল্পকলা একাডেমিতে কিছু দিন আগে পথনাটক করলেন, কেমন অভিজ্ঞতা ছিল?

আমার জীবনের প্রথম পথনাটক এটা। অভিজ্ঞতা খুব ভালো ছিল। শিল্পকলা একাডেমি থেকে বলেছে, প্রায় সাড়ে চারশ’ মানুষ নাটকটি দেখতে এসেছিল। আমাকে অনেকেই বলেন, নওশাবা তুমি সিনেমার নায়িকা, আবার পথনাটক কর, পথে বসে বাচ্চাদের মতো কাঁদ, এসব কী তোমার করা উচিত? আমি আসলে সেভাবে ভাবি না। আমার কথা হচ্ছে, আমি যদি পথের মানুষদের না চিনি, তাহলে আমি কীভাবে চরিত্রে অভিনয় করব, আমাকে তো তাদের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। এভাবে মিশে গিয়েই আমি তাদের গল্পটা পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারব।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫