Logo
×

Follow Us

বিনোদন

উনিশে হারিয়ে যাওয়া বাংলার নক্ষত্ররা

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:১৭

উনিশে হারিয়ে যাওয়া বাংলার নক্ষত্ররা

২০১৯ সালে চলচ্চিত্র, শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। হারিয়ে গেছেন অজানায়। তারা ছিলেন স্ব স্ব স্থানের বীর। তাদের এই প্রস্থান দেশের জন্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। 

নতুন বছরের প্রথম দিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বাংলার সেসব নক্ষত্রদের, যারা গত বছর পাড়ি জমিয়েছেন অজানায়। 

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

২০১৯ সালের শুরুতেই হারাতে হয় বাংলা গানের প্রখ্যাত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে। গত ২২ জানুয়ারি ৬৩ বছর বয়সে রাজধানীর বাড্ডায় নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন এ বরেণ্য সংগীতশিল্পী।

 

গত শতকের ৭০ দশকের শেষ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ চলচ্চিত্রসহ সংগীতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা অসংখ্য গান রয়েছে তার। তার গানে, কথায় দেশপ্রেম ফুটে উঠতো সবসময়।  

শাহনাজ রহমতউল্লাহ

দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়া শাহনাজ রহমতউল্লাহ অজানায় পাড়ি জমান ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ।


‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘আমায় যদি প্রশ্ন করে’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’—এ রকম অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী তিনি। 

টেলি সামাদ

ঢাকার চলচ্চিত্রের শক্তিশালী এবং জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ চলে যান ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল। ৭৪ বছর বয়সে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তিনি হৃদ্‌রোগ, ব্লাড ক্যানসার ও বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন।

সালেহ আহমেদ

টেলিভিশনের শক্তিমান অভিনেতা সালেহ আহমেদ ২৪ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। ১৯৯১ সালে হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করেছেন। টিভিতে ধারাবাহিক নাটক ‘অয়োময়’ আর চলচ্চিত্রে ‘আগুনের পরশমণি’র মাধ্যমে অভিনয় জগতে তিনি পা রেখেছিলেন।

সুবীর নন্দী

বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী ২০১৯ সালের ৭ মে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে চারটার দিকে মারা যান। তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।


৬৬ বছর বয়সী সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন। তাঁর হার্টে বাইপাস অপারেশন করা হয়। কিডনি জটিলতা ছিল প্রকট।

মমতাজউদদীন আহমদ

বহু গুণের মানুষ ছিলেন অভিনেতা মমতাজউদদীন আহমদ। তিনি ছিলেন নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা, শিক্ষাবিদ বা লেখক। যখন যা করেছেন, মমতা দিয়ে, নিষ্ঠার সঙ্গে করেছেন। সফলও হয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা–উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।


তিনি এক অঙ্কের নাটক লেখায় বিশেষ পারদর্শিতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। মমতাজউদদীন আহমদ শিক্ষক ও লেখক হিসেবে পরিচিতি পেলেও মঞ্চনাটকের মাধ্যমে তার কর্মজীবনকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৯৭ সালে একুশে পদক পান। গুণী এই অভিনেতা ২০১৯ সালের ২ জুন মারা যান। 

হুমায়ুন সাধু

অভিনেতা হুমায়ুন সাধুর শরীরে স্বাভাবিক গড়ন ছিল না। তুলনামূলকভাবে খর্বাকার ছিলেন তিনি। এতে অবশ্য থেমে থাকেনি জয়যাত্রা। কোনো বাধাবিপত্তি তিনি আমলে নেননি কখনো। অসংখ্য নাটক, টেলিছবি, চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করেছেন। কাহিনি ও চিত্রনাট্য লেখার পাশাপাশি তিনি পরিচালনা করেছেন। 


হাসিখুশি মানুষটার শিল্পজীবন বেশ চলছিল। এই মানুষকেও হারাতে হয়েছে এ বছর। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৫ অক্টোবর তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

মাহফুজুর রহমান খান

১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। মাহফুজুর রহমান খান ছিলেন প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক আবদুল লতিফ বাচ্চুর শিষ্য। তাঁর অধীনে সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে ১৯৭০ সালে ‘দর্পচূর্ণ’ ও ১৯৭১ সালে ‘স্বরলিপি’ চলচ্চিত্রে কাজ করেন।

পৃথ্বীরাজ

তরুণ সংগীতশিল্পী পৃথ্বীরাজের নিজ প্রতিষ্ঠান ছিল জিলাপি স্টুডিও। স্টুডিওটি গড়ার সময় তিনি বলেছেন, ‘জিলাপি নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। এখানে ঢুকে ঘরটা ঠান্ডা করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসব। ছবি দেখব, গান শুনব। এখান থেকে অন্য রকম সাউন্ড তৈরি হবে। এটা একান্তই আমার নিজের জগৎ।


এই ঘরটাতেই কাজ করতে করতে যদি চলে যাই, তা হবে আমার জন্য অনেক শান্তির।’ ২০১১ সালে নিজের স্টুডিওতে বসে কিছু না ভেবেই বলেছিলেন পৃথ্বীরাজ। তাঁর সেই চাওয়া পূরণ হয়েছে বড় অসময়ে, এই জিলাপি স্টুডিওতে কাজ করতে করতে ১৫ ডিসেম্বর পৃথিবীর মায়া ছেড়ে তিনি চলে গেছেন না–ফেরার দেশে।

বাসুদেব ঘোষ

সুরকার-সংগীত পরিচালক বাসুদেব ঘোষ মারা গেছেন ২৯ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে। হঠাৎ নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে দ্রুত রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫