কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ আর নেই

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৩৭

বিরজু মহারাজ
ভারতের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ আর নেই। গতকাল রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ৮৩ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি। একাধারে নাচ, তবলা ও কণ্ঠসংগীতে সমান পারদর্শী ছিলেন বিরজু, ছবিও আঁকতেন।
গতকাল রাতে নাতির সঙ্গে খেলছিলেন। তখনই হঠাৎ করে অসুস্থ বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। সম্প্রতি তার কিডনির অসুখ ধরা পড়েছিল।
ভারতের উত্তর প্রদেশের লখনউর কত্থকের ‘মহারাজা’ পরিবারে জন্ম। সাত পুরুষ ধরে তাদের পরিবারে কত্থক নাচের চর্চা। তার দুই কাকা শম্ভু মহারাজ ও লচ্ছু মহারাজ ছিলেন বিখ্যাত শিল্পী। বাবা অচ্চন মহারাজই ছিলেন বিরজুর গুরু।
শাস্ত্রীয় সংগীতের একাধিক ধারার সঙ্গে যেমন যুক্ত ছিলেন, তেমনই বহু ছবিতে কোরিওগ্রাফারের কাজও করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সত্তর দশকের মাঝামাঝি সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’র কোরিওগ্রাফি। ছবিতে দুটো গানের কোরিওগ্রাফি করেন। তার মধ্যে একটা ছিল ‘কানহা মে তোসে হারি’। গানটার সঙ্গে ছিল আমজাদ খানের অভিনয়।
পরে ২০০২ সালে সঞ্জয় লীলা বনশালি পরিচালিত ‘দেবদাস’ ছবিতে একটি গানে মাধুরী দীক্ষিতকে নাচ শিখিয়েছিলেন। পেয়েছিলেন সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার। ভূষিত হয়েছেন পদ্মবিভূষণ সম্মানে।
কলকাতার সঙ্গে নিবিড় যোগ ছিল বিরজুর। ১৯৫২ সালে এই শহরেই জীবনে প্রথম মঞ্চে পারফর্ম করেন। মন্মথ নাথ ঘোষের বাড়িতে। তখন তার বয়স চোদ্দ। বাবা মারা গেছেন, জীবনে দাঁড়াবার জন্য লড়াই করছেন। সে সময় ডাক কলকাতায়। কাকা লচ্ছু মহারাজ তখন মুম্বাইয়ে কোরিওগ্রাফির কাজ করছেন। আর এক কাকা শম্ভু মহারাজ ব্যস্ত ছিলেন লখনউতেই নিজের কাজে। মা এক পাতানো ভাইয়ের সঙ্গে কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন বিরজুকে।
এরপর থেকে কাকাদের কাছে শিক্ষা চলেছে। ধীরে ধীরে মেলে ধরেছেন নিজেকে। দেশ-বিদেশে বহু অনুষ্ঠান করেছেন। রয়েছে প্রচুর ছাত্রছাত্রী। নিজের শিল্পকর্ম ও শিক্ষার মধ্যে দিয়েই অমরত্ব লাভ করবেন বিরজু।