Logo
×

Follow Us

বিনোদন

নীরবে চলে গেল কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের মৃত্যুবার্ষিকী

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:০৬

নীরবে চলে গেল কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের মৃত্যুবার্ষিকী

সুচিত্রা সেন

বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের মৃত্যুবার্ষিকী ছিল ১৭ জানুয়ারি। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতায় বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পাবনাতে জন্ম সুচিত্রা সেনের। তাঁর আসল নাম রমা দাশগুপ্ত।

১৯৫২ সালে চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন সুচিত্রা সেন। তাঁর প্রথম ছবি ‘শেষ কোথায়’ মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে অভিনীত ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সাড়া ফেলে দেয় চলচ্চিত্র অঙ্গনে। সুচিত্রা সেন বাংলার ছবির পাশাপাশি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেও সাফল্য পেয়েছেন। তাঁর অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি ‘দেবদাস’ (১৯৫৫)। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন খ্যাতনামা বলিউড অভিনেতা দিলীপ কুমার।

সুচিত্রা সেন ১৯৭৮ সালে ‘প্রণয় পাশা’ ছবি করার পর লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। ২০০৫ সালে সুচিত্রা সেনকে ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়; কিন্তু লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে সুচিত্রা সেন দিল্লিতে গিয়ে ওই সম্মান গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তিনি ১৯৬৩ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রীদের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মশ্রী পান। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্গবিভূষণ সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে। 

রূপ, লাবণ্য, আকর্ষণীয় শারীরিক গড়ন এবং অতুলনীয় অভিনয় দিয়ে কোটি হৃদয় আজও সমুজ্জ্বল সুচিত্রা সেনের জন্য। বাংলা সিনেমাকে তিনি নিয়ে গেছেন এক অন্য উচ্চতায়। তিনি ছিলেন রহস্যময়ী। 

রূপালি পর্দায় সুচিত্রা সেনের নায়ক হিসেবে অভিনয় করে সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। উত্তম-সুচিত্রা জুটির ৩০টি বাংলা সিনেমা সাফল্য পায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘সবার উপরে’, ‘পাপমোচন’, ‘শিল্পী’, ‘সাগরিকা’, ‘পথে হল দেরি’, ‘হারানো সুর’, ‘গৃহদাহ’, ‘প্রিয় বান্ধবী’ ইত্যাদি।

অভিনয়ে আসার আগেই সংসারজীবন শুরু হয় সুচিত্রার। ১৯৪৮ সালে কলকাতার শিল্পপতি আদিনাথ সেন তনয় দিবানাথ সেনের সঙ্গে তিনি ঘর বাঁধেন। তাঁর একমাত্র মেয়ে মুনমুন সেন। দুই নাতনি রাইমা সেন ও রিয়া সেনও অভিনেত্রী।

সুচিত্রা সেন ছিলেন অভিমানী। কলকাতায় একাকী থাকতেন বালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে। স্বেচ্ছা নির্বাসনে গিয়ে রহস্যময়ী ছিলেন আমৃত্যু। তবে গোপাল কৃষ্ণ রায় নামের এক সাংবাদিক বলেছিলেন, ১৯৭৮ সালে সুচিত্রা সেন প্রণয় পাশা নামে একটি সিনেমায় সবশেষ অভিনয় করেন, যেটি ফ্লপ হয়। এতে তিনি দারুণভাবে ভেঙে পড়েন, কষ্ট পান এবং চলে যান বেলার মাঠে রামকৃষ্ণ মিশনে- যেটা কলকাতার বাইরে অবস্থিত। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় পবিত্র ধর্মগুরু ভারত মহারাজের।

দীর্ঘ সময় সুচিত্রা তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। আমি তাঁর মুখে শুনেছি, তিনি ভারত মহারাজের পায়ের কাছে বসে অনেক কেঁদেছিলেন। ভারত মহারাজ তাঁকে বলেছিলেন, মা অর্থলিপ্সু ও লোভী হইও না। আমি মনে করি, এই ঘটনাটিই সম্ভাবত সুচিত্রা সেনকে নিভৃতচারী করতে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫