Logo
×

Follow Us

বিনোদন

কেন নিষিদ্ধ হলো ‘লেডি অব হ্যাভেন’

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২২, ১৪:৪৬

কেন নিষিদ্ধ হলো ‘লেডি অব হ্যাভেন’

মুসলিমদের তোপের মুখে সিনেমাটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

৩ জুন যুক্তরাজ্যে মুক্তি পেয়েছে ‘লেডি অব হ্যাভেন’ নামের একটি সিনেমা। তবে মুক্তির পরপরই মুসলিমদের তোপের মুখে সিনেমাটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর সব প্রদর্শনী স্থগিত করেছে চেইন সিনে ওয়ার্ল্ড। মূলত এই চলচ্চিত্রটি নবী মুহাম্মদের কন্যা ফাতেমাকে কেন্দ্র করে। এই গল্পটি প্রায় ১,৪০০ বছর পরে আধুনিক সময়ে একটি ছোট ইরাকি শিশুর জীবন কাহিনির সাথে মিল রেখে নির্মাণ করা হয়েছে।

গল্প লিখেছেন শিয়া মুসলিম ধর্মগুরু শেখ ইয়াসের আল-হাবিব। তিনি এতে ফাতেমার মৃত্যুকে চিত্রিত করেছেন এবং তাকে ‘সন্ত্রাসবাদের প্রথম শিকার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ বিষয়ে ধর্মের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। প্রধানত সুন্নি মুসলমানরাই চলচ্চিত্রটির তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, প্লটটি ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরেনি।

ছবিটির সমালোচনাকারীরা একে বিতর্কিত, ধর্মদ্রোহী ও বর্ণবাদী বলে অভিহিত করেছে। সারা দেশে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার ফলে অনেক সিনেমা চেইন ছবিটি তাদের প্রদর্শনী থেকে সরিয়ে নিয়েছে। অনলাইনে করা এক পিটিশনে এক লাখ ২৬ হাজার লোক ছবিটির প্রদর্শনী বন্ধ করার দাবি জানিয়ে স্বাক্ষর করেছিল। তবে দ্য লেডি অব হ্যাভেনের নির্মাতারা এবং বাক স্বাধীনতা প্রচারকরা বলছেন যে, এটি একটি ‘বিপজ্জনক’ উদাহরণ স্থাপন করল। ছবিটি ভিউ, শোকেস ও সিনেওয়ার্ল্ড সিনেমায় দেখানোর কথা ছিল। পরবর্তীকালে স্টাফ ও গ্রাহকদের নিরাপত্তার উদ্বেগ উল্লেখ করে সিনেওয়ার্ল্ড সব ধরনের প্রদর্শন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর্দায় ও শিল্পকলায় ইসলামের নবীদের নিয়ে বিতর্কিত চিত্রায়ণ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।

দ্য লেডি অব হ্যাভেন চলচ্চিত্র নির্মাতারা বলছেন যে, ইসলামিক ঐতিহ্য অনুসারে, তারা একজন পবিত্র ব্যক্তিকে মানুষের দ্বারা প্রতিনিধিত্ব না করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। ফাতেমার ভূমিকায় কোনো অভিনেত্রী ছিলেন না। পরিবর্তে, পারফরম্যান্সটি সিজিআই, আলো ও ভিজ্যুয়াল এফেক্টের মিশ্রণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে; কিন্তু চলচ্চিত্রটির সমালোচনা মূলত, ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত মুহাম্মদের সাথি আবু বকর ও উমর ইবন আল-খাত্তাবসহ আরো বেশ কয়েকটি চরিত্রের চিত্রায়ককে কেন্দ্র করে।

দ্য লেডি অব হ্যাভেনের নির্বাহী প্রযোজক মালিক শ্লিবাক গণমাধ্যমে বলেন, ছবিটি ফাতেমার ‘জীবন, তার সংগ্রাম, তিনি যে যাত্রার মধ্য দিয়ে গেছেন’ তার গল্প। আমরা বিশ্বাস করি, উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও দুর্নীতির মতো বিষয়গুলো কীভাবে মোকাবেলা করতে হয়, তা জানার জন্য তিনি আজ আমাদের জন্য ইতিহাসের সেরা ব্যক্তিত্ব এবং আমরা অনুভব করেছি যে, এই গল্পটি বিশ্বের কাছে তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে মি. শ্লিবাক বলেন, লোকেরা ফিল্মটির সমালোচনা করতে এবং তাদের নিজস্ব মতামত রাখার ক্ষেত্রে স্বাধীন। তবে ‘প্রতিবাদকারীরা তাদের সীমানা অতিক্রম করেছে এবং এটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির লোকদের সেন্সর করার প্রচেষ্টা।

প্রসঙ্গত ইংল্যান্ডে মুক্তির পর, দ্য লেডি অব হ্যাভেন ব্ল্যাকবার্ন, ব্র্যাডফোর্ড, ব্রিস্টল, বার্মিংহাম, বোল্টন, কার্ডিফ, কভেন্ট্রি, ডার্বি, গ্লাসগো, লিডস, লিসেস্টার, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার, মিল্টন কেইনস, লন্ডনের বিভিন্ন স্থানে সিনেওয়ার্ল্ড, ভিউ এবং শোকেস সিনেমায় প্রদর্শিত হওয়ার কথা ছিল। গণমাধ্যমে সিনেওয়ার্ল্ড নিশ্চিত করেছে যে, তারা বিক্ষোভের পর চলচ্চিত্রটি সব জায়গা থেকে সরিয়ে নিয়েছে। 

তারা আরো বলেছে, ‘দ্য লেডি অব হ্যাভেনের স্ক্রিনিং সম্পর্কিত সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর কারণে আমরা আমাদের কর্মী ও গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য দেশব্যাপী চলচ্চিত্রটির আসন্ন প্রদর্শনী বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫