
রাজ রিপা। ছবি: সংগৃহীত
সাম্প্রতিক সময়ে যে কজন নবাগতা চলচ্চিত্রে এসেছেন, তাদের মধ্যে রাজ রিপা অন্যতম। ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত ‘মুক্তি’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার ব্যস্ততা, চলচ্চিত্রে অভিনয় এবং অন্যান্য প্রসাথে সাম্প্রতিক দেশকালের সাথে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌফিকুল ইসলাম
কোথায় আছেন?
একটা মিটিংয়ে ছিলাম।
কিসের মিটিং?
‘রক্ষা’ মুভি নিয়ে।
আফফান মিতুলের সাথে যে মুভিটার কাজ চলছিল...
‘ময়না’ মুভি, ৯০ পারসেন্ট কাজ হয়েছে।
বাকি শুটিং কখন হবে?
এক মাস পরেই হবে।
‘রক্ষা’ মুভির কাজ শুরু হয়েছে?
কাজ শুরু হবে, সেটা নিয়েই কথা হচ্ছে।
তাহলে সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে?
হ্যাঁ, ইনশাল্লাহ, দোয়া করবেন।
মাঝ রাতে রাস্তায় ঘোরেন...
‘ময়না’ সিনেমার শুটিং স্পট থেকে ফিরছিলাম, সবাইকে দেখলাম ট্রাকে উঠছে। আর্টিস্টদের গাড়ি তো আলাদা থাকে। আমি বললাম আর্টিস্টদের গাড়িতে যাব না, ট্রাকে করে যাব। লাফালাফি শুরু করলাম। পরে পরিচালকসহ অন্যরা না পেরে আমার সাথে ট্রাকে উঠে গেছেন। আমি খুব এনজয় করলাম। দুষ্টুমি করতে আমার খুব ভালো লাগে।

একটানা শুটিং করার সময়ও কি আনন্দের মুডে থাকেন?
আমার এ টু জেড, শুটিংয়ে যারা ছিল তাদের জিজ্ঞেস করে দেখবেন- আমার যে সকালে হাসি শুরু হয়, তা একদম ঘুমানোর আগ পর্যন্ত থাকে। মাঝেমধ্যে রাগি, কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ থাকে না। আমি সব সময় হাসি-খুশি থাকি।
এত হাসি-খুশি থাকার রহস্য কী?
জানি না। আমার কেন যেন মজা করতে ভালো লাগে। দুষ্টুমি করতে ভালো লাগে, আসল কথা হচ্ছে এটাই। আর শুটিংয়ে অনেক মানুষ থাকে, বাসায় থাকলে তো একা থাকি, দুষ্টুমি করা হয় না। শুটিং স্পটে যখন থাকি, তখন অনেক মানুষ দেখি, কাজের ফাঁকে ফাঁকে সময়টা কাজে লাগাই। দুষ্টুমি করে মনটাকে ভালো রাখি। এ জন্য একটানা শুটিং করলেও আমি দুর্বল হয়ে যাই না। এই তো ‘ময়না’ সিনেমায় একটানা ২২-২৩ দিন শুটিং ছিল। মাঝে দুই দিন অফ ডে ছিল, আর একদম ফুল একটানা শুটিং করেছি। এ মুভিতে ৯৫ পারসেন্টই আমার সিন থাকবে। তাই সেখানে আমার চাপ অনেক ছিল।

‘ময়না’ সিনেমা নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
আমি খুব এক্সসাইটেড। এ ছবিতে আমাকে অনেক রকম রূপ ধারণ করতে হয়েছে। এক কথায় ‘ময়না’ সিনেমায় আমার ক্যারেক্টারটা বহুরূপী। সে দিক থেকেই আমি এক্সসাইটেড এ কারণে যে, চরিত্রটা কীভাবে ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারব। আর এ সিনেমায় তাড়াহুড়ো করে শুটিং করতে হয়েছে। আমি আমার মনপ্রাণ দিয়ে চরিত্রটাকে ভালোভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি; কিন্তু বাকিটা এখন পোস্ট প্রোডাকশনের উপর নির্ভর করছে।
সিনেমাতে তাহলে নিয়মিত হবেন?
হ্যাঁ, আমি ফিল্মেই কাজ করব। টিভিসি, ওয়েব সিরিজ, ফিল্ম- এ তিনটা নিয়েই থাকতে চাই।
ফিল্মের ক্যারিয়ার নিয়ে আশাবাদ...
একদিক থেকে মনে হয় হাঁপিয়ে উঠছি। তবে আল্লাহর রহমতে আমি ভালো আছি। আমি ফিল্মে এসেছি ২০১৮ সালে আর এর মধ্যে করোনায় ২০ ও ২১ সালে তো কোনো কাজ করার সুযোগ ছিল না। দুটি বছর আমরা ঘরবন্দি ছিলাম। ১৮ সালে ‘দহন’ রিলিজ হয়েছিল। ২০ ও ২১-এ দুটো বছর আল্লাহর রহমতে আমার হাতে চারটা ফিল্ম আছে। আমি নিজেকে লাকি মনে করব। কারণ নতুন অবস্থায় এ জিনিসগুলো ক্যারি করতে পারছি। আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখনো পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ায়নি। সুদিন তো একদিন আসবে। যেহেতু গেল ঈদে সিনেমাগুলো রিলিজ পেয়েছে। সেগুলো খুব ভালো চলছে, আস্তে আস্তে সিনেমার সুদিন আসবে।

সিনেমার নায়িকা...
আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে সিনিয়র নায়িকা যারা ছিলেন, সবাই তাদের কমবেশি দেখেছে, তারা অলরেডি স্টার হয়েই গেছেন। তাদের স্টার হওয়া বা উপরে ওঠার জায়গা নেই। এখন আমরা যারা জুনিয়র আসছি। তবে বর্তমানে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে একজন নায়িকা দেখছি একাই ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে ও খেলে যাচ্ছেন। আমাদের আরও ৪-৫টা বা ৬-৭টা নায়িকা লাগবে। যদি অনেকগুলো নায়িকা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে না থাকি, তাহলে আমরা জায়গাটা বুঝব না কে কতটুকু ভালো অভিনয় করতে পারে। যোগ্যতার উপরেই তো সবকিছু, তাই না? আমাদের শাবানা, শাবনূর ও মৌসুমী ম্যাডাম তাদের সময় তো অনেক হিরোইনই ছিল। আর অনেক কাজও ছিল। এখন যে কাজই হচ্ছে, একজন নায়িকাই করছে। আমাদের আরও কয়েকজনকে সুযোগ দেওয়া উচিত। নতুনদের কাজ দেওয়া হোক। নতুন নতুন মেয়েরা ইন্ডাস্ট্রিতে আসুক। তারপর বোঝা যাবে কার জায়গা কতটুকু কাভার করা যাচ্ছে। আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যেমন হিরোরও দরকার আছে, তেমনি হিরোইনেরও দরকার আছে।
শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করার ইচ্ছে আছে?
আমি যদি এখন শাকিব খান ভাইয়ার বিপরীতে অভিনয় করি, এমন এক চরিত্র নেব, যাতে আমার দর্শক বলতে না পারে যে, বয়সের ব্যবধান আছে। বাপ-মেয়ে, চাচা-মেয়ে এ কথা যেন বলতে না পারে। চরিত্র তো অনেক রকমই আছে, গল্পটা যদি আমার আর শাকিব খানের উপর ক্যারেক্টার ওয়াইজ হয়, তাহলে আমি করব। শুধু আমার আর তার উপর একটা গল্প থাকবে, খুব ভালো গল্প হবে; কিন্তু হিরো-হিরোইনের প্রেম-ভালোবাসার গল্প হবে এ রকম না। এমনও হতে পারে সার্ভাইভাল স্টোরি। মোট কথা, গল্পভিত্তিক হবে।
ভিন্ন ভিন্ন ক্যারেক্টারে অভিনয় করতে ভালো লাগে?
চ্যালেঞ্জিং চরিত্রগুলোতে কাজ করতে আমার খুব ভালো লাগে।
এবং রাজ রিপা...
আমার ভাগ্য ভালো যে, ‘দহন’ সিনেমাতে তো তিনজন নায়িকা ছিল। সেটার মাঝখান থেকে উঠে এসেছি। এটার জন্য আমার নিজেকে লাকি মনে হয়। কারণ একজন পরিচালক আমার উপরই নির্ভর করছেন। বাকিটা লাক, হলের মানুষ যদি খুশি হয়।