
প্রিয়ন্তী উর্বী ও তানজিম সাইয়ারা তটিনী। ছবি: সংগৃহীত
এ প্রজন্মের দুই অভিনেত্রী প্রিয়ন্তী উর্বী ও তানজিম সাইয়ারা তটিনী। অল্প কদিনের ক্যারিয়ারে সম্ভাবনার সৌরভ ছড়াচ্ছেন তারা। দুজনই সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন একটি অ্যান্থলজি ওয়েবফিল্মে অভিনয় করে। তারা কথা বলেছেন সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে। লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক।
উর্বী
প্রিয়ন্তী উর্বীর ক্যারিয়ার বেশি দিনের নয়। প্রথম বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়েছিলেন ২০২০ সালের শেষের দিকে। বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেছিলেন আবরার আতহার। আর প্রথম নাটক ২০২১ সালের মার্চে শ্যামল মাওলার সঙ্গে ‘ভেজা বিড়াল’। মাঝে কয়েকটি কাজ করলেও উর্বী নজরে এসেছেন অল্প কদিন হলো।
চরকির অ্যান্থলজি ফিল্ম ‘এই মুহূর্তে’তে মেজবাউর রহমান সুমনের ‘কোথায় পালাবে বলো রূপবান’ ফিকশনে অভিনয় করেছেন তিনি। সে অভিজ্ঞতা জানিয়ে উর্বী বলেন, অদ্ভুত ও সুন্দর অভিজ্ঞতা। কত হাসপাতালে যে ঘুরেছি। বাচ্চাদের কোলে নিয়েছি।
নির্মাতা সুমনকে নিয়ে উর্বী বলেন, সুমন ভাই চমৎকার একজন মানুষ। মজার ব্যাপার হলো, এর আগে তার সঙ্গে একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ করলেও কখনো কথা হয়নি। এই ফিকশনটির জন্য কয়েকবার স্ক্রিন টেস্ট দিতে হলো। একবার, দুইবার করে চারবার আমার স্ক্রিন টেস্ট নিয়েছেন তারা। পরে শুনেছি প্রথমবারই আমাকে ঠিক করা হয়। গল্পের সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিয়েছি তা জানতেই মূলত পরেরবার ডাকা হয়।
কথায় কথায় জানা যায়, উর্বী একটি সিনেমার কাজ করছেন। যা পরিচালনা করছেন অভিজিৎ অর্ক। সিনেমার নাম ‘জুন’। প্রেক্ষাগৃহে নয়, বিভিন্ন উৎসবে পাঠানোর জন্য সিনেমাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। যদিও এর আগে ‘স্বপ্নবাজী’ শিরোনামের একটি সিনেমার কাজ শুরু করেন তিনি। চল্লিশ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় শুটিং। সে হিসেবে ‘জুন’ হতে যাচ্ছে উর্বীর প্রথম সিনেমা।
অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করছেন উর্বী। সিনেমার শুটিংয়ের জন্য আপাতত এ মাধ্যমে কাজ করতে পারছেন না। সিনেমার শুটিং শুরু করলেও এখানে থিতু হওয়ার কথা বললেন না উর্বী।
ক্যারিয়ারের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ওটিটিতেই ফোকাস করতে চাই। সিনেমার অফার এলেই যে করে ফেলব তা নয়। গল্পনির্ভর কাজ করতে চাই। হোক সেটা সিনেমা কিংবা ওটিটি। এমনকি চরিত্র ছোট হলেও কাজ করব, যদি গল্প পছন্দ হয়।
তটিনী
মিষ্টি হাসির মেয়ে তানজিম সাইয়ারা তটিনী। তাকে প্রথম দেখা যায় বিজ্ঞাপনচিত্রে। তবে দর্শক তার হাসির প্রেমে পড়ে কিছুদিন বাদে। সৈয়দ আহমেদ শাওকী পরিচালিত ওয়েবসিরিজ ‘তাকদীর’ দেখে। এতে সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। মাঝে কাজ করলেন এনটিভিতে ধারাবাহিক নাটক ‘হাউজ নং ৯৬’-এ। এরপর তার দেখা মিলল ফের ওটিটিতে।
চরকির অ্যান্থলজি ফিল্ম ‘এই মুহূর্তে’তে। তিনি পিপলু আর খানের পরিচালনায় ‘কল্পনা’ হয়ে ধরা দিলেন। ফের মুগ্ধ দর্শক। তটিনীর মতে, কাজটা ছিল স্বপ্নের মতো। সারা যাকের আপা ও জাহিদ হাসান আঙ্কেলের মতো অভিনয় শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয় করেছি। তারা বুঝতেই দেননি আমি নতুন। অত্যন্ত আন্তরিকতা ও বিনয়ের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ঈদেও কাজ করেছেন তটিনী। এর মধ্যে একটি ভিকি জাহেদের ‘বাঁচিবার হলো তার সাধ’, অন্যটি মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘সুহাসিনী’। এ দুটো কাজ নিয়েও দর্শকের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন তটিনী। টেলিভিশন ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কাজ করলেও সিনেমা নিয়ে এখনই কিছু ভাবছেন না এ সুহাসিনী। অভিনয় শেখার ইচ্ছে থাকলেও সময় বের করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, আমি এখনো পড়াশোনা করছি। আরও বছর দেড়েক লাগবে শেষ হতে। আমার পক্ষে বড় প্রজেক্টে সময় দেওয়া সম্ভব নয়। প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাকটিং অ্যান্ড ডিজাইনে অভিনয় শেখার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু পড়াশোনার পাশাপাশি ওখানে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। তাই কাজ করতে করতে অভিনয় শিখছি।
তটিনীর কোনো আদর্শ না থাকলেও তিনি কয়েকজনকে পছন্দ করেন। তিনি বলেন, আমার কাছে জয়া আহসানকে ভীষণ ভালো লাগে। তার চেহারা ও অভিনয়ের ভক্ত আমি। তিনি বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন বিদেশের মাটিতে, ব্যাপারটি আনন্দদায়ক। এ ছাড়া নুসরাত ইমরোজ তিশার অভিনয় ভালো লাগে। আফসানা মিমি, সুবর্ণা মুস্তাফারা ছিলেন স্নিগ্ধ। তাদের মতো হওয়া যাবে না, নিজের মতোই হতে হবে।