
নায়ক রাজ রাজ্জা। ফাইল ছবি
দেখতে দেখতে পাঁচ বছর পার হয়ে গেলে ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি নায়ক রাজ রাজ্জাকের মৃত্যুর। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নন্দিত এই অভিনেতা বাংলা চলচ্চিত্রে দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক ধরে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অভিনয় করেছেন। তার জন্ম হয়েছিল ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে। ১৯৬৪ সালে তিনি পরিবারের সাথে বাংলাদেশে চলে আসেন।
শুধু এপার বাংলাতেই নয়, ওপার বাংলায়ও অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন রাজ্জাক। দেশীয় সিনেমায় যখন অশ্লীলতা ভর করে, তখন ঢালিউড থেকে টালিউডে পা রাখেন তিনি। টানা পাঁচ বছর অভিনয় করেন কলকাতার ৩০টির বেশি ছবিতে। ওপার বাংলায় জন্ম নিলেও এপার বাংলার রূপালি রঙেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন নায়ক রাজ।
দু-একটা সিনেমায় ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করার পর ৬৭ সালে নায়ক হিসেবে তার প্রথম ছবি ‘বেহুলা’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন জহির রায়হান। সেই থেকে শুরু। একবারের জন্যও আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অত্যন্ত প্রতাপের সাথে তিনি নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। এছাড়া প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন ১৬টি চলচ্চিত্র।
রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে- বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, নাচের পুতুল, অশ্রু দিয়ে লেখা, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, গুন্ডা, অনন্ত প্রেম, অশিক্ষিত, ছুটির ঘন্টা, মহানগর, রাজলক্ষী শ্রীকান্ত, স্বরলিপি, বাদী থেকে বেগম, বাবা কেন চাকর।
দীর্ঘ ফিল্মি ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন তিনি। ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পদক। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন থেকে তাকে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়েছে রেকর্ড সাতবার। এছাড়াও তার ঝুলিতে আছে নামিদামি অসংখ্য পুরস্কার।
২০১৬ সালে ৭৫তম জন্মবার্ষিকীতে একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে রাজ্জাক বলেছিলেন, আমি আমার জীবনের অতীত ভুলি না। আমি এই শহরে রিফিউজি হয়ে এসেছি। স্ট্রাগল করেছি। না খেয়ে থেকেছি। যার জন্য পয়সার প্রতি আমার লোভ কোনোদিন আসেনি। ওটা আসেনি বলেই আজকে আমি এতদূর শান্তিতে এসেছি।