
মৌসুমী মৌ। ছবি: সংগৃহীত
এ সময়ের ব্যস্ত উপস্থাপিকা মৌসুমী মৌ। উৎসবকেন্দ্রিক নাটকে অভিনয় করেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে যুক্ত আছেন মূকাভিনয়ে। ঘুরে এসেছেন বিভিন্ন দেশ। মূকাভিনয়ের জন্য পেয়েছেন সম্মাননা। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার গুসাং শহরে অনুষ্ঠিত ৩১তম এশিয়া সলো পারফরম্যান্স ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। সে অভিজ্ঞতা ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে সাম্প্রতিক দেশকালের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোহাম্মদ তারেক।
প্রথমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় মূকাভিনয় করে এলেন। অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই চমৎকার ছিল?
দূর্দান্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। চীন, মালয়েশিয়া, ভারতে গিয়েছি। একবার দিল্লিতে হরিয়ানায় আটজনের দলে আমিই ছিলাম একমাত্র নারী পারফরমার। দক্ষিণ কোরিয়ায় এর আগে কখনো যাওয়া হয়নি। সেখানে এক পাহাড়ি এলাকায় ছিলাম। ওখানকার বৃষ্টি উপভোগ করেছি। তবে খাবার নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। উৎসবে জাপান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ভারত ও স্বাগতিক দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আমি ও মীর লোকমান ছিলাম। ২৯ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত উৎসব চলেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, অভ্যুদয় ও নারীর প্রতি সহিংসতা তুলে ধরেছি এ আয়োজনে। ভয়েস অব ইন্সপিরেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রঙ, রক্ত ও একটি চিৎকার এবং অস্বীকৃতি শীর্ষক তিনটি শো মঞ্চস্থ করি। আমি যখন পতাকা নিয়ে জয় বাংলা বলে ছুটে যাই, তখন উৎসবের পরিচালক ইউ জিন গিও’ও জয় বাংলা স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ এক অন্যরকম অনুভূতি। উৎসব কর্তৃপক্ষ আগামীতে বাংলাদেশেও এ আয়োজন করতে চান বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এরপর দূতাবাসে ২ আগস্ট এক ঘণ্টার আয়োজন ছিল। সেখানে প্রবাসী বাঙালিরাও উপস্থিত ছিলেন। দর্শকরা আমাদের পারফরম্যান্সে ভীষণ মজা পেয়েছেন। তারা চেয়েছিলেন আরও কিছুদিন ওখানে থাকি। কিন্তু আমার ও মীর লোকমানের ব্যস্ততায় তা সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্রদূত দেলোয়ার হোসেন স্যার আমাদের যথেষ্ট আপ্যায়ন করেছেন।
মূকাভিনয় নিয়ে আগামীতে কী পরিকল্পনা করছেন?
আমরা বিভিন্ন দেশের উৎসবে আবেদন করেছি। আসছে অক্টোবরে ভারতে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল আছে। সেখানে অংশ নেব।
আপনার অভিনয়ের প্রশংসা শোনা যায় কান পাতলেই। কিন্তু নিয়মিত অভিনয় করা হচ্ছে না কেন?
আমি উৎসব উপলক্ষে নির্মিত নাটকে অভিনয় করছি। সত্যি বলতে প্রচুর প্রস্তাব আসে। মনের মতো কাজ পাওয়া যায় না। এমন চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, যেখানে অভিনয়ের সুযোগ আছে। যে কাজে মনে হয় অভিনয় করতে পারব সে কাজই করছি। তা ছাড়া আমি মূলত উপস্থাপনা করি। অভিনয় করতে গেলে প্রচুর সময় দিতে হয়। তাই মানসম্পন্ন কাজের প্রতি ইচ্ছাটা প্রকট।
গেল ঈদের ‘জহরে কহরে’ নিয়ে তো ভালো সাড়া পেলেন?
খুবই ভালো সাড়া পেয়েছি। আমি ভয়ে ছিলাম। সহশিল্পী ছিলেন আশীষ খন্দকার। পরবর্তী সময় তিনিও বলেছেন কাজটি ভালো হয়েছে। নির্মাণে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন রাকায়েত রাব্বি। এ ছাড়া তারকাদের নিয়ে রান্না বিষয়ক একটি অনুষ্ঠান করেছিলাম ‘রান্না কোনো ব্যাপারই না’। সেটি নিয়েও ভালো সাড়া মিলেছে।
শুনেছি সিনেমার প্রস্তাবও আসছে?
হ্যাঁ, সিনেমার প্রস্তাব পাচ্ছি। সঞ্চালনার ব্যস্ততার জন্য একটি সিনেমার কাজ ছেড়েছিও। সম্প্রতি সরকারি অনুদান পাওয়া কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। আমি চাই ভালো কাজ দিয়ে এ মাধ্যমে অভিষেক হোক। ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। তাই ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।
অন্যান্য ব্যস্ততা কেমন?
আগামী ২৭ আগস্ট এশিয়া কাপ শুরু হচ্ছে। নাগরিক টিভি এবারের এশিয়া কাপ সরাসরি সম্প্রচার করবে। আমি প্রি-শো সঞ্চালনা করব। এ ছাড়া নিয়মিত মাছরাঙায় বিনোদন সারা দিন, এটিএন বাংলায় মিউজিক লাউঞ্জ, প্রথম আলোর ক্যাফে লাইভ এবং নাগরিক টিভির মিউজিক শো সঞ্চালনা করছি। এর বাইরে বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ করছি। এনসিসি ব্যাংকের চারটি সিরিজ বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ শেষ করেছি।