Logo
×

Follow Us

বিনোদন

নায়করাজ নতুন প্রজন্মের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন

Icon

এন. ইসলাম

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২২, ১৪:৫৭

নায়করাজ নতুন প্রজন্মের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন

নায়করাজ রাজ্জাক। ফাইল ছবি

নায়করাজ রাজ্জাক। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি। একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র অঙ্গনে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ২১ আগস্ট ছিল তার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের এ দিনে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মৃত্যুর পরও তিনি চলচ্চিত্র জগতের সবার মনের মধ্যেই আছেন। এমন উচ্চতায় যে রাজার আসন, মৃত্যু তাকে কখনো ছুঁতে পারে না। 

এ দেশের চলচ্চিত্র জগতে নায়করাজের শূন্যতা কখনো কাটবে না। নায়করাজ আদলে যতটা নায়ক ছিলেন মনের দিক দিয়ে ছিলেন পুরোদস্তুর অভিনেতা। টেলিভিশনে অভিনয় করেছেন। সিনেমায় ছোটখাটো চরিত্র দিয়ে শুরু। বুকভরা সাহস ছিল তার। যখন চকলেট হিরোর গন্ধ যায়নি সেই ক্যারিয়ারে অ্যাকশন সিনেমায় মাত করেছেন। রোমান্টিক, পারিবারিক, অ্যাকশন, ফোক, পোশাকি, সামাজিক আবার সাহিত্যনির্ভর সব ধরনের সিনেমায় তিনি এক একটি চরিত্র। 

‘পাগলা রাজা’ সিনেমায় তার হাসিটা আর কে হাসতে পেরেছে? ‘ছুটির ঘণ্টা’ সিনেমায় একজন দপ্তরি। ‘রংবাজ’ সিনেমায় গুণ্ডা। নানা সিনেমায় অতিথি চরিত্রও করেছেন। সমসাময়িক অভিনেতাদের সঙ্গে স্ক্রিন ভাগাভাগি করেছেন। নিজের প্রডাকশনের সিনেমায় অনুজ অভিনেতাদের নিয়ে কাজ করেছেন। নিজে অথরব্যাকড চরিত্র করে আরেকজনকে মিলনাত্মক চরিত্রে মেনে নিয়েছেন। ক্যারিয়ারের পিক টাইমেই বাবার চরিত্র শুরু করেছেন।  

২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। একাধিকবার জাতীয় সম্মাননা লাভ করেন তিনি। রাষ্ট্র তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’-এ ভূষিত করে। 

রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের দক্ষিণ কলকাতায় মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ষাটের দশকে নির্মাতা সালাউদ্দিনের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রবেশ করেন তিনি। ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে ঢালিউডে প্রথম উপস্থিত হন তিনি। লোককাহিনি নিয়ে জহির রায়হান এটি নির্মাণ করেছিলেন। তার সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় অসাধারণ লখিন্দর হয়ে দর্শকের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রয়াত এ অভিনেতা। এতে তিনি জুটি বাঁধেন অভিনেত্রী সূচন্দার সঙ্গে। এ জুটি ‘আনোয়ারা’, ‘জীবন থেকে নেওয়া’, ‘মনের মতো বউ’সহ ৩০টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন। 

রাজ্জাককে নিয়ে তার প্রথম নায়িকা বলেন, ‘আমার চোখে মহানায়ক রাজ্জাক। নিষ্ঠা আর শ্রম দিয়ে মানুষের হৃদয়ে তিলে তিলে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তার অভিনয়শৈলী নিয়ে বলার মতো দুঃসাহস আমার নেই। সব পরিচয়েই তিনি ছিলেন অনবদ্য। সৃষ্টি দিয়েই তিনি বেঁচে থাকবেন চিরকাল। প্রিয় মানুষটির জন্য সব সময়ই দোয়া থাকবে।’ 

তবে কলকাতার উত্তম-সুচিত্রা জুটির মতোই ঢাকায় রাজ্জাক-কবরী জুটি ছিল ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। ১৯৬৮ সালে এই দুজনে প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন। তখন থেকেই দেশের দর্শক তাদের উত্তম-সুচিত্রা জুটির বিকল্প হিসেবে আপন করে নেন। পরে রাজ্জাক-কবরী অভিনীত প্রায় সব সিনেমাই ছিল সুপারহিট। এভাবেই তারা দুজনে দেশের সর্বকালের সেরা জুটির স্বীকৃতি পান। সাদা-কালো যুগে তারা ছিলেন উজ্জ্বল নক্ষত্র। 

তাদের বিপুল এই জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে নায়ক রাজ্জাক একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, কবরীর সঙ্গে তার জুটি গড়ে উঠেছিল ‘ময়নামতি’ সিনেমা দিয়ে। এটি ছিল একটি রোমান্টিক সিনেমা। সিনেমাটি দর্শক খুবই পছন্দ করেন। ‘ময়নামতি’, ‘আবির্ভাব’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘বাঁশরী’, ‘রংবাজ’, ‘অধিকার’সহ আরও অনেক সিনেমা দিয়ে তাদের জুটি পাকাপোক্ত হয়। 

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মতে, ঢাকাই সিনেমায় রাজ্জাকের অবদান কখনো ভুলে যাবার মতো নয়। চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে নিজের দুই সন্তানকেও সিনেমায় নিয়ে আসেন। বাবার পথ ধরেই সিনেমাঙ্গনে তারাও সুনাম কুড়ান। নুতন প্রজন্ম এখনো এ কিংবদন্তিকে অনুসরণ করে। যুগে যুগে নায়করাজ নতুন প্রজন্মের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন বলে তাদের অভিমত।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫