
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
আজমেরী হক বাঁধন ক্যারিয়ারের সুসময় পার করছেন। কখনো তিনি ‘রেহানা’, কখনো বা ‘মুশকান জুবেরী’। আবার তাকে দেখা যায় ‘অক্টোপাস’ চরিত্রে। কাছাকাছি সময়ে একাধিক চরিত্রে রূপদানকারী বাঁধন বর্তমানে ব্যস্ত নতুন ওয়েব সিরিজের কাজে। শঙ্খ দাসগুপ্তের পরিচালনায় চরকির ‘গুটি’ ওয়েব সিরিজে দেখা মিলবে তার। এখানে একজন ড্রাগডিলারের চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘সুলতানা’ চরিত্রটি নিয়ে শঙ্খর সঙ্গে গেল দুই বছর ধরে আলাপ করছি। আমি এর আগে অডিশনও দিয়েছিলাম। তখনো ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ রিলিজ হয়নি। কোভিডের আগের কথা। আমাকে চরিত্রটি বেশ টেনেছে। আমার মতো করে প্রস্তুতি ছিল। নির্মাতাও প্রস্তুতি নিয়েছেন। আমি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ করে অভিনয়ের এক ধরনের স্কুলিং করেছি। আমাদের দেশে নারীপ্রধান গল্পের কাজ হয় না। একটা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, মানুষ এমন কাজ দেখে না। একজন নারীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমাজকে দেখা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ‘সুলতানা’ চরিত্রটি আমার জন্য একদম আলাদা একটি চরিত্র। কাজটি শেষ হলে আপনারা ভালো বলতে পারবেন কেমন করেছি।
শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা উপভোগ করছেন বাঁধন। এ প্রসঙ্গ তুলতেই জানালেন, শঙ্খর টিমটাকে ভীষণ পছন্দ হয়েছে। আমি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর পর সৃজিত আর বিশালের সঙ্গে কাজ করলাম। তারা ভীষণ গোছানো ছিল। এরাও তেমনি।
কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় শুটিং করছি। কলকাতার কাজগুলোতেও প্রকৃত লোকেশনে কাজ করেছি। কিন্তু এ সিরিজে ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করছি। সহশিল্পী যারা আছেন তারা বড়মাপের অভিনেতা। তাদের সঙ্গে কাজ করে সুবিধা যেমন আছে, তেমনি ভয়ও আছে। কাজের অভিজ্ঞতা ভালো হচ্ছে।
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ অন্যরকম পরিচিতি এনে দিয়েছে বাঁধনকে। তাকে নিয়ে নির্মাতাদের ভাবনার জায়গার পরিবর্তন হয়েছে। তাকে নিয়ে দর্শকের মাঝেও দেখা গেছে আগ্রহ। বাঁধনও বিষয়টি লক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, সৃজিতের ওয়েব সিরিজের ‘মুশকান জুবেরী’ নামটাও কিন্তু বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। বিশালের কাজে আমার নাম ‘অক্টোপাস’। এখানে ‘সুলতানা’। শুটিংয়ের সময় দৌড়ের একটা সিকোয়েন্স আছে। একটি ছেলে এসে জানতে চাচ্ছে দৌড়াচ্ছি কেন। আমাকে কেউ চিনছে না। কয়েকজন নিজেরা বলাবলি করছে, এটা কি বাঁধন? হুট করে কেউ চিনতে পারছে না। ব্যাপারটি ভালো লাগছে। আমি উপভোগ করছি।
ওপার বাংলায় দুটো কাজ করলেও বাংলাদেশের ওয়েব প্ল্যাটফর্মে বাঁধনকে খুব একটা দেখা যায়নি। এ বিষয়ে বাঁধনের সরল উত্তর, আমি এর আগে বাংলাদেশের দুটো কনটেন্টে কাজ করেছিলাম। অভিজ্ঞতা ছিল বেশ বাজে। তাই এদেশের নতুন কোনো কাজ করতে ভরসা পাইনি। যেমন কাজ করতে চাই তেমন পাচ্ছিলাম না। মাঝে সৃজিত ও বিশালের সঙ্গে কাজ করলাম। হইচইয়ের কাজের অভিজ্ঞতা যে খুব ভালো তা নয়। তাই ভয়ে নতুন কাজ করতে পারছিলাম না। শঙ্খর সঙ্গে কাজের সিঙ্ক ভালো হচ্ছে। সে বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে। কাজটা ভালো বোঝে। তার ইউনিট ভীষণ ভালো। আমার কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজ করে আরাম পাচ্ছি। আসলে কাজের ক্ষেত্রে সততা জরুরি। যে কাজের কথা বলে আমাকে নেওয়া হচ্ছে, সে কাজ তো করতে হবে।
এদিকে বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’ মুক্তি পাবে নেটফ্লিক্সে। সেখানে বলিউড তারকা টাবুর সঙ্গে কাজ করেছেন বাঁধন। টাবুর ব্যাপারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আমাদের রেহানা জানালেন, আমার বড় সৌভাগ্য টাবুর সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করেছি। তার সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে ভয়ে ভয়ে ছিলাম। প্রথম শটের সময় গলা কাঁপছিল। তিনিই আমাকে সহজ করে নিয়েছিলেন। তিনি মানুষকে প্রাপ্ত সম্মান দিতে জানেন। আমার পর্দা উপস্থিতি স্বল্প সময়ের। বেশিরভাগ কাজ করেছি টাবুর সঙ্গে। এ অভিজ্ঞতা আমাকে সমৃদ্ধ করেছে।