মাহসা আমিনির মৃত্যু
খোলা চুলে অস্কারজয়ী ইরানি অভিনেত্রীর সংহতি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৯:২১

অস্কারজয়ী ইরানী অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তি।
হিজাব না পরার জেরে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার ও তার মৃত্যুর পর প্রায় দুই মাস ধরে সরকার বিক্ষোভ চলছে ইরানে। আর তাতে সংহতি জানিয়েছেন দেশটির অস্কারজয়ী অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী ইরানে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে আগেই সংহতি জানিয়েছিলেন। তবে এবার স্কার্ফবিহীন খোলা চুলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন। সেখানে তাকে কুর্দি ভাষায় ‘নারী, জীবন ও স্বাধীনতা’ লেখা একটি প্ল্যাকার্ড ধরে থাকতে দেখা গেছে, যা মুহুর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।
অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তি ইরানের বিখ্যাত নির্মাতা আসগর ফরহাদী পরিচালিত অস্কারজয়ী সিনেমা ‘দ্যা সেলসম্যান’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পান। সফলতম এই ইরানি অভিনেত্রীর ৮০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে ইনস্টাগ্রামে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান বিক্ষোভে নিহতদের পরিবারকে সমর্থন জানিয়ে তিনি কর্মজীবনে বিরতি টেনেছেন। তিনি এর আগে যেকোনো মূল্যে দেশে থাকবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। যেকোনো মূল্যে দেশে থাকবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ইরানি অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তি।
চলমান বিক্ষোভে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন দেশটির শিল্প ও ক্রীড়াঙ্গনের ব্যক্তিরা। তারানেহ আলিদুস্তির পোস্টটি এই একাত্মতারই সাম্প্রতিক নজির।
গত মাসে ইরানের তারকা ফুটবলার সরদার আজমাউন বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানান। বায়ার্ন লেভারকুসেন ফরোয়ার্ড ইনস্টাগ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর নিন্দা জানিয়ে বলেন, এত নির্বিকার চিত্তে ইরানের মানুষ ও প্রাণবন্ত নারীদের হত্যা করায় ধিক্কার। ইরানি নারীরা দীর্ঘজীবী হোক!
গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে নৈতিকতা রক্ষা পুলিশের কাছে আটক হন মাহসা আমিনি। সে সময় হিজাবের নিচ দিয়ে তার কিছু চুল দেখা যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করা হয়। পরে তাকে একটি বন্দিশালায় নেওয়া হয়। সেখানে নির্যাতনের পর তিনি কোমায় চলে যান। তিন দিন পর হাসপাতালে মারা যান তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তারা তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে এবং তাদের একটি গাড়িতে আমিনির মাথা ঠুকে দিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে দেশটির পুলিশ বাহিনী বলেছে, কোনো নির্যাতন করা হয়নি। মাহসার হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইরান। দেশটির মানবাধিকার কর্মীদের তথ্যানুসারে, চলমান বিক্ষোভে কমপক্ষে ৩২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আটক হয়েছেন ১৪ হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারী। ইরানে বেশ কয়েক বছর এমন অস্থিরতা দেখা যায়নি। বিক্ষোভের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্বের ১৫০টির বেশি শহরে সমাবেশ হয়েছে।