বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন দেশের বিনোদন অঙ্গনের মানুষজন। নির্বিচারে ছাত্র হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন তারা। আন্দোলনে বিজয়ের পর জনতার সঙ্গে উল্লাসের শরিক হয়েছেন এই তারকারা। কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় আবার কেউ রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছেন। সে সব তারকা কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান তা নিয়ে বিশেষ আয়োজন।
শাকিব খান : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত সবার চাওয়া পূরণ হয়েছে। জয় পেয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এই জয়ের আনন্দ যেন আমাদের দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর দায়বদ্ধতা ম্লান করে না দেয়। এই মুহূর্তে আমাদের সবার আরও বেশি সহানুভূতিশীল হতে হবে। মনে রাখতে হবে-সবার আগে দেশ, দেশের মানুষ, দেশের ভাবমূর্তি এবং দেশের সম্পদ। জাতি, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সব মানুষ যেন নিরাপদে থাকে এবং দেশের সম্পদ সুরক্ষিত থাকে-আসুন আমরা সেই চেষ্টা চালিয়ে যাই। এটা আমাদের নৈতিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব।
আসিফ আকবর : আমরা গত ৫৩ বছর যে ভুল করে আসছি সেই ভুলগুলো যেন না হয়। কাউকে প্রতিপক্ষ মনে না করে কোনো অস্থিরতা না হোক। সবাই সহনশীল থাকুক এটাই কামনা। কারণ ছাত্র-জনতার বিজয় হয়েছে। ২০২৪ সালে যারা কোটা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা। এই মুহূর্তে আমাদের শান্ত থাকতে হবে। দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। প্রতিহিংসার রাজনীতি বাদ দিতে হবে। রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি, বাজে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে নতুন দেশ গঠন করতে হবে। মেধাবী ছাত্রদের সামনে রেখে দেশ গঠন করতে হবে।
আজমেরী হক বাঁধন : এখনই সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ বন্ধের ডাক দিচ্ছি। সবাইকে শান্ত থাকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন যদি আমাদের হিন্দু ভাই-বোন ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করা হয়। আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমান সহিংসতা নিন্দনীয়। এই বিপ্লব অযৌক্তিক আক্রমণের কারণে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না। আমরা একসঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করব।
সিয়াম আহমেদ : নতুন প্রজন্ম বিজয়ী বেশে ঘরে ফিরেছে। তারা যদি এখন কথা বলা শুরু করে, রাজনীতি ও দেশ নিয়ে সচেতন থাকে, তাহলে একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি হবে। আমাদের দেশ আবার জেগে উঠবে। হয়তো নতুনভাবে জেগে উঠবে, নতুন হাতে জেগে উঠবে। এভাবে যদি ছাত্ররা রাজনৈতিকভাবে সোচ্চার থাকে। আমরা সবাই ভাবতাম, এ প্রজন্ম রাজনীতি নিয়ে চিন্তাই করে না। এরা টিকটক করে, গেম খেলে, ইন্টারনেটে নিজেকে ব্যস্ত রাখে। এরা দেখিয়েছে এবার কীভাবে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হয়। নতুন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি।
মেহজাবিন চৌধুরী : সাধারণ মানুষদের কাছে আহ্বান, বিজয় উৎসব করুন। কিন্তু দেশের অনেক জায়গায় কিছু মানুষ লুটপাট ও আগুন দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চা হোন। নতুন এ বাংলাদেশকে আর কলঙ্কিত হতে দিতে চাই না।
শবনম বুবলী : স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমাদের এই সুন্দর বাংলাদেশকে আরও সুন্দরভাবে গড়তে প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের যেমন সহযোগিতা করতে হবে তেমনই দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে সবাইকে দেশ ও দেশের মানুষকে সর্বোচ্চ সহায়তা করতে হবে। প্রত্যেককে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি আনন্দ উদযাপন করুন, বিজয় উৎসব করুন কিন্তু দেশের সম্পদ নষ্ট করা, লুটপাট করা, ভাঙচুর করা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, নিরীহ মানুষ হতাহতের ঘটনা থেকে বিরত থাকুন।
খায়রুল বাশার : ছাত্র-জনতার জয়। এ দেশ এখন আমাদের। বিজয়ের আনন্দ করুন। কাউকে আঘাত করবেন না প্লিজ। থানায় বা কোনো স্থাপনায় ভাঙচুর করবেন না প্লিজ। আহমিকা-উগ্রতা-সন্ত্রাস আমরা চাই না। এই দেশ হোক সুন্দর মানুষের দেশ, সাম্যের দেশ, সততার দেশ, ন্যায্যতার দেশ। আমরা বিশ্বাস করতে চাই; আজ থেকে দেশ সন্ত্রাসমুক্ত। আর কোনোদিন যেন সন্ত্রাস-দুর্নীতি প্রশ্রয় না পায়; আমরা সাহসী থাকব। আর কোনো হত্যাকারী আর কোনো স্বৈরাচার যেন এই বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে না পারে। আগামী নেতৃত্বের প্রতি এই ভরসা আমরা রাখতে চাই। সৎ ও সুন্দর হয়ে এই দেশকে দ্রুত সময়ে বিশ্বের বুকে উজ্জ্বলতর করে তুলব আমরা। মানবতার জয় হোক। ভালোবাসা ভ্রাতৃত্বের জয় হোক। তারুণ্যের জয় হোক।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh