থমথমে শোবিজ অঙ্গন

করোনাকালে শোবিজ অঙ্গনে একটা বড় ধাক্কা লেগেছে। সেই ধাক্কা কাটতে না কাটতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে আরেকবার বিপাকে পড়েছে শোবিজ অঙ্গন। নাটক-সিনেমা ও সংগীত তিন মাধ্যমেই থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গত শুক্রবার কোনো নতুন সিনেমা মুক্তি পায়নি।

এখন হলে পুরনো কয়েকটি সিনেমা প্রদর্শিত হলেও সেভাবে দর্শকের উপস্থিতি নেই। আসছে শুক্রবার ডিপজল অভিনীত ‘অমানুষ হলো মানুষ’ নামের একটি সিনেমা মুক্তির তারিখ ঘোষণা আসে। কিন্তু এ সিনেমার পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর জানান মুক্তির তারিখ পিছানোর সম্ভাবনা আছে। গত ২৫ জুলাইয়ের পরও নতুন-পুরনো সিনেমা মিলিয়ে শখানেক হল চালু ছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে চিত্র পাল্টে গেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘দেশের বেশির ভাগ প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ আছে। নির্মাতা মনতাজুর রহমান আকবর বলেন, ‘দেশে যখনই কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন আসে তার একটা প্রভাব আমাদের শোবিজে পড়ে। বিশেষ করে সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। একই সময়ে দু-একটি খোলা থাকলেও সেগুলোতে দর্শকের উপস্থিতি তেমন থাকে না। এটি আমাদের সংস্কৃতির জন্য খুবই খারাপ একটি লক্ষণ। আমরা সব সময় দেশের সুষ্ঠু পরিবেশ দেখতে চাই।’ 

এদিকে সংগীতশিল্পীরাও ঘরে বসে আছেন। দেশে প্রায় সব ধরনের কনসার্ট বন্ধ আছে। অনেক শিল্পীই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ক্ষোভও প্রকাশ করেন। এভাবে ঘরে বসে থাকলে করোনার সময়ের মতো তাদের আবারও নতুন পেশার দিকে ঝুঁকতে হবে বলেও কেউ কেউ জানান।

ক্লোজআপ তারকা রাশেদ বলেন, এখন দেশে কনসার্টের কোনো পরিবেশ নেই। আমাদের শিল্পীরা এর মধ্যে অনেক দিন ধরেই কনসার্ট থেকে দুরে আছেন। এভাবে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যায়। গত কয়েক বছর দেশের বেশিরভাগ কনসার্টের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ থাকত। কিন্তু আবার সুষ্ঠু একটা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের কনসার্টগুলো বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে হয়তো কিছু করপোরেট শো হতে পারে। কিন্তু সেগুলোর জন্য আমাদের দেশের নির্দিষ্ট কয়েজন শিল্পীকেই তাদের পছন্দ থাকে। সেখাসে সব ধরনের শিল্পী গান করার সুযোগ পান না। বারবার এভাবে হোঁচট খেলে আমাদের শিল্পীদের জন্য ভালো কিছুর আশা করা যায় না। 

কণ্ঠশিল্পী শান শাইখ বলেন, শিল্পীদের আয়ের প্রধান উৎস হলো স্টেজ শো। কিন্তু এক মাসেরও বেশি সময় সেটি বন্ধ আছে। এভাবে কত দিন থাকা যায়। দেশে হঠাৎ এমন একটা পরিবর্তন আসবে কারও জানা ছিল না। তবে আমি চাই নতুন সরকার খুব শিগগির আমাদের কাজে ফেরার সুযোগ করে দেবেন। গান-সিনেমার শিল্পীদের বাইরে নাটকের কেউ কেউ শুটিংয়ে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু অধিকাংশ শিল্পী বলছেন এখনো শুটিংয়ের পরিবেশ ফিরে আসেনি। গত কয়েক বছর টিভি নাটকের চেয়ে ইউটিউবের জন্য নাটক বেশি নির্মাণ হয়েছে। 

নাটকসংশ্লিষ্টদের মতে, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইউটিউব নাটকের জন্য যারা পৃষ্ঠপোষকতা করতেন তাদের অনেকেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে অনেক শিল্পীর কাজের সংখ্যা কমে যাবে। কিছু দিন পর পুরোদমে শুটিং শুরু হলেও কাজের সংখ্যা কম থাকবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //