ইউরোপ থেকে পণ্য সরিয়ে নিচ্ছে কোকা-কোলা

ইউরোপ থেকে কোক-স্প্রাইট ও নিজেদের তৈরি অন্যান্য পানীয় প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বখ্যাত পানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা। পানীয়গুলোতে ক্লোরেট নামক রাসায়নিক যৌগের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত শনাক্ত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। বেলজিয়ামের গেন্ট শহরে কোম্পানিটির উৎপাদন কেন্দ্রে নিয়মিত পরীক্ষার সময় ক্লোরেটের এই উচ্চ মাত্রা শনাক্ত হয়।

মূলত অ্যাপলটাইজার, কোকা-কোলা অরিজিনাল টেস্ট, কোকা-কোলা জিরো সুগার, ডায়েট কোক, স্প্রাইট জিরো, ফান্টা ও মিনিট মেইড নামক পণ্যগুলোর নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচে সমস্যা শনাক্ত হয়েছে। কোকা-কোলার এক মুখপাত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, পানীয়গুলোতে যে পরিমাণ ক্লোরেট শনাক্ত হয়েছে, তা গ্রাহকদের জন্য খুবই কম ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও আমরা সার্বিক বিবেচনায় ইউরোপের বাজার থেকে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচের পানীয় সরিয়ে নিচ্ছি।

কোকা-কোলার ইউরোপীয় ইউনিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এরই মধ্যে বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ ও নেদারল্যান্ডস থেকে পানীয় সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। ক্লোরেট একপ্রকার জীবানুনাশক রাসায়নিক যৌগ ও এর প্রধান উপাদন ক্লোরিন গ্যাস। পানি বিশুদ্ধকরণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এই যৌগের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অধিভুক্ত সংস্থা ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথরিটির (ইফসা) একটি গবেষণায় উঠে আসে, খাবার কিংবা পানীয় প্রস্তুতের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মাত্রায় ক্লোরেট ব্যবাহরে কোনো সমস্যা নেই। তবে নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি ক্লোরেটের উপস্থিতি থাকলে তা দীর্ঘ মেয়াদে শিশু ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ক্লোরেটের উচ্চমাত্রা বিশেষ করে শিশু ও নবজাতকদের মধ্যে থাইরয়েড সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা সংস্থার পুষ্টিবিদ ক্যারন গ্রাজেটি বিবিসিকে বলেন, আমাদের প্রশ্ন তোলা উচিত। আমরা কি এমন পানীয় পান করতে চাই, যেগুলোতে আতশবাজি ও জীবাণুনাশকের উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক মিশ্রিত থাকে, তা যত কম পরিমাণই হোক না কেন।

তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত ক্লোরেট গ্রহণের ফলে বমি, ডায়রিয়া, অক্সিজেন শোষণে বাধা, এমনকি শরীরে অন্যান্য গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।

এদিকে, কোকা-কোলার পণ্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার এই পদক্ষেপকে গ্রাহকদের নিরাপত্তার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের এ বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh