Logo
×

Follow Us

ফিচার

অদ্ভুত এক রোগ

‘ফাইব্রোমায়ালজিয়া’

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৬:১৬

‘ফাইব্রোমায়ালজিয়া’

মাঝে মাঝে শরীরে ব্যথা অনুভূত হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু যদি মাসের পর মাস ব্যথা ও ক্লান্তি অনুভব করতে থাকেন, তাহলে সমস্যা। সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বের ৩ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই এমনটি হয়ে থাকে, যা সংখ্যায় রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চেয়ে বেশি। আর এই অসুখের নাম ‘ফাইব্রোমায়ালজিয়া’। এই অসুখে মূলত মাথা থেকে পা পর্যন্ত সারা শরীরে অদ্ভুত বেদনার অনুভূতি হয়। রাতে ঘুমাতে গেলে ব্যথা বেড়ে যায়। তবে স্বাভাবিক হাঁটাচলা করায় ব্যথা কমে আসে। ব্যথার উৎস ও প্রাবল্য প্রতিদিন বদলায়, সময়ে সময়ে বাড়ে-কমে। এর উপসর্গগুলো খুবই সাধারণ হওয়ার কারণে প্রায়ই রোগটি নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে সংক্রমণের হার প্রায় সাত গুণ বেশি।

ফাইব্রোমায়ালজিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা। প্রধান উপসর্গ হচ্ছে মাংসপেশি, টেন্ডন ও অস্থিসন্ধিগুলোতে ভোঁতা ও চলমান একটি ব্যথা। এই রোগের কারণে ঘুমাতে সমস্যা হয়, মনোযোগে প্রভাব পড়ে, এমনকি অবসাদও অস্বাভাবিক নয়। এই অসুখের প্রধান কারণ হলো ট্রমাটিক ঘটনা, শারীরিক আঘাত বা অন্য রোগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। গবেষকদের মতে, কিছু জিনের মিউটেশনের কারণেও রোগটি হতে পারে। যদিও কোন জিনের জন্য দায়ী তা এখনো নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। রিপিটেড নার্ভ স্টিমুলেশন, যা মগজ ও স্পাইনাল কর্ডের ভেতর এক ধরনের পরিবর্তনের সংকেত পাঠাতে থাকে। যে সংকেতের কারণে শরীরে কিছু রাসায়নিকের পরিমাণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। ওই ভারসাম্যহীনতাই ব্যথার সিগন্যাল তৈরি করে।

সাধারণ কিছু কিছু উপসর্গ তিন মাসের বেশি স্থায়ী হলে ফাইব্রোমায়ালজিয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এগুলো হলো-

* মাইগ্রেনের উপসর্গের সঙ্গে মাথার পেছন দিকে যন্ত্রণা।

* অস্থিসন্ধি, যেমন-দুই কাঁধের উপরিভাগ, কোমর, কনুই ও হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করা। এ ব্যথা মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে।

* সহজেই ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত অনুভব করা, যা বিশ্রাম নিলেও দূর হতে চায় না।

* অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চালনায় অসাড়ভাব, মাংসপেশিতে জমাটবদ্ধতা ও খিঁচুনি অনুভব করা।

* অনিদ্রা বা স্লিপ ডিজ-অর্ডারে ভোগা।

* কোনো তথ্য মনে রাখতে ও কথা বলতে অসুবিধা হওয়া।

* হজমে সমস্যা দেখা দেওয়া। তবে ডায়েট, ব্যায়াম ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যেমন- 

* প্রতিদিন সকালে গরম পানিতে গোসল ব্যথা, মাসল স্টিফনেস কমিয়ে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করবে।

* অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ খাবার টিসু ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, কো-এনজাইম ১০, ক্যারোটিনয়েডস, টারপিনস, অ্যালিল সালফায়েড, আইসোথায়োসায়ানেট আছে এমন খাবার, যেমন-বাঁধাকপি, আপেল, আঙুর, টমেটো, গাজর, পালং, রসুন ও পেঁয়াজ কাঁচা খেতে পারলে ভালো।

* অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে-এমন খাবার থেকে দূরে থাকুন। ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করতে হবে।

* পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন খান। ডাল, স্প্রাউটস, লো-ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার, মাছ, মুরগির মতো লিন মিট ডায়েটে রাখুন। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম ডায়েটে রাখলে উপকার পাবেন। 

* প্রতিদিন আট গ্লাস পানি, শাক-সবজি ও ফল খাওয়া জরুরি। গ্রিন টিও এই অসুখে উপশম দেবে।

* প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম, নিয়মিত হাঁটাচলা ও ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ করতে পারেন। সাঁতার কাটতে পারলে আরো ভালো।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫