Logo
×

Follow Us

ফিচার

পিরোজপুরের কয়েকজন আহত জুলাইযোদ্ধার কথা

Icon

নাছরুল্লাহ আল কাফী

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৩:০৫

পিরোজপুরের কয়েকজন আহত জুলাইযোদ্ধার কথা

আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ পিরজপুরের ইন্দুকানীর বেল্লাল (৩৫) ও সানাউল্লাহ (২০)।

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে সারা দেশে অসংখ্য মানুষ আহত ও নিহত হয়েছে। আজ বলব পিরোজপুরের কয়েকজন আহত জুলাইযোদ্ধার কথা। জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার কালাইয়া গ্রামের বেল্লাল হোসেন হাওলাদার; চিকিৎসার অভাবে তার ডান হাতটি কেটে ফেলতে হতে পারে। বেল্লাল ও তার পরিবারের সদস্যদের দিন কাটছে পঙ্গুত্বের আশঙ্কায়। 

১৯ জুলাই শুক্রবার সকালে বাজার করে ফেরার পথে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালালে একটা গুলি এসে বেল্লালের ডান হাতের বাহুতে বিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রোগীর চাপ থাকায় ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।

বেল্লালের বাবা আব্দুল বারেক হাওলাদার এলাকায় ছোট দোকান নিয়ে চা বিক্রি করেন। ছয় ছেলের মধ্যে বেল্লাল পঞ্চম। সংসারের অভাব মেটাতে ১২ বছর আগে ঢাকায় যান বেল্লাল। যাত্রাবাড়ী এলাকায় ডাব নারকেল ও কলার আড়তে কাজ করতেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন, যা আয় করেন তা দিয়ে পরিবারের ভরণ-পোষণের পাশাপাশি বাড়িতে থাকা মা-বাবার জন্যেও টাকা পাঠাতেন। 

বারেক হাওলাদার বলেন, ‘মোর পোলার কি দোষ ছিল? পুলিশে গুলি কইরা ডান হাতটা শেষ কইরা দিছে। চিকিৎসা করাইতে অনেক টাকা খরচ হইছে। সংসার চলে না, ডাক্তার কইছে বিদেশে চিকিৎসা করানো লাগবে। কিন্তু টাকা নাই। কেমনে চিকিৎসা করামু।’

একই উপজেলার দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামের আ. সালাম হাওলাদারের ছেলে সানাউল্লাহ হাওলাদার (২০)। কাজ করতেন ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার বিদ্যুৎগলি এলাকার একটি সিএনজি গ্যারেজে। ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। তখন যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ডান হাতে পুলিশের গুলি লাগে সানাউল্লাহর। গুলিতে তার হাতের দুটি রগ ছিঁড়ে যায়। পরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তার হাতে পর পর দুটি অপারেশন করা হয়। বর্তমানে তার হাতের দুটি আঙুলে কাজ করছে না। চিকিৎসক বলেন আরো একটি অপারেশন করতে হতে পারে। 

সানাউল্লাহ বলেন, কয়েকজন ছাত্র সমন্বয়ক বন্ধুর মাধ্যমে আন্দোলনে যোগ দেই। ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ডান হাতে পুলিশের গুলি লাগে। তখন ছাত্ররা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যায়, সেখানে ছাত্রলীগের পোলাপান চিকিৎসা করতে বাধা দিলে জোরপূর্বক চিকিৎসা করান ছাত্র ভাইয়েরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে অপারেশন হয়। এখনো হাতের দুটি আঙুল কাজ করে না। হাতে আরো চিকিৎসা করা দরকার। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারি না। 

আহত বেল্লাল জানান, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসন থেকে দুই লাখ টাকা চিকিৎসার জন্য পেয়েছি। বিদেশে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ডাক্তার বলেছেন চিকিৎসা না করালে হাত কেটে ফেলতে পারেন। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসার জন্য যেতে পারছি না। নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫