
বছরের এই সময়টায় প্রকৃতি যেমন জীবন্ত হয়ে ওঠে, তেমনি ঘরের চারপাশেও জমে উঠে আর্দ্রতার এক অদৃশ্য ঘেরাটোপ। বৃষ্টির দিনে জানালা বন্ধ রাখতে হয়, সূর্যের দেখা মেলে কম, বাতাস চলাচলও হয় বিঘ্নিত। এর ফলেই ঘরের ভেতর এক ধরনের স্যাঁতসেঁতে ভাব আর গুমোট গন্ধ তৈরি হয়, যা শুধু অস্বস্তিকরই নয়, স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জি, অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট আছে, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত সমস্যাজনক হয়ে দাঁড়ায়। তবে কিছু সচেতনতা ও সঠিক যত্নের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। এ জন্য প্রমাণভিত্তিক, ব্যাবহারিক কিছু পরামর্শ...
বাতাস চলাচলের পথ খুলে দিন : বর্ষায় জানালা সব সময় খোলা রাখা সম্ভব না হলেও দিনে অন্তত কিছু সময়ের জন্য জানালা খুলে রাখুন। যাতে ঘর কিছুটা হলেও শুকিয়ে ওঠে এবং যেন গন্ধ আটকে না থাকে।
আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে ডিহিউমিডিফায়ার : বর্ষার মৌসুমে ঘরের ভেতরের আর্দ্রতা বেড়ে যায় ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত, যা ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির জন্য আদর্শ পরিবেশ। একটি ছোট ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহারে ঘরের আর্দ্রতা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশে নামিয়ে আনা যায়। বাজারে বিভিন্ন সাইজ ও দামের ডিভাইস পাওয়া যায়, বিশেষ করে শোবার ঘর বা স্টোররুমের জন্য এটি খুব কার্যকর।
কাপড়চোপড় শুকানো : বর্ষায় সবচেয়ে বেশি গন্ধ তৈরি হয় ভেজা কাপড় থেকে। ভিজে তোয়ালে বা ধোঁয়া কাপড় ঘরের ভেতর ঝুলিয়ে রাখলে ঘরে খুব দ্রুত স্যাঁতসেঁতে গন্ধ তৈরি হয়। সম্ভব হলে বারান্দা বা জানালার কাছে শুকাতে দিন, নয়তো ওয়াশিং মেশিনের স্পিন মোড ভালোভাবে ব্যবহার করে কাপড় যতটা সম্ভব শুকিয়ে নিন।
ছত্রাক ও ফাঙ্গাস প্রতিরোধে নিয়মিত পরিষ্কার : ঘরের কোনায়, পর্দার পেছনে, বাথরুম বা রান্নাঘরের দেওয়ালে ফাঙ্গাস গজানো বর্ষায় খুব সাধারণ ব্যাপার। এই অংশগুলো সপ্তাহে একবার ব্লিচ বা ভিনেগার দিয়ে পরিষ্কার করুন।
কাঠের আসবাবের বাড়তি যত্ন : কাঠ বর্ষার আর্দ্রতায় ফুলে যেতে পারে কিংবা ধীরে ধীরে নষ্টও হতে পারে। কাঠের ফার্নিচার ও খাটের নিচে কখনোই ভেজা কিছু রাখবেন না। ছোট কাপড়ের ব্যাগে ন্যাপথলিন, চুনগুঁড়া বা কাঠকয়লার টুকরো রেখে দিলে তা আর্দ্রতা শুষে নেয় এবং ফাঙ্গাস গজাতে বাধা দেয়।
ইনডোর প্ল্যান্টে সতর্কতা : বর্ষায় অতিরিক্ত পানি জমে গেলে তা থেকেই ছত্রাক বা মশার উৎপাত বাড়তে পারে। মাটি যেন না পচে, গাছে যেন পানি জমে না থাকে, তা নজরে রাখা জরুরি।