
ভ্রমণ মানেই আনন্দ, নতুন অভিজ্ঞতা আর মুক্তির স্বাদ। কিন্তু সফরসঙ্গী যদি হয় শিশু, তবে আনন্দের সঙ্গে আসে বাড়তি পরিকল্পনা ও সতর্কতার বিষয়টিও। শিশুর জন্য ভ্রমণ নির্বিঘ্ন আর আরামদায়ক করতে দরকার আগাম প্রস্তুতি। কারণ ছোট্ট সদস্যটিকে নিয়ে ভ্রমণ যতখানি আনন্দের পাশাপাশি দায়িত্বেরও। যাত্রাপথের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে শিশুর ঘুম, খাবার, বাথরুম ব্রেক সবকিছুতেই রাখতে হয় বাড়তি নজর। শিশুকে সঙ্গে করে যারা ভ্রমণে যেতে চান জেনে নিন কিছু প্রস্তুতির বিষয়ে।
সময় ও গন্তব্য বুঝে পরিকল্পনা : শিশুর বয়স আর শারীরিক সক্ষমতা বুঝে ভ্রমণ পরিকল্পনা করাটাই প্রথম শর্ত। এ ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ও স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে ভ্রমণের সময় বেছে নিন। দূরপাল্লার গন্তব্য শিশুর জন্য ক্লান্তিকর হতে পারে। হোটেল বা আবাসনের খোঁজে যাওয়ার আগে দেখে নিন সেখানে শিশুবান্ধব সুবিধা আছে কি না; যেমন : শিশু-কট, হিটার, এসি, উষ্ণ পানির ব্যবস্থা ইত্যাদি।
ভ্রমণের মাধ্যম ঠিক করুন বুঝে-শুনে : শিশুকে নিয়ে কোন ধরনের পরিবহনে ভ্রমণ করবেন, সেটিও জরুরি বিষয়। বাসে দীর্ঘ সময় শিশুকে সামলানো কঠিন হতে পারে। ট্রেন বা বিমান তুলনামূলক আরামদায়ক। নিজের গাড়ি থাকলে ভ্রমণ আরো সহজ হয়। আকাশপথে টেক-অফ ও ল্যান্ডিংয়ের সময় শিশুর কানে চাপ পড়তে পারে, তাই সে সময় তাকে কিছু চিবোতে দেওয়া বা বোতলে পানি খাওয়ানো গেলে চাপ কিছুটা কমে।
শিশুর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র : ডায়াপার, পোশাক, ওষুধ, খাবার, খেলনা, যা কিছু শিশুর প্রতিদিনের ব্যবহারে লাগে, তা একটি হ্যান্ডব্যাগে গুছিয়ে রাখুন। ঘনঘন খাওয়ার জন্য সহজ পাচ্য খাবার (সুজি, বিস্কুট, ফল) রাখতে পারেন। প্রয়োজনে গরম পানির বোতল বা থার্মোফ্লাস্ক সঙ্গে রাখুন।
শিশুর মনোযোগ ধরে রাখুন : ভ্রমণের সময় শিশুর বিরক্তি কমাতে তার প্রিয় খেলনা, রং পেনসিল বা গল্পের বই সঙ্গে রাখুন। জানালা দিয়ে দৃশ্য দেখিয়ে কথা বললে শিশুর মন ভালো থাকবে এবং যাত্রাও কেটে যাবে সহজে।
শিশুকে গল্প করে নতুন জায়গা সম্পর্কে ধারণা দিন, শিশুর সঙ্গে ভ্রমণ মানে অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, অনেক সময় যাত্রা বিরতিতে যাওয়া, হঠাৎ করে পরিকল্পনা বদলে ফেলা। তাই মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে আগেই।
ঝুঁকি এড়াতে সাবধান থাকুন : শিশু যদি কোনো নির্দিষ্ট খাবারে অ্যালার্জিক হয়, সেটা নোট করে রাখুন। হঠাৎ জ্বর বা পেট খারাপ হলে কী করবেন, সে জন্য শিশুর নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শমাফিক ওষুধ সঙ্গে নিন। অনেক সময় ভ্রমণে শিশুরা পানিশূন্যতা, ফুড পয়জনিং বা ঘুমের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই তাদের জন্য আলাদা প্রস্তুতি ছাড়া বের হলে ঝুঁকি থেকেই যায়।
একেবারে ছোট শিশু হলে : ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের নিয়ে লং জার্নি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। প্রয়োজনে পেডিয়াট্রিশিয়ানের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই যাত্রায় বের হওয়া ভালো। এ ক্ষেত্রে শিশুর জন্য ন্যাপকিন, গরম কাপড় ও ফিডারের প্রস্তুতি রাখা সবচেয়ে জরুরি।