
গল্পটা বছর কয়েক আগের। গিয়েছিলাম আশ্চর্য সুন্দর আর মায়াময় দেশ ভুটানে। যেন পাহাড়ের কোলে লুকানো রূপকথার রাজ্য। সেই সফরের দুটো জায়গা আজও চোখে ভাসে, দোচুলা পাস আর চেলালা পাস।
সফরের তৃতীয় দিন সকালে রাজধানী থিম্পু থেকে রওনা দিলাম পুনাখার পথে। পাহাড়ি পেঁচানো রাস্তায় গাড়ি উঠে যায়, নেমে আসে আবার উঠে যায়। মনে হয় যেন আকাশের সিঁড়ি বেয়ে চলেছি। পথে ওয়াফিকার একটু-আধটু ঝামেলা হচ্ছিল। ওর বয়স কত আর, চার-পাঁচ। কখনো একদমই কিছু হলো না, আবার কখনো বমিভাব এতটাই বাড়ল যে ভয় পেয়ে গেলাম।
তখনই গাড়ি থামিয়ে কয়েক মিনিট হাঁটাচলা, ওরও ভালো লাগছে, আর আমারও ফাও প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখা হয়ে যাচ্ছে। ডালপালায় পাখির ডাক, পাহাড়ের ঢালে ঘন সবুজে ছাওয়া বন, সব মিলিয়ে যেন এক অন্য জগৎ।
ক্রমে ওপরে উঠছি তো উঠছিই। একসময় থামলাম তিন হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায়, এটাই আমাদের জীবনের রেকর্ড! পৌঁছে গেছি দোচুলা পাসে।
এই সুযোগে দু-একটি তথ্য দিয়ে রাখছি এই ‘পাস’ নিয়ে। পাহাড়ি ভাষায় ‘পাস’ মানে হলো দুটি পাহাড় বা পর্বতের মাঝের গিরিপথ, যেখান দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। হিমালয় অঞ্চলের ভ্রমণে এই পাসগুলো এক একটা গন্তব্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো একদিকে ভ্রমণপথ আবার অন্যদিকে প্রকৃতির রূপ দেখার অসাধারণ জানালা।
দোচুলার আকাশটা সেদিন ঢাকা ছিল ঘন মেঘে। তবে ভাগ্য ভালো, মেঘের ফাঁক গলে দু-এক ঝলক দেখা পেলাম হিমালয়ের তুষারধবল চূড়ার। তার মধ্যে আছে ভুটানের অন্যতম উঁচু শৃঙ্গ মাউন্ট মাসান কাং (সাত হাজার ১৯৪ মিটার)। মুহূর্তগুলো হারাতে দিলাম না, পুনম দ্রুত ক্যামেরায় বন্দি করল সেই দৃশ্য।
তারপর এগোলাম দোচুলা পাসের আসল আকর্ষণের দিকে, সাদা-লাল রঙে মেশানো ১০৮টি স্তুপা। দূর থেকে কুয়াশার ভেতরে এদের কেমন রহস্যময় লাগছিল। বৌদ্ধধর্মে স্তুপা মূলত ধ্যান ও প্রার্থনার স্থান। এই স্তুপাগুলো বানানো হয়েছিল ২০০৪ সালে, কুইন মাদার আসি দরজি ওয়াংমো ওয়াংচুকের নির্দেশে।
শান্ত-নির্জন পরিবেশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি স্তুপা যেন অতীত-বর্তমানকে একসঙ্গে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। পাশে একটি ছোট গুম্ফাও আছে, যদিও ভুটানের অন্যান্য গুম্ফার তুলনায় আকারে ছোট, তবু তার নীরবতা আপনাকে কাছে টেনে নেবে।
সেদিন দোচুলায় দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল আমরা যেন পৃথিবীর ছাদে এসে বসে আছি, যেখানে বাতাসের প্রতিটি কণায় মিশে আছে প্রার্থনা আর পাহাড়ি রহস্য।
হাঁটতে হাঁটতে দেখা হয়ে গেল এক বাংলাদেশি পর্যটক পরিবারের সঙ্গে। আসলে আমাদের সঙ্গে একই উড়োজাহাজে এসেছিলেন তারা। পুনম ঝটপট তাদের কয়েকটা ছবি তুলে দিল, আর আমাদেরটা তুলে দিলেন নেডো। সেই সঙ্গে শুরু হলো আমাদের ‘ভুটানি হাঁটাহাঁটি’। রোদ আর ঠান্ডা মিশে গায়ে লাগছিল এক অদ্ভুত প্রশান্তি। আমরা হাঁটছিলাম দোচুলার ১০৮টি স্তুপার মাঝের পথ ধরে।
চারদিকে মানুষের ভিড়, দেশি-বিদেশি পর্যটক, সবাই মুগ্ধ চোখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওয়াফিকা নিজের মতো ব্যস্ত। ইউরোপীয় বা আমেরিকান কেউ দেখলেই এক রকম চ্যালেঞ্জ নেয়, নিজের ‘ইয়েস’, ‘নো’, ‘ভেরি গুড’ মানের ইংরেজি ঝালিয়ে নিতে। ওর সে উৎসাহ দেখে আমরা হেসে গড়াগড়ি খাই। আমেরিকান এক দম্পতির সঙ্গে আলাপও জমে উঠল, তারা বলছিলেন, ভুটানে এসে যেন একেবারে অন্য এক দুনিয়ায় এসে পড়েছেন।
এই উদ্যানে বেশ কিছু হাঁটার পথ বা ট্রেইল আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো রডডেনড্রন ট্রেইল। ভুটানের জাতীয় ফুল রডডেনড্রনের নানা প্রজাতি এখানে ফুটে ওঠে বসন্তকালে। শুনেছি এপ্রিল-মে মাসে গেলে পুরো পথটাই নাকি লাল, সাদা, গোলাপি ফুলে রঙিন হয়ে ওঠে। আমাদের তখন সেই সৌভাগ্য হয়নি, তবে কল্পনাতেই চোখ ভরে গেল।
গুগোলে খোঁজ করে আরো জানা গেল, এই উদ্যান ভুটানের পরিবেশ রক্ষায় এক বড় ভূমিকা রাখে। ভুটানের দুই বিশাল সংরক্ষিত বন, জিগমে দর্জি ন্যাশনাল পার্ক আর জিগমে সিংগে ওয়াংচুক ন্যাশনাল পার্কের মাঝে রয়েছে এই উদ্যান। তাই একে বলে প্রাকৃতিক করিডোর, যার মধ্য দিয়ে অবাধে চলাফেরা করে বন্যপ্রাণীরা। একদমই বিরল সৌভাগ্য হলে এখানে দেখা মেলে বাঘ বা চিতা বাঘের। তবে আরো বেশি সম্ভাবনা থাকে লাল পান্ডার দেখা পাওয়ার, যে প্রাণীটি ভুটান, নেপাল ও ভারতের পাহাড়ি জঙ্গলের গর্ব।
আমাদের অবশ্য সেদিন এমন ভাগ্য হয়নি। তবু মনটা থেকে গেল আফসোসে, সময় হাতে থাকলে হয়তো অন্তত কোনো একটি ট্রেইল ধরে একটু ট্রেকিং করা যেত! হয়তো রডডেনড্রন ট্রেইলেই, ফুলে ভরা পথে হেঁটে, হঠাৎ চোখে পড়ত গাছে ওঠানামা করা কোনো লাল পান্ডা বা দূরে পাহাড়ের গা থেকে ভেসে আসত অচেনা পাখির ডাক।
ভুটান সফরের পঞ্চম দিন। সকালে পারো থেকে উঠে যাই কিংবদন্তি টাইগার নেস্টে। পাহাড়ের গায়ে ঝুলে থাকা সেই মঠের সৌন্দর্য চোখ ভরে দেখে নামতেই শুরু হলো আরেক রোমাঞ্চকর যাত্রা, চেলালা পাসের পথে।
চেলালা ভুটানের সবচেয়ে উঁচু জায়গা যেখানে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। উচ্চতা তিন হাজার ৯৮৮ মিটার, প্রায় চার হাজার মিটার! মানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এতটা ওপরে উঠে যাওয়ার অভিজ্ঞতা জীবনে খুব একটা পাওয়া যায় না।
পথটা শুরুতেই যেন আভাস দিল, ‘সাবধান, আমি সহজ নই।’ পাহাড়ি রাস্তাটা ভয়ানক আঁকাবাঁকা। একদিকে খাড়া পাহাড় উঠে গেছে আকাশ ছুঁতে, অন্যদিকে খোলা গভীর খাদ, তল দেখা যায় না। ভুটানে যত পথ দেখেছি, এটাই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু নেডো, আমাদের অভিজ্ঞ চালক, এমন সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাচ্ছিল যে ওয়াফিকারও তেমন ভয়ের সুযোগ হলো না।
কখনো দূরে পাহাড়ের গায়ে টাইগার নেস্টটা ছোট্ট বিন্দুর মতো দেখা যাচ্ছিল, একটা অদ্ভুত প্রশান্তি আর রহস্য মিলেমিশে আছে সেখানে। রাস্তার ধারে হঠাৎই একটি বানর ডাল থেকে উঁকি দিয়ে মিলিয়ে গেল। মনে হলো পাহাড়ের প্রতিটি গাছ, প্রতিটি ছায়া যেন নীরবে আমাদের যাত্রা দেখছে।
উচ্চতা যত বাড়ছিল, ভূ-প্রকৃতির চেহারাও বদলাচ্ছিল। নিচের দিকে সবুজে ঢাকা গাছপালা, একটু ওপরে এলো শীতপ্রধান বন, আরো ওপরে শীতল অরণ্যে সাইপ্রাস আর পাইনের আধিপত্য। হাওয়ার সঙ্গে ঠান্ডার তীব্রতাও বাড়ছিল। নেডো জানাল, শীতকালে এখানে এত তুষারপাত হয় যে পুরো পথই বন্ধ হয়ে যায়। তখন রেসকিউ টিম এসে বরফ সরিয়ে না দিলে কোনো গাড়ি চলাচলই সম্ভব হয় না।
কিন্তু আসল রোমাঞ্চ বাকি ছিল।চেলালা পৌঁছাতে যখন বেশি বাকি নেই, হঠাৎই উল্টো দিক থেকে কোনো ধরনের সংকেত না দিয়ে এক জিপ সোজা আমাদের দিকে ছুটে এলো। এক মুহূর্তের জন্য বুক হিম হয়ে গেল, মনে হলো এই বুঝি খাদের দিকে ছিটকে যাচ্ছি!
শেষ মুহূর্তে নেডোর দক্ষতা আমাদের বাঁচালো। তার চাকা ঘোরানোর ভঙ্গি, চোখের তীক্ষ্ণ হিসাব, সব মিলিয়ে এক অচিন্তনীয় দক্ষতায় সংঘর্ষ এড়িয়ে গেল। গাড়ি থামতেই দেখলাম, নেডোর মুখ লাল হয়ে গেছে উত্তেজনা আর রাগে। ওই জিপটিও থেমে গেল। নেডো নামতেই এক দফা বকাবকি করল ওদের। আমরা ভেতরে বসে নিঃশ্বাস নিতে ব্যস্ত। জীবন-মৃত্যুর সীমারেখা যে এতটা সরু হতে পারে, সেটা ওই মুহূর্তে হাড়ে হাড়ে টের পেলাম।
চেলালার পথে তখন মনে হচ্ছিল, এ এক ভয় আর সৌন্দর্যের মিলিত খেলা। পাহাড় যেমন আপনাকে মুগ্ধ করে রাখবে, তেমনি এক মুহূর্তে পরীক্ষা নেবে আপনার সাহসের।
চেলালায় গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই ঠান্ডা যেন হাড়ে গিয়ে বিঁধল। থার্মোমিটারে তখন মাত্র দুই ডিগ্রি। ওয়াফিকা শীতে কাঁপতে কাঁপতে চেঁচিয়ে উঠল, যেন ভুটানের কনকনে হাওয়াই তার সঙ্গে মজা করছে। অথচ ভুটান সফরের শুরুতে আমরা শীত নিয়ে যে আতঙ্কে ছিলাম, তা এত দিনে একেবারেই মিলিয়ে গিয়েছিল। তাই চেলালার মতো প্রায় চার হাজার মিটার উচ্চতায় কী পরিমাণ শীত হতে পারে, তা আন্দাজই করিনি। প্রস্তুতিও তেমন ছিল না।
কিন্তু এই জমাট ঠান্ডার মাঝেই এক দোকানের সামনে দেখা মিলল গরম গরম পাকোড়ার। বেসনে ডোবানো ফুলকপি, আলু আর ঝাল মরিচ, তেল থেকে উঠেই যেন আমাদের ডাক দিচ্ছিল। দাঁতে দাঁত বারি খেতে খেতেও ওগুলোর স্বাদ এ জীবনে ভোলার নয়। হিটার ছাড়া পাহাড়ি শীতে পাকোড়া যেন এক রকম প্রাকৃতিক ওষুধই বটে।
তারপর এগোলাম পাহাড়ের কিনারায়। চারপাশে নীলচে ধোঁয়াটে কুয়াশা, ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে তুষারে ঢাকা হিমালয়ের শুভ্র চূড়া। মনে হচ্ছিল হাত বাড়ালেই যেন ছুঁয়ে ফেলা যায় সেসব সাদা পর্বত। নিচে দুই দিকের উপত্যকা, এক পাশে স্বপ্নময় পারো ভ্যালি, আরেক পাশে রহস্যময় হা ভ্যালি। পারোর সৌন্দর্য তো আগেই দেখেছি, কিন্তু দূর থেকে হা ভ্যালির বিস্তৃত সবুজ ও নীলচে ছায়া সত্যিই দারুণ লাগল। বাংলাদেশি যে পরিবারটির সঙ্গে আগে দেখা হয়েছিল, তারা বলছিল অন্তত এক রাত হা ভ্যালিতে কাটাবে। শুনে হালকা হিংসেই হলো।
চেলালা পাস ভুটানের সবচেয়ে উঁচু মোটরচালিত গিরিপথ উচ্চতা তিন হাজার ৯৮৮ মিটার। এখান থেকেই শুরু হয় একাধিক ট্রেকিং রুট, আর বসন্তকালে এই এলাকা রডডেনড্রনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। পাহাড়ের ঢালে ঢালে রঙিন ফুলের সমারোহে পুরো এলাকা যেন রূপকথার রাজ্যে ঢুকে যায়। আবার পরিষ্কার দিনে এখান থেকে ভুটানের পবিত্রতম পাহাড় জোমোলহারি (সাত হাজার ৩২৬ মিটার) চোখে পড়ে, স্থানীয়রা যাকে দেবতাদের আবাস বলে মানে।
আর হা ভ্যালি? ভুটানের সবচেয়ে নির্জন, সবচেয়ে অক্ষত প্রাকৃতিক স্বর্গগুলোর একটি। সেখানকার গ্রামীণ জীবনযাপন, টেরাকোটা ছাদের ঘর, ধানক্ষেত আর গবাদি পশুর ঘণ্টাধ্বনি মিলে যেন অন্য এক জগতে নিয়ে যায় মানুষকে। এ ভ্যালিই আবার ভুটানের কম পরিচিত সামরিক ইতিহাসেরও সাক্ষী, কারণ চীন সীমান্তের খুব কাছেই এটি।
পাকোড়ার গরম ভাপে হাত গরম করতে করতে ভেবেছিলাম, ভুটানকে শুধু ‘ল্যান্ড অব থান্ডার ড্রাগন’ বলা অন্যায়। একে সহজেই ডাকা যেতে পারে ‘ল্যান্ড অব বিউটিফুল মনাস্ট্রিজ’। পাহাড়ের গায়ে গায়ে এত এত সুন্দর মঠের দেখা মিলল, কী বলব!
ভুটান সফরের দিনগুলো যতই কাটছিল, মনে হচ্ছিল আমরা যেন এক অদ্ভুত মায়ার দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। পাহাড়, মঠ, নদী, ফুল, বন, সবকিছুতেই এক ধরনের অনাবিল শান্তি। অথচ ভুটান কিন্তু খুব সহজে সবার নাগালের বাইরে থাকা কোনো গন্তব্য নয়।
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিমানে মাত্র এক ঘণ্টার পথ পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। তবে শর্তও আছে। ভুটানে যেতে হলে সরকার নির্ধারিত দৈনিক ফি, যেটা বলা হয় সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (এসডিএফ), তা দিতে হয়। বাংলাদেশ, ভারত আর মালদ্বীপের নাগরিকদের জন্য সে ফি অনেকটা কমানো, প্রতিদিন মাত্র এক হাজার ২০০ গুলট্রাম (প্রায় এক হাজার ৬০০ টাকা)। ফলে প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের জন্য ভুটান ভ্রমণ এখন অনেকটাই সহজলভ্য।
তবে সহজলভ্য হলেও ভুটান যেন কখনোই বাণিজ্যিক পর্যটনের ভিড়ে ডুবে যায়নি। এখানে প্রতিটি দর্শনার্থীকে সীমিত রাখা হয়, যাতে প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সুরক্ষা বজায় থাকে। আর সেখানেই ভুটান ভিন্ন, এখানে আসা মানেই কেবল পাহাড় দেখা নয়, বরং এক ধরনের আধ্যাত্মিক যাত্রা।
চেলালা পাস থেকে নামার সময় গাড়ির জানালা দিয়ে দূরের মঠগুলোর দিকে শেষবার তাকিয়ে মনে হচ্ছিল, ভুটানকে সত্যিই বলা যায় ‘মনাস্ট্রির দেশ’। প্রতিটি পাহাড়ে, প্রতিটি বাঁকে যেন লুকানো আছে এক একটি গল্প, এক একটি প্রার্থনার সুর।
ফিরতি পথে মনে হলো, এই ভ্রমণটা আসলে শুধু দৃশ্য-অভিজ্ঞতার নয়, ছিল আত্মারও। বাংলাদেশের কোলাহল থেকে কয়েক দিনের জন্য পালিয়ে এসে এখানে যে প্রশান্তি পেলাম, তা অনেক দিন হৃদয়ে থেকে যাবে। হয়তো একদিন আবার ফিরে আসব, হা ভ্যালির নির্জন কোনো গ্রামে রাত কাটাতে কিংবা বসন্তে রডডেনড্রনের রঙে রঙিন চেলালার ঢালে হাঁটতে।
ভুটানকে তখনো নিশ্চয় একই রকমই পাব-এক শান্ত, সুরক্ষিত, পাহাড়ে জড়িয়ে থাকা মায়ার দেশ।