
পূজার রান্নাঘর মানেই ঘরভরা সুগন্ধ আর উৎসবের আবহ। ঐতিহ্য আর ভিন্ন স্বাদের মেলবন্ধনে ছয়টি বিশেষ রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী অসিত কর্মকার...
পায়েস
উপকরণ : চাল (চিনিগুড়া/কালিজিরা চাল) আধা কাপ, দুধ ১ লিটার, চিনি আধা কাপ (স্বাদমতো), এলাচ ২-৩টা, তেজপাতা ১টা, কিশমিশ ২ টেবিল চামচ, কাজুবাদাম ২ টেবিল চামচ (কুচি করা), ঘি ১ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : চাল ধুয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন, তারপর পানি ঝরিয়ে নিন। কড়াই বা হাঁড়িতে দুধ জ্বাল দিয়ে ফুটতে দিন। ফুটন্ত দুধে তেজপাতা ও এলাচ দিন। এরপর চাল দিয়ে অল্প আঁচে নরম হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। চাল সিদ্ধ হয়ে গেলে চিনি মিশিয়ে দিন। এরপর কিশমিশ, কাজুবাদাম ও ঘি দিয়ে ৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে নামিয়ে নিন।
মোয়া
উপকরণ : মুড়ি ৩ কাপ, খেজুর গুড় ১ কাপ, নারকেল কোরানো আধা কাপ, ঘি ১ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া সামান্য।
প্রস্তুত প্রণালি : গুড় কেটে টুকরো করে নিন। কড়াইতে গুড় ও অল্প পানি দিয়ে গরম করতে থাকুন, যতক্ষণ না ফেনা উঠে আঠালো হয়। এবার ঘি ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে দিন। সঙ্গে সঙ্গে মুড়ি ও নারকেল কোরানো ঢেলে দিন এবং দ্রুত নেড়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। গরম থাকা অবস্থায় হাত ভিজিয়ে গোল গোল বলের মতো আকার দিয়ে মোয়া বানিয়ে ফেলুন।
ছানা পটোল কষা
উপকরণ : ছানা ২০০ গ্রাম, পটোল ৬-৮টা, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা-রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, টমেটো কুচি ১টা মাঝারি, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, লাল মরিচ গুঁড়া ও ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ করে, জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ, গরম মসলা গুঁড়া আধা চা-চামচ, তেজপাতা ১টা, গোটা জিরা আধা চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, চিনি সামান্য ও তেল ৪-৫ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : পটোল ধুয়ে লম্বাভাবে দুই পাশে হালকা চিরে হালকা সোনালি রং হওয়া পর্যন্ত তেলে ভেজে নিন। ছানা টুকরা করে আলাদা করে রাখুন, সামান্য ভেজে নিতে পারেন। কড়াইতে তেল গরম করে গোটা জিরা, তেজপাতা ফোড়ন দিন। এবার পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কষিয়ে, আদা-রসুন বাটা দিয়ে নাড়তে থাকুন। সব মসলা ও সামান্য পানি দিয়ে ভেজে কষিয়ে নিন। টমেটো কুচি ও চিনি দিয়ে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না মসলা থেকে তেল আলাদা হয়। এবার ভাজা পটোল দিন, ভালোভাবে মসলার সঙ্গে মিশিয়ে ঢেকে দিন সামান্য পানি দিয়ে। পটোল প্রায় সিদ্ধ হলে ছানা দিয়ে আস্তে আস্তে মিশিয়ে দিন। লবণ ঠিক করে গরম মসলা দিয়ে আরো ২-৩ মিনিট রেখে নামিয়ে নিন।
কচু ভাজি রেসিপি
উপকরণ : কচু ৪-৫টা (চাকা চাকা করে কাটা), পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ২টা, হলুদ গুঁড়া আধা
চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য।
প্রস্তুত প্রণালি : কচু ভালোভাবে ধুয়ে পাতলা করে চাকা চাকা করে কেটে নিন। গরম তেলে কচুর টুকরাগুলো ভেজে তুলুন। অন্য প্যানে সামান্য তেল দিয়ে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভাজুন। ভাজা কচু দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে ভাজি নামিয়ে নিন।
সবজি পোলাও
উপকরণ : বাসমতি চাল ২ কাপ, গাজর কুচি, মটরশুঁটি, ফুলকপি (ছোট টুকরা), বিনস (কুচি) আধা কাপ করে, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা-রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২টা, দারুচিনি ১ ইঞ্চি, এলাচ ও লবঙ্গ ৩টা করে, কাঁচা মরিচ ২টা, ঘি ও তেল ২ টেবিল চামচ করে, লবণ স্বাদমতো, পানি ৪ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি : চাল ধুয়ে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। কড়াইতে তেল ও ঘি গরম করে তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ ও লবঙ্গ দিন। এরপ পেঁয়াজ দিয়ে ভালোমতো ভেজে আদা-রসুন বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। সবজি দিয়ে নেড়ে নিন। এবার চাল দিয়ে ভালোমতো নেড়েচেড়ে নিন। এরপর পানি, লবণ দিয়ে ঢেকে মাঝারি আঁচে রান্না করুন। পানি শুকিয়ে গেলে দমে রেখে নামিয়ে নিন।
কাঁচাকলার মুঠো রসা
উপকরণ : মুঠো বানানোর জন্য : কাঁচাকলা ৪-৫টি (সিদ্ধ করা), সিদ্ধ আলু ১টা মাঝারি, কাঁচা মরিচ কুচি ২টি, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, বেসন ২ টেবিল চামচ, তেল ভাজার জন্য।
গ্রেভি : পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ,
আদা-রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, টমেটো কুচি ১টা, হলুদ ও জিরা গুঁড়া আধা
চা-চামচ করে, লাল মরিচ ও ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ করে, গোটা জিরা আধা
চা-চামচ, তেজপাতা ১টা, গরম মসলা আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ৪ টেবিল চামচ, পানি পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : মুঠো তৈরি-সিদ্ধ কাঁচা কলা ও আলু একসঙ্গে মেখে তাতে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, ধনেপাতা, লবণ ও বেসন মিশিয়ে নিন। এরপর ছোট ছোট মুঠোর মতো বল বানিয়ে গরম তেলে ভেজে তুলুন।
গ্রেভি তৈরি : কড়াইতে তেল গরম করে গোটা জিরা, তেজপাতা দিয়ে ফোড়ন দিন। এবার পেঁয়াজ বাটা কষিয়ে আদা-রসুন বাটা দিন। এরপর হলুদ, লাল মরিচ, ধনে, জিরা গুঁড়া ও সামান্য পানি দিয়ে ভালোমতো কষিয়ে নিন। এরপর টমেটো কুচি দিয়ে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না তেল আলাদা হয়। পানি ও লবণ দিয়ে ফুটিয়ে নিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে ভেজে রাখা মুঠোগুলো দিয়ে দেন। গরম মসলা দিয়ে ঢেকে ২ মিনিট দম দিয়ে নামিয়ে নিন।