
আর মাত্র দুই দিন বাকি। ইনতিয়াজ মাহমুদ নদীপথে দেশের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত কায়াকিং করে যাচ্ছেন, অভিযানের নাম এক্সপেডিশন তিস্তা-টেকনাফ। রোমাঞ্চ ও প্রকৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তার জন্য নতুন কিছু নয়। শীতের কোলাহলে একাকী জয় করেছেন নেপালের বরফে ঢাকা পিসাং পর্বত। পদ্মার রাজশাহী অংশ থেকে চাঁদপুরে মেঘনার সঙ্গে মিশে যাওয়া পর্যন্ত, নদীর সরল ও উন্মুক্ত পথ জয়। আজ আমরা শুনব কেবল তার এই নদী অভিযানের গল্প।
সেবার বই থেকে রোমাঞ্চের প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই তিন গোয়েন্দা, মাসুদ রানা পরে রোমাঞ্চর প্রতি আগ্রহ পাকাপোক্তভাবে পেয়ে বসে ইনতিয়াজকে। স্কুলে পড়ার সময় পড়তে চেয়েছিলেন তাই মেরিন একাডেমিতে। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে থাকার সময় প্রকৃত অ্যাডভেঞ্চারে নিজেকে জড়িয়ে নেওয়া ছিল চ্যালেঞ্জ।
২০১৪ সালে পড়ালেখার জন্য ঢাকা আসার পরই তার সামনে রোমাঞ্চকর পৃথিবীর দরজা খুলে যায়। শুরুতে পাহাড়-পর্বতের সঙ্গে ছিল ঘনিষ্ঠতা, যেখানে শীতের পিসাং পর্বতের শীর্ষ জয় সাহস ও ধৈর্যের পরীক্ষা নেয় তার। তবে নদী পথে রোমাঞ্চের আসল সূচনা মাত্র দুই বছর আগে।
তখন থেকে কায়াকিং হয়ে উঠেছে তার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। নদীর হাওয়া, ঢেউ, বিকট রোদ ও ঝড়ের সঙ্গে লড়াই, মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে অদ্ভুত এক বন্ধুত্ব।
কায়াকিংয়ের পোকা
শুরুটা ২০২৩-এ সুনামগঞ্জ গিয়ে। সেবার ইনতিয়াজ আর মুনীম মিলে সুরমা নদী ধরে নৌকা চালিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেন। এই অসাধারণ অভিজ্ঞতার পর কায়াকের পোকাটা মাথায় পাকাপোক্ত আসন গাড়ে। অল্প অল্প করে শুরু করেন কায়াকের কেরামতি রপ্ত করা। ঢাকার আশপাশের নদীগুলোয় ছোট ছোট কয়েকটা ট্রিপ আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। ভৈরব থেকে অষ্টগ্রাম, কর্ণফুলী বেয়ে কাপ্তাই থেকে চট্টগ্রাম, বুড়িগঙ্গা ধরে সদরঘাট থেকে চাঁদপুর-এভাবে দুই বছর কেটে গেল, স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন পদ্মা নদী নিয়ে।
সুনামগঞ্জের সুরমায় শুরু
‘সুনামগঞ্জে গিয়েছিলাম আমি আর মুনীম। কী মনে করে সেখানে একটা নৌকা কিনে ফেলি। সম্ভবত সাড়ে চার হাজার টাকা পড়েছিল। তারপর ওটায় চেপে সুরমা নদী ধরে রওনা দিলাম। সে অর্থে নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্য ছিল না। যতদূর যাওয়া যায় আর কী! তবে নৌকা চলা শুরুর কিছু সময় পর বুঝতে পারলাম, ঝামেলা একটা হয়েছে। নতুন নৌকা কিনেছি। এটার ফাঁকফোকর আলকাতরা বা পুডিং দিয়ে বন্ধ করিনি। তাই চুইয়ে চুইয়ে পানি ঢুকছে ভেতরে। কী আর করা! একজন পানি সিচি, আরেকজন নৌকা চালাই।’ এভাবেই প্রথম অভিযানের গল্প শুরু করলেন ইনতিয়াজ।
তবে রোমাঞ্চের নেশা যার প্রবল তাকে আটকানো মুশকিল। অন্য কেউ হলে হয়তো নৌকা চালানো থামিয়ে দিতেন। কিন্তু তারা চালিয়ে গেলেন। এভাবে চার দিনে পৌঁছালেন কিশোরগঞ্জের বালিখোলা নামের এক জায়গায়। সেখানে তাদের ঘটনা শুনে রীতিমতো ভিড় জমে গেল। লোকেরা রীতিমতো বরণ করে নিল দুজনকে। স্থানীয় এক লোক দেড় হাজার টাকা দিয়ে নৌকাটি কিনে নিলেন। তারাও খুশি।
কায়াকের স্বপ্নপূরণ
তখনই একটা কায়াকের স্বপ্নে দেখা শুরু দুই বন্ধুর। মনে হলো একটা কায়াক পেলে কায়াকিং করে নদীগুলো চষে বেড়াতে পারতেন। তবে ভালো মানের কায়াক পাওয়া মুশকিল। দামও কম নয়। শেষ পর্যন্ত শিহাব নামের এক রোমাঞ্চপ্রেমীর খোঁজ পেলেন, যিনি চীন থেকে একটা কায়াক আনিয়েছেন। তবে ফিনল্যান্ডে থাকায় এটা ব্যবহারের সুযোগ পাননি। খুশি মনে ওটা ব্যবহারের অনুমতি দিলেন। তবে ওটা আনতে হবে সাভার থেকে।
ভাবলেন, এটাকে কষ্ট করে গাড়িতে করে আনার চেয়ে নৌপথে চালিয়ে আনলেই তো হয়! তবে কায়াকটি এমন যে একবারে একজন চালাতে পারেন। ঠিক হলো প্রথম অর্ধেক পথ চালাবেন মুনিম, বাকিটা ইনতিয়াজ। শেষ পর্যন্ত ধলেশ্বরী হয়ে বুড়িগঙ্গা ধরে সদরঘাটে নিয়ে আসা হলো একে।
পরের লক্ষ্য সদরঘাট থেকে চাঁদপুর। এবার দুজন দুটি কায়াক নিয়েছেন। তবে মুনীম যেটা নিলেন, সেটা মূলত ঝরনা বা জলপ্রপাত এলাকায় চলাচলের উপযোগী। এটা এ ধরনের নদীতে কেমন কাজ করবে সেটা বলা মুশকিল।
বুড়িগঙ্গায় কায়াক নামাতেই তাদের মাথায় যেন বাজ পড়ল। এমনিতেই নদীর দুর্গন্ধময় পানি দেখা, এর গন্ধ নাকে আসা এক জিনিস। আর এই নদীতে কায়াকিং করা সেটা অন্য বিষয়। এর মধ্যে ছোট্ট এক ঢেউয়েই মুনীমের কায়াকে বেশ কতকটা পানি ঢুকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে দুর্গন্ধময় পানি তার শরীর ভরিয়ে দিল। সেখানেই অভিযানের সমাপ্তি হলো তার।
তবে ইনতিয়াজ থামলেন না। দুই দিনে চাঁদপুরে পৌঁছালেন। বলা চলে এটা তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল। যেটা গোটা পদ্মা নদী পাড়ি দিতে সাহায্য করল।
গোড়াতেই ঝামেলা
ঠিক করেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চাঁদপুর, পদ্মার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পাড়ি দেবেন। গুগলম্যাপে রুট প্লট করতেই আঁতকে উঠলেন ইনতিয়াজ, তিনশ কিলোমিটারেরও বেশি পথ! কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে, আর ফেরার উপায় নেই। প্রথম ধাক্কাটা এলো কায়াক ম্যানেজ করা নিয়ে। মাস দুয়েকের দৌড়ঝাঁপ, চিঠিপত্র, ফিটনেস ট্রেনিং আর সরঞ্জাম গোছাতে গিয়ে কেটে গেল চোখের পলকে। অবশেষে এই বছরে কোরবানির ঈদের ছুটিতেই শুরু হলো পদ্মা অভিযান।
সঙ্গী হলো দুই বন্ধু মুনীম আর জিসান। পরিকল্পনাটা এমন-ইনতিয়াজ নদীপথে কায়াকে, ওরা সড়কপথে কাছাকাছি থাকবে। প্রতি রাতে ক্যাম্পসাইটে দেখা হবে। কিন্তু শুরুতেই পরিকল্পনায় একটু বদল আনতে হলো। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় সীমান্তের উত্তেজনাময় জোনগুলো বাদ দিয়ে যাত্রা শুরু করবেন রাজশাহীর আই-বাঁধ থেকে। আর প্রথম দিনেই বুঝে গেলেন, এই পথ সহজ নয়, ‘রোদ এমন তপ্ত, যেন নদীর ওপর আগুনের পাতিল চড়ে আছে।’ দুইদিন পরই মুনীম আর জিসান হাল ছেড়ে শিলাইদহ থেকে ফিরে গেলেন।
মানুষের গল্প
তারপর শুরু হলো একার পথচলা। দিনে আট থেকে দশ ঘণ্টা কায়াক চালানো, রাতে নদীর ধারে যেদিকে নিরাপদ মনে হতো, সেখানেই আশ্রয়। খাবার বলতে শুকনো নুডলস, বাদাম আর চকলেট। মাঝেমধ্যে সৌভাগ্যক্রমে নদীপারের মানুষের আতিথেয়তায়, যা ছিল নিঃস্বার্থ, অকৃত্রিম, হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া।
ইনতিয়াজ বলেন, ‘সবচেয়ে মনে গেঁথে আছে মানিকগঞ্জের এক বিকেলের গল্প। তুমুল বৃষ্টি ঝরছিল। নদীর ধারে এক বাড়ি থেকে ডাক এলো। উঠোনে বসতেই থালাভর্তি খাবার নিয়ে হাজির হলেন এক চাচি। খিদে পেটে আমি নির্বাক, শুধু তাকিয়ে ছিলাম।’‘তোমার চেহারাতেই তো লেখা আছে, কবে খেয়েছ শেষ!’ হেসে বলেছিলেন তিনি।
খাওয়ার পর তার গল্প শুনে মন ভারী হয়ে উঠেছিল। পদ্মার ভাঙনে চারবার ভিটে হারিয়েছেন তিনি। স্বামী মৃত, ছেলে ইটভাটার শ্রমিক, গরু মারা গেছে বন্যায়। এখন অন্যের জমিতে আশ্রিত, এই বাড়িটাও হয়তো পরের বর্ষায় থাকবে না। তার চোখের জল, নদীর ধারে মাটিতে গড়িয়ে পড়া শব্দহীন কান্না, সবই তখন পদ্মার স্রোতের মতো বয়ে যাচ্ছিল ইনতিয়াজের ভেতর দিয়ে।
‘সেদিন কায়াক থামিয়ে অনেকক্ষণ চুপ করে বসেছিলাম পদ্মার জলে চোখ রেখে। ভেবে দেখছিলাম, নদী শুধু প্রকৃতি নয়, এক বিশাল মানবজীবনের গল্প।’ বলেন ইনতিয়াজ।
রাজশাহী থেকে এগোচ্ছিলেন চাঁদপুরের দিকে। পথে কখনো জেলেদের সঙ্গে মাছ ধরার নৌকায়, কখনো নদীপারের গানের আসরে, আবার কোনো রাতে মসজিদের বারান্দায় আশ্রয়।
‘পাবনার সুজানগরের মালিফা গ্রামের পাশে এক ড্রেজারে কাটানো চাঁদনী রাতটাকেই মনে হয় সবচেয়ে সুন্দর রাত। কিছু অচেনা মানুষ, কিন্তু হৃদয়ের টানে যেন বহু পুরোনো পরিচয়।’
পদ্মা জয়
প্রতিদিন বিকেল হলেই গুগলম্যাপে চেক করতেন পরের রাতের সম্ভাব্য আশ্রয়। অদ্ভুতভাবে প্রতিবারই কিছু না কিছু ব্যবস্থা হয়ে যেত। কখনো ক্লাবঘর, কখনো স্কুল, কখনো বা ড্রেজারের কেবিনে। মনে হতো, পদ্মা নিজেই যেন পথ তৈরি করে দিচ্ছে তার জন্য।
দশ দিনের এই অভিযাত্রায় পেরিয়েছেন দুটি বড় মোহনা যমুনা-পদ্মা আর পদ্মা-মেঘনা। প্রথমার্ধে ছিল রোদে পুড়ে যাওয়া শরীর, পরের অংশে বর্ষার উন্মত্ত পদ্মা, বৃষ্টি, ঝড়, ঢেউ-সব মিলে এক ভয়ংকর সুন্দর অভিজ্ঞতা। রাজশাহী থেকে চাঁদপুর পৌঁছাতে সময় লেগেছিল মোট দশ দিন (১০-১৯ জুন)। ৯ দিন কায়াকে, এক দিন বাধ্য হয়ে বিশ্রাম। আটটি রাত কাটিয়েছি আটটি ভিন্ন জায়গায়-কারো বাড়ি, মসজিদ, ক্লাবঘর, ড্রেজার, বাল্কহেড বা বাঁধের সাইটে।
‘শেষে যখন চাঁদপুরে পৌঁছালাম, মনে হলো আমি কেবল নদী পাড়ি দিইনি, একটা দেশ, একটা মানুষের জীবন, আর এক টুকরো আত্মাকে ছুঁয়ে এসেছি।’ বলেন ইনতিয়াজ।
ডাকাতিয়ার মোহনায়
পথে কোনো বিপদে পড়েছিলেন? জানতে চাইলাম। ‘না পড়লেও আশঙ্কা ছিল। শুনেছিলাম ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় ডাকাতি আর চাঁদাবাজি হয়। কিছুটা ভয়ে ভয়ে এগোচ্ছিলাম। নদীর একটা অংশে এসে আশঙ্কা বাড়ল। অনেক দূর পর্যন্ত বসতি নেই। দুই পাশে চরে কলাবাগান। হঠাৎ দেখলাম চরের পাশের একটা সরু খাল থেকে একটা ইঞ্জিনের নৌকা বেরিয়ে এসেছে। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তবে দ্রুত চলার চেষ্টা করলাম। ওটা আমার পেছন পেছন আসতে লাগল।’
‘চিন্তা করে দেখলাম, ওরা চাইলেই আমাকে ধরতে পারবে। তাই সাহস করে কায়াকটি নৌকার দিকে চালিয়ে দিলাম। কাছে যেতে দেখলাম জনাতিনেক লোক আছে নৌকায়। এদের একজনের পরনে গেঞ্জি, প্যান্ট। বুঝলাম সেই দলনেতা। সাহস করে বললাম, আমি একা কায়াকিং করতে বেরিয়েছি। পথে কোনো লোক না দেখায় কেমন অস্বস্তি লাগছিল। আপনাদের নৌকা দেখে এগিয়ে এলাম। কথা বলতে।’
লোকটি কিছুক্ষণ চেয়ে রইল। তারপর হেসে বলল, ‘ভয়ের কিছু নেই, সামনে সোজা এগিয়ে যান, সমস্যা হবে না। কেউ কিছু করবে না আপনাকে।’
‘বিদায় নিয়ে যেতে যেতে ভাবছিলাম, ওরা কী সত্যি সাধারণ জেলে ছিল, নাকি চাঁদাবাজ। আমি নিজে এগিয়ে যাওয়ায় হয়তো কিছু বলেনি। মানুষের মন খুব বিচিত্র।’
‘নদীমাতৃক দেশে জন্ম হয়েও আমরা নদীর স্বাদ ভুলে গেছি। পদ্মার নীলে ভেসে আমার মনে হয়েছে, নদীকে ভালোবাসা মানেই তাকে বাঁচানো। একবার যদি কেউ নদীকে ভালোবেসে ফেলে, তখন তাকে বাঁচাতে আইন লাগে না, লাগে কেবল টান।’ বললেন এই অভিযাত্রী।
এক্সপেডিশন তিস্তা-টেকনাফ!
এবার ইনতিয়াজ মাহমুদ পাড়ি দিতে যাচ্ছেন দেশের এ মাথা থেকে ও মাথা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১১ অক্টোবর নীলফামারীর তিস্তা ব্যারাজ থেকে পানিতে নামবেন, প্যাডেল মারতে মারতে পৌঁছে যাবেন টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ কিংবা সেন্ট মার্টিনের নীল তরঙ্গের মাঝে। এই অভিযান এক্সপেডিশন তিস্তা-টেকনাফ। বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত, প্রায় হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ কায়াকিং রোমাঞ্চ।
নদী, চর, মোহনা, খোলা সাগর, উত্তাল ঢেউ আর জ্বলন্ত রোদ সবকিছুকে ছুঁয়ে, বুকে ধারণ করে ৩০ দিনে শেষ করতে চান দেশের সম্ভবত সবচেয়ে দীর্ঘ নৌপথ। এবারও ঠিক পদ্মার মতো সোলো অভিযান। ২৪টি জেলা, ১০০+ উপজেলা, সারা দেশজুড়ে অজস্র নদী, অসংখ্য মানুষ আর হাজারো গল্প।
ইনতিয়াজ বললেন, এই অভিযান শুধু নিজের মনের স্বপ্ন নয়। প্রথমত, নিজের সীমা পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্ট হিসেবে কায়াকিংকে জনপ্রিয় করা। আর তৃতীয়ত, মানুষের কাছে পৌঁছে নদীকে সুস্থ ও দূষণমুক্ত রাখার বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
এই পথ, যেখানে প্রতিটি মোড়েই চর, বাঁধ, ছোট গ্রাম আর মাছ ধরা নৌকার সঙ্গে মিলিত মানুষ, তা কেবল শারীরিক নয়-মন ও অনুভূতির এক ভ্রমণ। প্রতিদিনের কায়াকিং, ঝড়ো নদী, হালকা বৃষ্টি আর জ্বলন্ত রোদ-সবকিছুর মাঝেই লুকানো থাকে নদীর গল্প, মানুষের হাসি, প্রকৃতির কঠোর রূপ।
রোমাঞ্চপ্রেমী এই তরুণের জন্য তাই শুভ কামনা। আশা করি, শেষে, যখন টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপে পৌঁছাবেন, ওপরে নীল আকাশ, চারপাশে সমুদ্রের বিস্তৃত নীল আর প্যাডেল থামিয়ে নদীর সঙ্গে চোখ মেলাবেন, তখন সেই মুহূর্তটা হবে নিখুঁত, প্রশান্ত, আর অশেষ আনন্দের এক রোমাঞ্চকর ফিনিশিং।