Logo
×

Follow Us

ফিচার

কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির চাবিকাঠি

Icon

মনিরা তাবাস্সুম

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৪০

কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির চাবিকাঠি

শরীর ও মনের টানা কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি দূর করে নতুন উদ্যম ও সজীবতা ফিরিয়ে আনতে যে জিনিসটির প্রয়োজন তা হলো ‘ছুটি’। কর্মক্ষেত্রে ছোট্ট এ শব্দটির যে কি গুরুত্ব, তা কেবল কর্মজীবীরাই বুঝবেন। ছুটি শুধু একটি বিরতি নয়, এটি মানসিক স্বাস্থ্য, সৃজনশীলতা ও সার্বিক কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমও।

মানুষের মস্তিষ্ক ক্রমাগত চাপের মধ্যে থাকলে সৃষ্টিশীলতা, মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায়। ইউরোপীয় এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতি মাসে নিয়মিত ছুটি নেন, তাদের কাজের দক্ষতা ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি আর মানসিক চাপের মাত্রা ৩০ শতাংশ কম। তবে ছুটি মানেই ঘুমানো নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘গুণগত ছুটি’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতিতে বেড়ানো, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, বই পড়া-এই ধরনের কাজগুলো মস্তিষ্ককে পুনরুজ্জীবিত করে।

ক্লান্তি থেকে মুক্তি : দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার ফলে পেশি ও মস্তিষ্কের ওপর চাপ পড়ে। এই চাপ একসময় মানসিক অবসাদ, শারীরিক ক্লান্তি ও কর্মক্ষেত্রে আগ্রহ হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কাজে ছুটি নেওয়ার ফলে এই ক্লান্তি দূর হয়। কাজের চাপ থেকে মুক্ত থাকার সময় পছন্দের কাজ করতে পারি, পরিবারকে সময় দিতে পারি অথবা নতুন জায়গায় ঘুরতে যেতে পারি। 

এই ধরনের বিরতি মানসিক চাপ কমিয়ে মনকে শান্ত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ৮-৯ ঘণ্টা কাজের পর সপ্তাহে অন্তত দুই দিন বিশ্রাম থাকা অত্যন্ত জরুরি। 

সৃজনশীলতা বৃদ্ধি : ছুটির মূল লক্ষ্য হলো মানসিক স্বাস্থ্যকে সতেজ করা। যখন কর্মক্ষেত্রের বাইরে থাকি, তখন আমাদের মন ভিন্নভাবে চিন্তা করার সুযোগ পায়। নতুন পরিবেশে নতুন কিছু দেখার সুযোগ হলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে। এটি সৃজনশীলতাকে উদ্দীপিত করে এবং কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসার পর নতুন ধারণা ও উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়।

কর্মক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি : ছুটি নেওয়ার পর একজন কর্মী নতুন উদ্যম নিয়ে কর্মস্থলে ফিরে আসেন। এই সতেজ মন ও শরীর কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে, যা স্বাভাবিকভাবেই কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কর্মী নিয়মিত ছুটি নেন, তাদের উৎপাদনশীলতা এবং কাজের মান তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। এটি প্রতিষ্ঠানকেও উপকৃত করে।

কর্মীর সন্তুষ্টি ও মনোবল বৃদ্ধি : কর্মীরা যখন মনে করেন যে প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং সুস্থতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, তখন প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুগত্যও বাড়ে। নিয়মিত ছুটির সুবিধা কর্মীর মনোবলকে চাঙ্গা রাখে এবং কাজের প্রতি তাদের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। এটি কর্মী ধরে রাখার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পরিশেষে, ছুটি কেবল একটি সুযোগ নয়, বরং কর্মজীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি ব্যক্তিগত সুস্থতা, মানসিক শান্তি ও পেশাগত সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ছুটি হোক কার্যকরী, নিয়মিত, উৎপাদনশীলতার চাবিকাঠি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫