Logo
×

Follow Us

ফিচার

সৌন্দর্যের নেশায় কোরিয়ান নারীর ৪০০ সার্জারি!

Icon

আলপনা আকতার শ্রাবণী

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৩২

সৌন্দর্যের নেশায় কোরিয়ান নারীর ৪০০ সার্জারি!

সৌন্দর্যের জন্য আমরা কত কিছুই না করি। চুলে নতুন রং লাগানো, পার্লারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানো কিংবা মুখের দাগ ঢাকতে নানা কসমেটিক ট্রিটমেন্ট। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার এক নারী সৌন্দর্যের এই দৌড়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। গিল লি-উন নামের এই নারী গত ১৫ বছরে করেছেন ৪০০টিরও বেশি প্লাস্টিক সার্জারি! খরচ করেছেন ৩০ কোটি কোরিয়ান ওনের বেশি, অর্থাৎ প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।

সম্প্রতি টিভিএন স্টোরির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইটস ওকে টু বি এ মার্শিয়ান’-এ উপস্থিত হয়ে তিনি নিজেই তার এই অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতার কথা জানান। ২০১০ সালে প্রথমবার প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছিলেন গিল। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওজন কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় চারপাশের মানুষ তার চেহারা নিয়ে কটাক্ষ করত। এসব কথায় মন ভেঙে যায় তার। এর সঙ্গে যোগ হয় এক প্রাক্তন প্রেমিকের কটু মন্তব্য, যিনি তার চেহারা নিয়ে ক্রমাগত সমালোচনা করতেন। সেই সময়ই গিলের মনে হয়, নিজেকে একেবারে বদলে ফেলতেই হবে।

গিল লি-উন বলেন, ‘আমার এক প্রেমিক ছিল, যে সব সময়ই আমার চেহারা নিয়ে খারাপ কথা বলত। এতে আমার আত্মবিশ্বাস পুরো ভেঙে যায়। আমি চেয়েছিলাম নিজেকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে গড়ে তুলতে। এখন আমি নিজের চেহারা নিয়ে গর্বিত, কোনো আফসোস নেই।’

এরপর শুরু হয় তার রূপান্তরের দীর্ঘ পথচলা। প্রথম সার্জারির পরই তিনি বুঝেছিলেন, ইচ্ছা করলে নিজেকে বদলানো যায়। তারপর একে একে যেন সার্জারি তার জীবনের অংশ হয়ে যায়। কপালে ফ্যাট গ্রাফটিং, কানের আকৃতি বদলানো, ডাবল আইলিড সার্জারি, চোখ ও নাকের সংশোধন, ঠোঁটের ফিলার, থুতনি ও মুখের কাঠামো ঠিক করা, এমনকি টোল ফেলা ও তুলে ফেলা পর্যন্ত করেছেন তিনি। কাঁধ ও গলায় ফিলার, বোটক্স, গলার বলিরেখা ভরাট, কলারবোন ফিলার, পুরো শরীরের লিপোসাকশন, স্টেম সেল ইনজেকশন-সব মিলিয়ে শরীরের প্রায় প্রতিটি অংশেই পরিবর্তনের ছোঁয়া এসেছে।

গিল বলেন, ‘যদি কসমেটিক সার্জারি আর ত্বকচর্চা ক্লিনিকের ট্রিটমেন্টগুলো একসঙ্গে ধরা হয়, তাহলে আমি প্রায় ৪০০টি প্রক্রিয়া করেছি। এটা ধীরে ধীরে জমেছে, এক দিনে নয়।’

তবে এত কিছু করার পরও তিনি থেমে যাননি। প্রতিদিনই যান ডার্মাটোলজি ও ওরিয়েন্টাল ক্লিনিকে-ত্বককে সতেজ রাখার জন্য। যদিও এক লিপোসাকশন ক্লিনিকের চিকিৎসক তাকে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘আর লোভ করবেন না, এখনকার অবস্থা বজায় রাখুন।’ তবুও নিজের যত্নে কোনো কমতি রাখেন না তিনি।

তার ভাষায়, ‘আমার চেহারার প্রতিটি অংশ এখন আমার ইচ্ছায় তৈরি। এটা আমাকে আত্মবিশ্বাস দেয়, যদিও অনেকের কাছে তা অদ্ভুত মনে হতে পারে।’ 

নিজেকে সুন্দর দেখাতে আমরা কতদূর যেতে পারি গিল যেন সেটাই জানান দিল। অথচ একসময় সৌন্দর্যের মানে ছিল প্রাকৃতিক রূপ। এখন সেখানে প্রযুক্তি আর অস্ত্রোপচারই হয়ে উঠেছে নতুন সৌন্দর্যের সংজ্ঞা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫