চুক্তি মেনে বিবাহবিচ্ছেদের পরও বিড়ালের দায়িত্ব নিল স্ত্রী!
আলপনা আকতার শ্রাবণী
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:১০
প্রতীকী ছবি
বিয়ের আগে বা পরে মজা করে আমরা অনেক সময় বলি, চুক্তিপত্রে লিখে দিই-বাসন মাজবে কে, ঘুম থেকে কে আগে উঠবে বা বিড়ালের খাবার কে দেবে! শুনতে হাস্যকর মনে হলেও তুরস্কে এক দম্পতি এমন এক বাস্তব চুক্তি করেছেন, যা শুনে হয়তো কেউ কেউ চমকে উঠবেন। কারণ তাদের বিবাহবিচ্ছেদ চুক্তিতে ‘বিড়াল ভরণ-পোষণ’-এর মতো শর্ত যুক্ত করা হয়েছে!
ইস্তাম্বুলের বাসিন্দা বুগ্রা বি. ও তার স্ত্রী এজগি বি. পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, গভীর অসংগতি এবং দাম্পত্যজীবনের ভিত্তি ভেঙে যাওয়া। দুজনের কেউই কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা ভরণ-পোষণ দাবি করেননি। কিন্তু তাদের বিবাহবিচ্ছেদের নথিতে একেবারে নতুন এক ধারা যোগ হয়েছে, দুটি বিড়ালের দায়িত্ব ও খরচ। অডিটিসেন্ট্রালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, বুগ্রা তাদের পোষা দুই বিড়ালের মালিকানা তার স্ত্রী এজগির কাছে হস্তান্তর করেছেন। তবে সেই সঙ্গে তিনি আগামী ১০ বছর পর্যন্ত প্রতি তিন মাসে ১০ হাজার লিরা (প্রায় ২৪০ ডলার) করে বিড়ালগুলোর যত্নের জন্য অর্থ দেবেন।
বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত নথিতে স্পষ্ট করে লেখা আছে, বুগ্রার মালিকানাধীন দুই বিড়াল এজগির কাছেই থাকবে। যতদিন বিড়ালগুলো এজগির সঙ্গে থাকবে এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত বুগ্রা প্রতি তিন মাসে ১০ হাজার লিরা করে বিড়ালের খরচ দেবেন। এতেই শেষ নয়, এই অর্থ প্রতিবছর তুরস্কের পরিসংখ্যান সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত ভোক্তা মূল্যসূচক অনুপাতে বাড়ানো হবে।
তুরস্কে এই ঘটনাকে অনেকে বলছেন, নতুন ধরনের ভরণ-পোষণ। কেউ কেউ আবার মজার ছলে বলছেন, মানুষের পর বিড়ালও এখন আদালতের সুরক্ষা পাচ্ছে! তবে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি নিছক হাসির বিষয় নয়, বরং ভবিষ্যতে পোষা প্রাণী থাকা দম্পতিদের বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হতে পারে। কারণ অনেক দেশেই এখন পোষা প্রাণীদের পরিবারের সদস্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাই সম্পর্ক ভাঙলে তাদের দেখাশোনার দায়িত্বও এক ধরনের নৈতিক ও আর্থিক চুক্তির অংশ হয়ে উঠছে।
