প্রতীকী ছবি
হাসপাতালের নার্স মানবতার এক অনন্য প্রতীক। দিন-রাত, রোদ-বৃষ্টি বা উৎসব-সব ভুলে তারা রোগীর সেবা করে যান। রাতের ডিউটিতে তারা অনেক সময় নিজের ঘুম, খাওয়া এমনকি স্বাস্থ্যেরও তোয়াক্কা করেন না-শুধু যেন অসুস্থ মানুষটি একটু স্বস্তি পায়। তবে মাঝে মাঝে এর বিপরীত কিছুও যে হতে পারে, সেটারই প্রমাণ দিল জার্মানির এক নার্স।
ঘটনাটি জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ভ্যুরজেলেনের এক হাসপাতালের। সেখানে কর্মরত ৪৪ বছর বয়সী এক পুরুষ নার্স নিজের রাতের কাজ সহজ করতে গোপনে রোগীদের ইনজেকশন দিতেন-ঘুমের ওষুধ ও ব্যথানাশক মিশ্রিত প্রাণঘাতী ইনজেকশন। লক্ষ্য ছিল একটাই, যাতে রোগীরা ঘুমিয়ে থাকেন আর তার কাজ কমে যায়।
প্রসিকিউটরদের ভাষায়, এই নার্স রোগীদের জীবন-মৃত্যু নিয়ে খেলেছেন। তদন্তে দেখা যায়, তিনি অধিকাংশ বয়স্ক রোগীদের অতিরিক্ত মাত্রায় মরফিন ও মিডাজোলাম প্রয়োগ করতেন। যে ওষুধ যুক্তরাষ্ট্রে কখনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতেও ব্যবহৃত হয়।
২০২০ সাল থেকে হাসপাতালটিতে কর্মরত এই নার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের দায়িত্ব পালনে উদাসীন ছিলেন। রোগীরা অসুস্থ হয়ে সাহায্য চাইলে বিরক্ত হতেন, কোনো রকম আগ্রহ বা সহানুভূতি দেখাতেন না। আদালতে তিনি অবশ্য বলেন, ‘আমি কেবল রোগীদের ঘুম পাড়াতে চেয়েছিলাম। কারণ ঘুমই তো সেরা ওষুধ।’ তার দাবি, তিনি জানতেন না, এই ওষুধগুলো এত প্রাণঘাতী হবে।
সম্প্রতি জার্মানির আখেন শহরের একটি আদালত ওই নার্সকে কমপক্ষে ১০ জন রোগী হত্যার ও আরো ২৭ জনকে হত্যাচেষ্টা করার অভিযোগে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছে, যেখানে প্যারোলের (শর্তসাপেক্ষে মুক্তি) কোনো সুযোগ নেই। তদন্তকারীরা এখনো আরো কিছু সন্দেহজনক মৃত্যুর খোঁজ নিচ্ছেন, যেগুলোতেও তার হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।সূত্র : অডিটিসেন্ট্রাল
