বসনে বিজয়

বছর ঘুরে আবার এলো ডিসেম্বর। বাঙালির অনন্য অহঙ্কারের মাস। বিজয়ের উদযাপন এখন কেবল গল্প, গান, কবিতায় নয়, বরং পোশাকেও তা দৃশ্যমান। বাংলাদেশের পতাকার রং লাল-সবুজ যেন প্রতিটি বাঙালির প্রাণের রং হয়ে উঠেছে, সেই পতাকা মোটিফ এসেছে আমাদের পোশাকেও। এমন পোশাককে বিজয়ের প্রতীকও বলা চলে। 

দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও তৈরি করেছে লাল-সবুজের পোশাক। বিজয়ের এই মাসে ফ্যাশন হাউসগুলো একটু ভিন্ন রূপের আয়োজন করে থাকে। ক্রেতারাও ভিড় করছে এই ফ্যাশন হাউসগুলোতে, বৈচিত্র্যপূর্ণ ডিজাইন আর লাল সবুজ রং দেখে তরুণ দেশপ্রেমিকরা কিছু না কিছু কিনছেই। 

ফ্যাশন হাউসগুলো বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশীয় কাপড় দিয়ে তৈরি করেছে শাড়ি, থ্রি পিস, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও শিশুদের পোশাক। 

কাপড় হিসেবে সুতি প্রাধান্য পেয়েছে। তবে পাশাপাশি খাদি, তাঁত, টাঙ্গাইলের তাঁত, মোটা কটন, এনডি- এসব কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ও পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পোশাকে। শীতকালকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে নানা ধরনের শাল। এসব শালেও সবুজ ও লাল রং প্রাধান্য পেয়েছে। পাশাপাশি থাকছে চেতনাভিত্তিক নানা মোটিভ। অর্থাৎ ফ্যাশন ডিজাইনাররা সব পোশাকের মাধ্যমে আমাদের অহঙ্কার, বিজয় দিবসের চেতনাকে প্রকাশের চেষ্টা করেছেন।

পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে নিজস্ব উইভিংয়ে করা ডিজাইন, টাই অ্যান্ড ডাই, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, অ্যাপলিক, এমব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন মাধ্যম। কারোর পোশাকে উঠে এসেছে বাংলাদেশের মানচিত্র, কারোর নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে জাতীয় পতাকা, কোনোটায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নানা ছবি, লেখা, কবিতার লাইন ও জাতীয় ফুল। 

অর্থাৎ বিজয় উৎসবের বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করে ডিজাইন করা হয়েছে বিজয় দিবসের পোশাকগুলো।

ফ্যাশন হাউস রং বাংলাদেশের তৌসিক আহমেদ বলেন, দিবসভিত্তিক এসব আয়োজন করতে খুবই ভালো লাগে। মনে হয়, দেশের সব শ্রেণির মানুষের কাছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বার্তা। এ ধরনের কাজ আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করে। রং হিসেবে লাল-সবুজ প্রাধান্য পেয়েছে। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সব বয়সী মানুষের দিকে লক্ষ রেখে পোশাক তৈরি করা হয়েছে, যেন সবাই বিজয় দিবসে নিজেদের রাঙিয়ে নিতে পারেন স্বদেশপ্রেমের চেতনায়।

ফ্যাশন হাউসগুলোর বিজয়ের আয়োজন 

রঙ বাংলাদেশ: দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাওয়ার প্রত্যাশায় ‘আমার বাংলাদেশ’ সাব-ব্র্যান্ডের অধীনে তৈরি হয়েছে সব সামগ্রী। কেবল বড়দের নয়, প্রতিটি উপলক্ষে ছোটদের পোশাককে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয় বলেই তাদর সংগ্রহও হয় বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। রয়েছে পরিবারের সবার জন্য একই ধরনের ম্যাচিং পোশাক। সুতরাং এবার মা-বাবা, মা-মেয়ে, বাবা-ছেলে, এমনকি পরিবারের সবাই একই থিমের পোশাক পরে উদ্যাপন করতে পারবে এবারের বিজয় উৎসব।

মূল রং হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সাদা, লাল, পতাকার সবুজ ও টিয়া। আর পোশাক অলংকরণে সহযোগী রং হিসেবে আছে সবুজের নানান শেড, সাদা, টিয়া, গোল্ডেন হলুদ। পোশাকের নকশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানান ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহারে। এর মধ্যে রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, হাতের কাজ।

কে-ক্রাফট: পোশাকের সঙ্গে বিজয়ের স্মারক হিসেবে ফ্যাশন হাউস কে-ক্রাফট উপহার সামগ্রীরও আয়োজন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে জেনুইন লেদারের ওয়ালেট, কার্ড হোল্ডার এবং সুতি কাপড়ের ব্যানডেনা। জেনুইন লেদারের প্রতিটি প্রোডাক্টের সঙ্গে থাকছে একটি করে পাউচ। 

এছাড়া থাকছে শাড়ি, ফতুয়া, সালোয়ার-কামিজ।

অঞ্জন’স: ফ্যাশন জগতে অঞ্জন’স এক পরিচিত নাম। এবার বিজয়ের মাসে অঞ্জন’স আয়োজন করছে বিশাল ফ্যাশন। ছোটদের জন্যও অঞ্জন’স দিচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক।  

নবরূপা: নবরূপা সেজেছে লাল-সবুজের রঙ্গে। নবরূপার প্রত্যেক শো-রুমে পাবেন শাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না ইত্যাদি। বিজয়ের মাসে প্রায় সব প্রদর্শিত পোশাকই বিজয়ের রঙে রাঙানো। 

বাংলার মেলা: বাংলার মেলা বিজয় দিবস উপলক্ষে এনেছে দেশীয় কাপড়ের তৈরি শাড়ি, ফতুয়া, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস ইত্যাদি। প্রতিটি পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিজয়ের ছাপ। 

নিপুণ: বিজয় দিবসে ফ্যাশন হাউস নিপুণ সেজেছে লাল-সবুজের বিজয় রঙে। পাঞ্জাবি, শাড়ি, কুর্তি, সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে ছোটদের পোশাকেও রয়েছে বিজয়ের রং।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //