সুস্থ থাকতে তাই চি

প্রবীণদের জন্য চমৎকার একটি স্বাস্থ্যকর যোগব্যায়াম বা ধ্যান ‘তাই চি’; যা শরীরকে নমনীয় ও প্রাণবন্ত করে। বর্তমানে অনেকেই তাই চি অনুশীলন করেন। তবে তাই চি অনুশীলনের জন্য সহনশীলতা, নমনীয়তা এবং একাগ্রতা প্রয়োজন। এটি এমন এক ধরনের যোগব্যায়াম যা সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ুর কার্যকর উপায়।

তাই চির ইতিহাস: তাই চির একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে। এর উৎপত্তি প্রাচীন ভারত ও যোগব্যায়াম থেকে। পরে চীনারা যোগের অবস্থানগুলোকে সহজ মার্শাল আর্টের ফর্মে পরিবর্তন করেছে। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ শিল্প হিসেবে পরিচিত এবং হার্ড মার্শাল আর্টের মতোযেমন ক্যারাতে। তাই চির ধাপগুলো যোগ অবস্থানের মতোই। যোগব্যায়ামের মতো তাই চি শ্বাস এবং নড়াচড়ার ঘনত্বকে একত্রিত করে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে উৎসাহিত করে।

তাওবাদী সন্ন্যাসী চ্যাং সাং ফেং ত্রয়োদশ শতাব্দীতে তাই চির ভিত্তি গড়ে তোলেন। তবে এর জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চীনা পরিবারগুলো এতে তাদের নিজস্ব ধারণাকে যুক্ত করেন। আগে তাই চির প্রায় ১০০টি ভিন্ন সংস্করণ ছিল; যার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল ইয়াং এবং উ। ধীরে ধীরে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাই চি আরও শান্ত এবং মনোনিবেশকারী শারীরিক ব্যায়ামে পরিণত হয়।

গতিতে ধ্যান: তাই চিকে প্রায়ই ‘গতিতে ধ্যান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ‘তাই’ একটি চীনা শব্দ যার অর্থ সর্বোচ্চ। আর ‘চি’ শক্তি, শ্বাস ও আত্মার প্রতিনিধিত্ব করে। চীনা ওষুধে বিশ্বাস করা হয় যে, কারও মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য তখনই উন্নত হয় যখন ‘চি’ সারা শরীরে সমানভাবে প্রবাহিত হয়। প্রবীণদের জন্য তাই চির সহজ ধাপগুলো নিজের সচেতনতা বাড়ায়, শক্তির প্রবাহ সাবলীল করে।

প্রবীণদের জন্য তাই চির উপকারিতা: স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত প্রবীণদের জন্য তাই চির প্রভাব মূল্যায়ন করেন। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় তাই চির ওপর একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। তাতে অংশ নিয়েছিলেন ৮০ বছর বয়সী প্রবীণদের একটি দল। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি ফলাফল প্রকাশ করে। ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, ৬ মাসের মধ্যে অংশগ্রহণকারী প্রবীণদের ভারসাম্য, শক্তির মাত্রা, নমনীয়তা ও ঘুমের মানের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।

মায়ো ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে তাই চির উপকারিতার কথা তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনে নিয়মিত তাই চি অনুশীলনকারীদের জন্য উল্লেখ করা উপকারিতাগুলো হলো...

  • দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার  লক্ষণ থেকে মুক্তি দেয়।
  • প্রতিদিনের শারীরিক কার্যকারিতা উন্নত করে, যা স্বাধীন জীবনযাপনে উৎসাহী করে।
  • আর্থ্রাইটিসের ব্যথা, জয়েন্ট শক্ত হওয়া এবং উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
  • হাড়ের ক্ষয় কমাতে স্বাস্থ্যকর হাড়ের ঘনত্বের স্তর বজায় রাখে।
  • সামগ্রিক ফিটনেস উন্নত করে।

তাই চি যে কোনো জায়গায় অনুশীলন করা যেতে পারে। এটি অতিরিক্ত অনুশীলনেও ঝুঁকি কম এবং বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। তবে যে কোনো নতুন ব্যায়াম প্রথমবার শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম। 

সূত্র: লাভ টু নো 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //