বরইয়ের কথা শুনলেই জিবে পানি আসে। ছবি: সংগৃহীত
কিছু খাবারের কথা শুনলেই জিবে পানি আসে, তেমনই একটা ফল হলো বরই বা কুল। এটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ আর পাকলে লাল হয়, ফলটি প্রায় সবারই খুব প্রিয়। এটি এমন একটি ফল যেটা কাঁচা হোক বা পাকা, যে কোনো অবস্থাতেই খাওয়ার জন্য উপযুক্ত। এমনকি শুকনো বরইও খাওয়া যায়। বরই দিয়ে বিভিন্ন ধরনের আচারও তৈরি করা যায়।
প্রতি গ্রাম বরইয়ে ৭৩ শতাংশ জলীয় অংশ, ১০৪ কিলো ক্যালরি থাকে। আরও থাকে ২৩ গ্রাম শর্করা, ২.৯ গ্রাম প্রোটিন, ১১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এবার বরইয়ের উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক।
- পানি ও আঁশের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বরইয়ে ক্যালরি অনেক কম থাকে। এতে প্রায় ১০ শতাংশ আঁশ ও এর ৮০ শতাংশই হচ্ছে জলীয় অংশ। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে যেকোনো ধরনের বরই খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া এতে চর্বির পরিমাণ একেবারে নেই বললেই চলে।
- বরইয়ে অন্তত ৫০ শতাংশ শর্করা থাকে আঁশ হিসেবে। এতে উপস্থিত আঁশ বা ডায়টারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এতে প্রাকৃতিক পেকটিন থাকার কারণেও কোষ্ঠ পরিষ্কার করায় এর ভূমিকা আছে।
- অনিদ্রার চিকিৎসায় বরই খুবই উপকারী। আদিকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশের আয়ুর্বেদ ও চাইনিজ ভেষজ চিকিৎসায় বরই ইনসমনিয়ার ওষুধ হিসেবে ধরা হয়। অবসাদ ও দুশ্চিন্তা দূর করতেও বরই উপকারী।
- বরইয়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এটি ইনফেকশনজনিত রোগ যেমন টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঘা, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া দূর করে।
- নিয়মিত বরই খেলে এটি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। লিভারের ক্ষতিকর উপাদান নিষ্কাশন করতেও বরই বেশ কার্যকর।
- বরইয়ে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রনসহ আরও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়, যা হাড় শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
- বরইয়ে খাবার পরিপাকে সহায়ক এনজাইমের উপস্থিতি রয়েছে। তাই ভরপেটে বরই খেলে তা খাদ্য হজমে সহায়তা করে।
- তবে মনে রাখতে হবে, বরই নানাভাবে উপকারী হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের পাকা বরই না খাওয়াই ভালো। কারণ এর শর্করা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাছাড়া কাঁচা বরই বেশি খেলে পেটব্যথা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।