ডিটক্স ডায়েট কী

দৈনন্দিন জীবনে একই ধরনের কাজ করতে করতে যেমন অবসাদ আসে, তেমনই শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোও প্রতিনিয়ত কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে ওঠে। তাদের সেই কাজ থেকে খানিকটা বিশ্রাম দিতেই পুষ্টিবিদরা ডিটক্স ডায়েটের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ডিটক্স ডায়েটে মূলত উপবাস ও পানীয় গ্রহণের ওপর নির্ভর থাকতে হয়। শরীরে যে সব টক্সিন মল, মূত্র ও ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে না, সেগুলো এই ডায়েটিংয়ের সাহায্যে সহজেই নিষ্কাশন করা সম্ভব। বৃষ্টির মৌসুমে নিত্যদিন পেটের সমস্যা কিংবা গ্যাসের সমস্যা লেগেই রয়েছে। এই সব সমস্যা সরিয়ে শরীর সারিয়ে তুলতে ‘ডিটক্স ডায়েট’ খুব ভালো কাজ করে।

ডিটক্স ডায়েট শুরু করার আগে কফি, সিগারেট, রিফাইন্ড সুগার, স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এই সময়ে কোনো ভারী খাবার চলবে না। এতে শরীরের ভেতর জমে থাকা দূষণ ফ্লুইড আকারে বেরিয়ে যাবে এবং ডিটক্স ডায়েট সহজপাচ্য হওয়ায় লিভার ফাংশনও কিছুটা বিশ্রাম পাবে। এতে পরবর্তীকালে হজমের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।

গাজর, বিট, সেলেরি, টমেটো, লাউয়ের মতো সবজির রস এবং ডালের স্যুপ বা যে কোনো ক্লিয়ার স্যুপ খেতে পারেন ডিটক্স চলাকালীন। তবে কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে তৈরি গাঢ় স্যুপ খাওয়া যাবে না। কার্বোহাইড্রেট ও দুগ্ধজাতীয় খাবার থেকেও দূরে থাকতে হবে। তবে একটানা তিন দিনের বেশি এই ডায়েট করা যাবে না। মাছ, মাংস, চিকেন, ডিম, মিষ্টি, চা, কফি, সফট ড্রিংক, জাঙ্ক ফুড খাওয়া যাবে না।

ডায়েটের সময় যতটা পারেন আঁশ-জাতীয় খাবার খেতে হবে। খেতে পারেন ব্রাউন রাইস। সবজির মধ্যে থাকবে বিট, গাজর, মুলা, বাঁধাকপি, ব্রোকলি। এই সময় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খান। দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পান করতে হবে। 

উপকারিতা

ভারী খাবার না খাওয়ার ফলে লিভার কিছুটা হলেও বিশ্রাম পায়। এতে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। শরীরে এনার্জি লেভেল বেড়ে যায়, মনোসংযোগ বাড়ে। শরীরের ময়লা ঘাম, ইউরিনের মাধ্যমে ক্রমাগত বেরিয়ে যায়। এর ফলে ত্বক হয়ে ওঠে মসৃণ। ডিটক্স ডায়েট শুধু ডিটক্সিফায়েড করে তাই নয়, শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে দেয়। এতে শরীর হালকা হয়ে ওঠে। তরল খাদ্য প্রবেশ করায় রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়। হালকা খাবার খাওয়ায় সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। ঘুমের সমস্যা থাকলে এই ডায়েট করতে পারেন। এই ডায়েট গভীর ঘুম হতে সাহায্য করে।

সতর্কতা

তবে ডিটক্স ডায়েট বছরে গর্ভবতী নারী, শিশু, ক্যানসার, টিবি এবং বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্তদের না করাই ভালো। খুবই কম ক্যালরির ডায়েট হওয়ায় নি¤œ রক্তচাপ, লো ব্লাড সুগার, পেশিতে ব্যথা, ঝিমুনি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব দেখা দিলেও দিতে পারে। তাই ডায়েট শুরু করার আগে পুষ্টিবিদের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করে নিতে হবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh