চলতি ইউরো ফুটবল কাপের ১৭তম আসরের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডস ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রিয়া। এই জয়ে ইউরোর ডি’গ্রুপ থেকে সেরা দল হয়েই শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিল তারা। ৩ ম্যাচ থেকে ২ জয় ও ১ হারে অস্ট্রিয়ার পয়েন্ট ৬।

গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুন) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ইউরো ফুটবল কাপ ২০২৪-এ জার্মানির বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৬ষ্ঠ মিনিটেই এগিয়ে যায় অস্ট্রিয়া। অস্ট্রিয়ার আক্রমন থেকে বাঁচতে গিয়ে উল্টো নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন ডাচ ফরোয়ার্ড ডনিয়েল মালেন।

বিরতির পর ৪৭তম মিনিটে, জাভি সিমন্সের পাস থেকে কোডি গাকপো গোল করলে ম্যাচে সমতা ফেরে নেদারল্যান্ডস। ঠিক ১২ মিনিট পরেই রোমালো স্মিডের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে অস্ট্রিয়া। ফ্লোরিয়াল গ্রিলিশের পাস থেকে গোল করেন তিনি। -যমুনা টিভি

নেদারল্যান্ডস দ্বিতীয়বার ম্যাচে ফেরে ৭৫ মিনিটে। বক্সের ভেতর থেকে মেম্ফিস ডিপাইয়ের দারুণ ফিনিশিংয়ে ২-২ গোলে ম্যাচে ফেরে নেদারল্যান্ডস।

এরপর ৮০তম মিনিটে ক্রিস্টফ বামগার্টনারের দারুণ পাস থেকে অস্ট্রিয়াকে আবার এগিয়ে দেন মার্সেল সাবিৎজার। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি রোনাল্ড কোমানের দল। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম জয়ে পেল অস্ট্রিয়া।

এদিকে টুর্নামেন্টে অন্যতম ফেভারিট হিসেবেই ইউরোর এবারের আসর শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। যেখানে প্রথম ম্যাচেই জয়, কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ডেনমার্ক রুখে দেয় তাঁদের। এদিকে শেষ ম্যাচেও স্লোভেনিয়ার কাছে গোলশুন্য ড্র। কিন্তু তাতে কি, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে ইংল্যান্ড।

তবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে গেলেও স্বস্তির খবর নেই ইংল্যান্ড শিবিরে। প্রথম দু’ম্যাচেই গ্যারেথ সাউথ গেটের দলের আক্রমণভাগের পারফরম্যান্স নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন, যার ব্যাতিক্রম হলো না স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেও।

গ্রুপ পর্বের প্রথম দু'টি ম্যাচে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ ইংল্যান্ড, এমন পরিস্থিতিতে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জিয় দিয়ে জবাব দিতে মুখিয়ে ছিলেন কেইনরা। কিন্তু সেটা আর হল কই।

অপরদিকে স্লোভেনিয়া 'সি' গ্রুপ থেকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তিন ম্যাচের তিনটিতেই ড্র করা স্লোভেনিয়ার সামনেও থাকছে তৃতীয় দল হিসেবে নক আউট পর্বে যাওয়ার। তবে তার আগে বেশ কিছু হিসেবের মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাদেরকে।

এদিন ম্যাচ শুরু থেকেই দুই দলের লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যায়। ম্যাচের শুরু থেকেই জমে উঠতে থাকে দুই দলের মাঠের লড়াই। মুহুর্মুহু আক্রমণের পসরা সাজাতে থাকে দুই দলই।

যেখানে ম্যাচের ১৯ মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় ইংল্যান্ড কিন্তু সেই সুযোগ থেকে গোল করলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু এরপর আরও কিছু সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি ইংলিশরা। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে হ্যারি কেইন দারুণ একটা সুযোগ পেয়েছিলেন কিন্তু বলে পা লাগাতে ব্যার্থ হলে আরও একবার এগিয়ে যাওয়া হয়না ইংল্যান্ডের। 

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে প্রথম হাফে বেজায় আধিপত্য দেখায় কেইন-বেলিংহামরা। বল দখল কিংবা গোলপোস্টে সজট সব জায়গায় এগিয়ে ছিল ইংরেজরা। কিন্তু প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি ইংল্যান্ড।

স্লোভেনিয়াও কম যায়নি বেশ কয়েকবার আক্রমণে যায় দেশটি। কিন্ত জোড়াল আক্রমণ করতে না পারায় বারবার ব্যার্থ হতে থাকে স্লোভেনিয়ার আক্রমণ ভাগ।

বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকলেও প্রথম হাফে ইংল্যান্ডের গোলপোস্ট চারটি শট নেয় স্লোভেনিয়া যারমধ্যে অন টার্গেটে ছিল একটি। শেষ পর্যন্ত কোনো দল গোল করতে না পারায় ০-০ তে শেষ হয় প্রথমার্ধ। 

এরপর দ্বিতীয়ার্ধে দুইদলই খেলা শুরু করে সমানতালে। যেখানে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে দুই দল। ফলে ম্যাচের উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে।

অন্যদিকে ম্যাচের বয়স যত বাড়তে থাকে ইংল্যান্ডের আক্রমণ যেন ততই বেড়ে যায়। কিন্তু সফলতা মিলছিল না কোনোভাবেই।

এরপর ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিট পর্যন্ত দুই দলই বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। শেষ পর্যন্ত গোলশুন্য ড্র নিয়েই মাঠে ছাড়ে দুইদল।