বায়ার্নের জার্সিতে হ্যারি কেইন। ছবি : এএফপি
‘‘অনেকেই বলে, হারের জন্য আমার জন্ম’’—নিজের হতভাগ্য ক্যারিয়ারকে এভাবেই ব্যাখ্যা করেছিলেন হ্যারি কেইন। অবশেষে সেই গল্পে এলো মোড়। ১৫ বছরের অপেক্ষা শেষে মাথায় উঠল প্রথম শিরোপার মুকুট—চ্যাম্পিয়ন হলেন সময়ের সেরা গোলস্কোরার।
সময়ের অন্যতম সেরা গোলস্কোরার হয়েও যার ঝুলিতে এতদিন ছিল না কোনো শিরোপা, সেই কেইন এখন বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন। ফ্রাইবুর্গের সঙ্গে বায়ার লেভারকুসেনের ২-২ গোলে ড্র করাটাই নিশ্চিত করে দেয়—বুন্দেসলিগার এবারের শিরোপা যাচ্ছে বায়ার্ন মিউনিখের ঘরেই।
৩৪ ম্যাচের লিগে ৩২ ম্যাচ শেষে বায়ার্নের পয়েন্ট ৭৬, লেভারকুসেনের ৬৮। ফলে আগাম দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই নিশ্চিত হয় হ্যারি কেইনের কাঙ্ক্ষিত সেই প্রথম শিরোপা।
২০১০ সালে টটেনহামের হয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন কেইন। এরপর একে একে হেরেছেন ছয়টি ফাইনাল, একবার লিগে রানার্সআপ। ইংল্যান্ডের হয়েও ইউরো ফাইনাল হার—সব মিলিয়ে ফুটবলের সবচেয়ে দুর্ভাগা নামগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্য শেষমেশ ফিরল মিউনিখে এসে।
গত মৌসুমেই বায়ার্নে নাম লিখিয়েছিলেন কেইন, যখন ঠিক সেই মৌসুমেই টানা ১১ বারের শিরোপা ধরে রাখা দলটি হোঁচট খেয়েছিল লেভারকুসেনের কাছে। সেই হতাশা এবার পূর্ণতা পেল উল্টো গল্পে। এবার লেভারকুসেনই বায়ার্নের শিরোপা উৎসবে পথ তৈরি করে দিল।
বায়ার্নের নতুন কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানিও পেলেন নিজের প্রথম মৌসুমেই শিরোপার স্বাদ। ইংলিশ ফুটবলে এক সময় কেইনের বিপক্ষে খেলা এই কোচ নিজেও আবেগ লুকাতে পারেননি, ‘‘ওর প্রথম শিরোপা দেখে ভালো লাগছে। এটা ওর প্রাপ্য।’’
এই মৌসুমে ২৯ ম্যাচে ২৪ গোল করা হ্যারি কেইনের পারফরম্যান্সও ছিল শিরোপার পেছনে বড় চালিকাশক্তি। দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন, প্রমাণ করেছেন—তিনি শুধু গোল স্কোরারই নন, একজন লিডারও।
এটা কি শুধুই এক শিরোপার গল্প? নাকি কেইনের ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায়ের সূচনা? ফুটবলবিশ্ব সেই উত্তর খুঁজবে আগামী মৌসুমগুলোতে। তবে আপাতত এটুকু নিশ্চিত—‘হার’ শব্দটা যার সঙ্গী ছিল, সেই হ্যারি কেইনের নামের পাশে এখন থেকে লেখা থাকবে ‘চ্যাম্পিয়ন’ও।