
রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে শনিবার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সকালে সাধারণ সভার পর দুপুর দুইটা থেকে শুরু হবে ভোটের লড়াই। একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি, চারজন সহ-সভাপতি এবং ১৫ জন সদস্যকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন ১৩৯ জন কাউন্সিলর। মোট ২১টি পদের জন্য ৪৯ প্রার্থী লড়াই করবেন।
সম্মিলিত পরিষদের ২১ জনের প্যানেলে চতুর্থবারের মতো সভাপতি হতে নির্বাচন করছেন কাজী মো. সালাহউদ্দিন। তবে সমন্বয় পরিষদের ১৯ জনের প্যানেলে কোনো সভাপতি প্রার্থী নেই। অন্যদিকে সালাহউদ্দিনের আধিপত্য দমনে লড়ছেন শফিকুল ইসলাম মানিক। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের এই কোচ প্যানেলবিহীন নির্বাচনে একাই অংশ নিচ্ছেন। সভাপতি পদে বাদল রায় মনোনয়ন কিনলেও নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় নির্বাচনে তিনিও থাকছেন।
বাফুফে নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মেজবাহ উদ্দীন। তার নেতৃত্বে কমিশনার হিসেবে রয়েছেন মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী ও মোতাহার হোসেইন সাজু। এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। শুক্রবার বিকেলে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন শেষবারের মতো নির্বাচনের ভেন্যু পরিদর্শন করেছেন।
সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দীন বলেছেন, ‘আমরা গতকাল ও আজ বাফুফে ভবন ও সোনারগাঁও হোটেলের ভেন্যু পর্যবেক্ষণ করেছি। যেখানে যা নির্দেশনা দেয়ার দরকার দিয়েছি। প্রস্তুতি সম্পন্ন বলতে পারেন। দুপুর ২টা থেকে ভোটগ্রহণ হবে। সকল ডেলিগেট ভোট দিতে আসবেন সুস্থ শরীরে। ভোট গণনা শরু হবে ভোট দেয়ার পর।’
‘শুরু থেকে গণনা পর্যন্ত সকলে ধৈর্য্যসহকারে থাকবেন। ভোট দেবেন, ফল জানবেন। নানাজন নানা কথা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব জায়গায়। আমাদের জীবনের অংশ এটা। বাস্তব সত্য যেটা সেটা তুলে ধরতে হবে। এছাড়া ভোটের দিন নিরাপত্তা যেটা দরকার সেটা করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর ওপর দায়িত্ব থাকবে। যেটা প্রয়োজন তারা করবেন’, যোগ করেন তিনি।
চতুর্থবার সভাপতি পদে নির্বাচন করতে ৩৬ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সালাহউদ্দিন। তার প্যানেলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে থাকছেন আবদুস সালাম মুর্শেদী। সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন কাজী নাবিল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম বাবু, আতাউর রহমান ভূঁইয়া (মানিক) ও ইমরুল হাসান।
সম্মিলিত পরিষদ প্যানেলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন- হারুনুর রশিদ, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, মাহফুজা আক্তার কিরণ, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইলিয়াছ হোসেন, বিজন বড়ুয়া, ইকবাল হোসেন, অমিত খান শুভ্র, মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, মো. জাকির হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ রিয়াজুল করিম, কামরুল হাসান হিলটন, ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ, আসাদুজ্জামান মিঠু ও নুরুল ইসলাম (নুরু)।
বাফুফে নির্বাচনে ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সভাপতি প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিক। অন্যদিকে সমন্বয় পরিষদ থেকে ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিষদে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে লড়ছেন শেখ মো. আসলাম। সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন মহিউদ্দিন মহি, শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান ও আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান।
সমন্বয় পরিষদের ১৫ জন সদস্য হলেন- আমিনুল হক মামুন, আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, টিপু সুলতান, মনজুরুল আহসান, মহিদুর রহমান মিরাজ, মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ সাব্বির হোসেন, আমের খান, আরিফ হোসেন মুন, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, ফজলুর রহমান বাবুল, সাইফুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, শাকিল মাহমুদ চৌধুরী ও সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল।
নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেও ব্যালটে বাদল রায়ের নাম থাকা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দীন বলেন, ‘তার স্ত্রী এসে প্রত্যাহার করেছেন। কয়েকদিন পর সংবাদ সম্মেলনও করেছেন (বাদল রায়)। তবে আইনগতভাবে এখনো বৈধ প্রার্থী তিনি। যখন যা আসবে বিধি অনুযায়ী হবে।’
স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য কিছু প্রার্থীর দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের সঙ্গে কথা বলেছি কাল। তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট হয়েছেন।’
প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ভোটের দিন কেন্দ্রে কারো হাতে মোবাইল ফোন থাকতে পারবে না। শুধু অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া। ভোটগ্রহণ যাতে তাড়াতাড়ি হয় সে জন্য আটটি বুথে তা গ্রহণ করা হবে। কভিড সংক্রান্ত বিধিও সবাই যাতে মেনে চলেন সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে।’