সালাহউদ্দিন প্যানেলের ইশতেহার বাস্তবায়ন কি সম্ভব?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২০, ১২:১৪

কাজী মো. সালাউদ্দিন
২০০৮ সালে প্রথমবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন কাজী মো. সালাহউদ্দিন। এরপর ২০১২ ও ২০১৬ সালে আরো দুইবার দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার মসনদে বসার সুযোগ হয়েছিল খেলোয়াড়ি জীবনে অনন্য সাধারণ কৃতিত্বের অধিকারী এই সংগঠকের।
কিন্তু খেলোয়াড় সালাহউদ্দিনের সাথে সংগঠক সালাহউদ্দিনে ফারাক যে কতটা বিস্তর সেটা এখন বুঝতে পারছেন ফুটবলপ্রেমী মানুষ।
২০০৮ সালের আগে খেলার জন্য আন্দোলন করেন খেলোয়াড়রা। এই একটি জায়গায়ই কিছুটা হলেও সফলতার পরিচয় দিয়েছেন সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিটি। পেশাদার লিগ নিয়মিত মাঠে গড়ানোই ছিল প্রথম মেয়াদে তার সাফল্য। আর গেল তিনটি নির্বাচনে দেয়া ইশতেহারের বেশিরভাগই বাস্তবায়ন করতে পারেনি তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা বর্তমান কমিটি।
আজ ৩ অক্টোবরের নির্বাচনকে সামনে রেখে আরো ৩৬টি নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করেছেন। আগের মেয়াদের ইশতেহারগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় নতুন ইশতেহার যে তেমন একটা আস্থা জাগাতে পারছে না ভোটারদের মধ্যে, সেটি এখন অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেছে। কারণ প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ, তৃতীয় বিভাগ ও পাইওনিয়ার লিগ মিলিয়ে গেল ১২ বছরে ৪৮টি লিগ মাঠে গড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু মাঠে গড়িয়েছিল মাত্র ১৮টি লিগ। ৩০টি লিগই দেখেনি আলোর মুখ! কাজ হয়নি কোনো প্রতিশ্রুতিই।
তবে এবার কিছুটা বিলম্বে হলেও বাস্তবতায় এসেছেন কাজী সালাহউদ্দিন। র্যাংকিংয়ে ১৫০ রাখার টার্গেট ইশতেহারে উল্লেখ করেছেন। বিশ্বকাপ স্বপ্ন থেকে সরে এসেছেন। ১৯৭ তে পৌঁছার পর এখন ১৮৭ তে রয়েছে বাংলাদেশ দল। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, র্যাংকিং এ উন্নতিটা হয়তো বাস্তবায়ন করতে পারবে নতুন কমিটি, বাকিটা আকাশ কুসুম কল্পনা।
তবে এবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনার মধ্যে নতুন করে আলোচনার জন্ম হয়েছে অর্থকড়ির বিষয়টি। ভোট কিনতে অবৈধ অর্থের লেনদেনের কথা একরকম পরিষ্কারভাবেই শোনা যাচ্ছে। সে কারণে গোয়েন্দা নজরে চলে এসেছে বহুল আলোচিত এই নির্বাচন। অর্থ দিয়ে ভোট আদায়ের এই পথ বন্ধ করতে বাফুফে নির্বাচনের ওপর কড়া নজরদারি রাখবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এবারের নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে দুই প্যানেলের ৪৬ প্রার্থী একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এক যুগ ক্ষমতার মসনদে থেকেও খেলোয়াড়দের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি জিম করতে পারেননি। ফিফা ও এএফসি থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা পেলেও মাত্র ৫০ লাখ টাকা দিয়ে একটি জিম ক্রয় করতে পারেনি। নতুন ইশতেহারে আবারো একটি জিম বানানোর কথা বলা হয়েছে।
তবে এতকিছুর পরও সালাহউদ্দিনের দাবি, গত নির্বাচনের ইশতেহারে দেয়া প্রতিশ্রুতির ৭০/৭৫ শতাংশ কাজ করতে পেরেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন গতবারের দেয়া নিজের প্যানেলের ইশতেহার নিয়েও!
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘২০১৬ সালের ইশতেহারের ৭০/৭৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। ওই ইশতেহার আমার দেয়া ছিল না। ওই সময় কনফিউশন চলছিল। যখন ইশতেহার দেয়া হয়, ওই মিটিংয়ে কিন্তু আমি ছিলাম না। আমি অফিস থেকে যে ইশতেহার দিয়েছি, সেখানে অনেক কিছু যোগ করা হয়েছিল। সেটা দিয়েছিলেন তরফদার রুহুল আমিন। ২৫ শতাংশ কাজ না হওয়ায় আমি খুবই দুঃখিত। তবে এখানে যা বলা হয়েছে, প্রায় তিন মাস রিসার্চ করেই আপনাদের দেয়া হয়েছে।’