Logo
×

Follow Us

ফুটবল

অনন্য তাঁরা তিন

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২২, ১৪:৫৩

অনন্য তাঁরা তিন

খেলোয়াড় হিসেবে হোক বা কোচের ভূমিকায়, একবার ফুটবল বিশ্বকাপ জেতাই স্বপ্নময় ব্যাপার। চিরকালের জন্য ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটা খোদাই করে নেওয়া। সেখানে ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এমন তিনজন আছেন, যারা খেলোয়াড়-কোচ, দুই ভূমিকাতেই জিতেছেন বিশ্বকাপ। সেই অনন্য তিন তারা হলেন ব্রাজিল কিংবদন্তি মারিও জাগালো, জার্মান ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ও ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশম।

তিনজনের একজন হয়েও মারিও জাগালো বিশেষ একটা কারণে একটু আলাদা। তিনি খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন ২ বার, ১৯৫৮ ও ১৯৬২ বিশ্বকাপ। এই জাগালোই ১৯৭০ বিশ্বকাপ জিতেছেন কোচ হিসেবে। মানে ব্রাজিলের প্রথম ৩টি বিশ্বকাপ জয়েরই অন্যতম নায়ক ছিলেন মারিও জাগালো। এ ছাড়া কোচ হিসেবে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে রানার্সআপ করেছিলেন জাগালো।

বাকি দুজন, বেকেনবাওয়ার ও দেশম খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে একবার বিশ্বকাপ জিতেছেন। বেকেনবাওয়ার খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৭৪ ও কোচ হিসেবে জিতেছেন ১৯৯০ বিশ্বকাপ। দেশম খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৯৮ ও কোচ হিসেবে জিতেছেন ২০১৮ বিশ্বকাপ। ইতিহাসে ফ্রান্স যে এ পর্যন্ত দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে, দুটিরই অন্যতম বড় নায়ক দিদিয়ের দেশম।

আরও একটি ব্যাপার বেকেনবাওয়ার ও দেশমকে একই ব্র্যাকেটবন্দি করেছে। খেলোয়াড় হিসেবে জেতা বিশ্বকাপে দুজনই ছিলেন নিজ নিজ দলের অধিনায়ক। মানে বেকেনবাওয়ার ও দেশম বিশ্বকাপ জিতেছেন অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে। মারিও জাগালো বিখ্যাত হলুদ জার্সি পরে দুবার বিশ্বকাপ জিতলেও অধিনায়কত্বের আর্মব্র্যান্ড তার বাহুতে ছিল না একবারও।

দিদিয়ের দেশম।

তিন কিংবদন্তিই এখনো বেঁচে আছেন। তবে ৯১ বছর বয়সী জাগালো বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুজ্ব। বেকেনবাওয়ারেরও বয়স হয়ে গেছে ৭৭। তবে শারীরিক দিক থেকে অনেকটাই শক্তিশালী। কে জানে, হয়তো কাতারে তিনজনকেই দেখা যেতে পারে একফ্রেমে। কারণ ৫৪ বছর বয়সী দেশম শুধু কাতারে থাকবেনই না, রীতিমতো ডাগআউট কাঁপাবেন। এবারও যে ফ্রান্সের কোচের দায়িত্ব তার কাঁধেই।

কোচের দায়িত্বটা দেশমকে হাতছানি দিচ্ছে জাগালো-বেকেনবাওয়ারকে পেছনে ফেলে অন্য এক কীর্তি গড়ার। যে কীর্তি ইতিহাসে কারো নেই। সেটা কি? খেলোয়াড় হিসেবে একবার ও কোচ হিসেবে দুবার বিশ্বকাপ জেতা। কাতার বিশ্বকাপে যে ৩২ জন কোচ ডাগআউট মাতাবেন, তাদের মধ্যে একমাত্র দেশমই বিশ্বকাপ জিতেছেন। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স এবারও বিশ্বকাপ জিতলে দেশম লিখে ফেলবেন ইতিহাসের ওই আলাদা অধ্যায়। ফুটবলীয় সামর্থ্য বিচারে দেশমের এই কীর্তিটা গড়ার সুযোগ আছে ভালো মতোই। দল হিসেবে ফ্রান্স এবারও যে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট। 

এই যে একই বন্ধনীর তিন তারা- তাদের বয়সই বলে দিচ্ছে তাঁরা ভিন্ন প্রজন্মের খেলোয়াড়। ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে জাগালো খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানেন ১৯৬৪-তে। পশ্চিম জার্মানির হয়ে বেকেনবাওয়ারের জাতীয় দলে অভিষেক তারও এক বছর পর, ১৯৬৫-তে। এই বেকেনবাওয়ার ১৯৭৭ সালে যখন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার চুকিয়ে ফেলেন, দিদিয়ের দেশম তখন ৯ বছরের বালক। পেশাদার ফুটবলের রঙিন দুনিয়া সম্পর্কে দেশমের হয়তো কোনো ধারণাই নেই। কাজেই তাদের কারো সঙ্গে কারোর খেলার প্রশ্নই আসে না। 

মারিও জাগালো।

একসঙ্গে মাঠে খেলতে না পারলেও বয়সের ব্যবধান ঘুচিয়ে একবার কিন্তু ঠিকই ৯১ বছর বয়সী জাগালোর সঙ্গে ৫৪ বছরের দেশমের মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়েছিল ফুটবল ম্যাচে! ১৯৯৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে! স্তাদে ডি ফ্রান্স স্টেডিয়ামের সেই ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দেশমের ফ্রান্স ও জাগালোর ব্রাজিল। অধিনায়কত্বের আর্মব্র্যান্ড পরে দেশম ছিলেন মাঠে, ব্রাজিলের কোচ হিসেবে জাগালো ছিলেন ডাগআউটে। দুজনের সেই সাক্ষাতে জয় হয়েছিল তারুণ্যের। ৩৭ বছরের ছোট দেশমের কাছে হার হয়েছিল জাগালোর। ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল দেশমের ফ্রান্স। সেদিনের সেই জয়ের সুবাদেই জাগালো ও বেকেনবাওয়ারের সঙ্গে ইতিহাসের একই পাতায় জায়গা পেয়েছেন দেশম।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫