
তিউনিশিয়ার ফুটবল দল। ছবি: সংগৃহীত
করিম বেনজামা, এনগলে কন্তে, পল পগবারা ইনজুরির কারণে আসর শুরুর আগেই ছিটকে গেছেন। সে হিসেবে ফ্রান্স প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ জয়ে সবার আগে সুপার সিক্সটিনে খেলা নিশ্চিত করেছে।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পরের আসরের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার যে রেওয়াজ গত তিন আসর ধরে চলেছে এবার সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে ফরাসিরা। ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়ন ইতালি ২০১০ সালের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল। এরপর একে একে ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন স্পেন, ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি ২০১৮ সাল থেকে বিদায় নিয়েছিল।
গ্রুপের শেষ ম্যাচে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামার আগেই প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ফ্রান্সের। তাই দলে অনেক বদল করেছিলেন ফরাসি কোচ। তারই খেসারত দিতে হল ফ্রান্সকে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে হেরে গেল তারা।
কিন্তু এই জয়ের পরেও শেষ ষোলয় যেতে পারল না তিউনিশিয়া। এদিন তিউনিসিয়ার প্রথম শর্ত ছিল জিততে হবে। ভাগ্যের বাকিটা নির্ভর করছিল গ্রুপের অন্য ম্যাচের ওপর। সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জিতে যাওয়ায় শেষ ষোলতে ওঠার সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় তিউনিসিয়ার। চ্যাম্পিয়নদের হারিয়েও তিউনিসিয়ার খেলোয়াড়দের চোখে পানি। আগে থেকেই বিশ্বকাপের শেষ ষোল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় এই ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চকে দেখে নিতে চেয়েছিলেন ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম। তাই প্রথম একাদশে নয়টি পরিবর্তন করেছিলেন তিনি। রাফায়েল ভারানে ও চুয়ামেনি ছাড়া বাকি দল বদলে দিয়েছিলেন তিনি। ফ্রান্সের ‘বি’ দলকে সামনে পেয়ে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল শুরু করে তিউনিশিয়া। কারণ, না জিতলে পরের রাউন্ডে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না তাদের। ফ্রান্সের ফুটবলাররা শুরুতে সময় নিচ্ছিলেন। মাঝেমধ্যে বোঝাপড়ায় সমস্যা হচ্ছিল। তার সুযোগ নিয়ে বার বার ফ্রান্সের বক্সে ঢুকে পড়েছিল তিউনিশিয়া।
কিন্তু প্রথমার্ধে গোলের মুখ খুলতে পারেনি তারা। কয়েকটি শট গোলের খুব কাছ দিয়ে বেরিয়ে যায়। গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দু’দল। দ্বিতীয়ার্ধে গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তিউনিশিয়া। তার ফলও মেলে। ৫৮ মিনিটের মাথায় তিউনিশিয়ার হয়ে গোল করেন ওয়াহাবি খাজরি। মাঝমাঠে বল পান তিনি। বেশ খানিকটা দৌড়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। এগিয়ে যায় তিউনিশিয়া। গোল খাওয়ার পরে কিছুটা নড়ে বসে ফ্রান্স। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে নাটক জমে ওঠে। ফ্রিকিক থেকে ফিরতি বলে গোল করে সমতা ফেরান আঁতোয়ান গ্রিজম্যান। উৎসবে মাতেন ফ্রান্সের ফুটবলাররা। কিন্তু পরে ভার প্রযুক্তিতে দেখা যায় অফসাইডে ছিলেন গ্রিজম্যান। তাই তাঁর গোল বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতে যায় তিউনিশিয়া। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলটিকে হারিয়েও গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয় আফ্রিকার দলটিকে।