জিতলেই ইকুয়েডরের সামনে দ্বিতীয় রাউন্ডের হাতছানি

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২২, ১৪:০১

কাতার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ইকুয়েডর দল। ছবি: ফিফা
প্রথম ম্যাচে কাতারকে ২-০ গোলে পরাজিত করে দারুণভাবে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে ইকুয়েডর। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামছে তারা। অথচ কাতার বিশ্বকাপে বাঁশি বাজার সপ্তাহ খানেক আগেও নিশ্চিত ছিল না ইকুয়েডরের অংশগ্রহণ। তাদের বিপক্ষে অযোগ্য খেলোয়াড় খেলানোর অভিযোগ ছিল চিলির।
অনেক নাটক হলেও শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিশ্বমঞ্চে পা রাখে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের দেশটি। এমনকি এবারের বিশ্বকাপ শুরুই হয়েছে তাদের জয় দিয়ে। উদ্বোধনী ম্যাচে তারা হারায় স্বাগতিক কাতারকে। স্বাগতিক হিসেবে খেলতে নেমে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ হারা একমাত্র দল কাতার। ইকুয়েডর তো গর্ব করতেই পারে! এবার যাদের ইউরোপের বড় শক্তি নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হওয়ার পালা।
আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আজ ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়। লুই ফন গালের নেদারল্যান্ডসও আসর শুরু করেছে জয় দিয়ে। সেনেগালকে হারায় তারা। নেদারল্যান্ডস-ইকুয়েডর ম্যাচটা তাই টেবিলে দুই দলের একে অপরের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার। যে দল জিতবে তারা শুধু শীর্ষেই উঠবে না, সেমিফাইনালের পথেও এগিয়ে যাবে একধাপ।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও ইকুয়েডর দুই দলই জয় পেয়েছে সমান ২-০ ব্যবধানে। সেনেগালকে হারাতে অবশ্য বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাদের। তবে ফুটবল ঐতিহ্যে নেদারল্যান্ডস যোজন যোজন এগিয়ে ইকুয়েডরের চেয়ে। ফিফা র্যাংকিংয়ে নেদারল্যান্ডসের অবস্থান ৮। ইকুয়েডরের অবস্থান সেখানে ৪৪। যদিও কখনো বিশ্বকাপ জেতা হয়নি ডাচদের। তবে তাদের ফুটবলে যে নান্দনিকতার ছোঁয়া, সেটা সমাদৃত বিশ্বব্যাপী। কখনো শিরোপা ঘরে তুলতে না পারলেও তিনবার রানার্সআপ হয়েছে তারা। এ নিয়ে খেলছে একাদশ বিশ্বকাপ।
অন্যদিকে এ নিয়ে চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলছে ইকুয়েডর। বিশ্ব মঞ্চে তাদের সেরা সাফল্য ২০০৬ সালে জার্মানি আসরে শেষ ষোলোতে খেলা। ডাচটা তাই ফেভারিট থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এটাও ঠিক আগের ম্যাচের চেয়ে নিজেদের উন্নতি দেখাতে নেদারল্যান্ডসকে। সেনেগালের বিপক্ষে গোল পেতে ৮৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল তাদের।
ডাচ অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইকের কণ্ঠে তাই নিজেদের খেলায় উন্নতির তাগিদ, ‘প্রথম ম্যাচে আমরা জিতেছি সেনেগালের বিপক্ষে। কিন্তু এটাও জানি যে, আমরা আরও ভালো করতে পারি এবং অবশ্যই তা করতে হবে।’ এমনিতে ডাচরা বিশ্বকাপে এসেছে দারুণ ছন্দ নিয়ে। বাছাই পর্বে নিজেদের গ্রুপে শীর্ষে থেকে সরাসরি মূল পর্বে ওঠে তারা। গত বছর অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে হেরেছিল শেষ ষোলোয়। এরপর টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত তারা।
২০১০ বিশ্বকাপে রানার্সআপ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে তৃতীয় হলেও ২০১৮ বিশ্বকাপে ছিল না তারা। এবার তাই ভালো কিছু করতে মুখিয়ে দলটি। ফন গালও তৃতীয় মেয়াদে দলটির দায়িত্ব নিয়েছেন সেই স্বপ্ন নিয়েই। ইকুয়েডর ম্যাচের আগে যার জন্য স্বস্তির মেমফিস ডিপাইয়ের পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা।
সেনেগালের বিপক্ষে শেষ ৩০ মিনিট খেলেছেনও তিনি। ৪২টি আন্তর্জাতিক গোলের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বার্সেলোনার এই ফরোয়ার্ডকে তাই শুরুর একাদশে মাঠে নামতে দেখা যেতে পারে। নেদারল্যান্ডস র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকলেও বড় স্বপ্ন দেখছে ইকুয়েডরও। এক্ষেত্রে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সৌদি আরবের জয়কে তারা প্রেরণা হিসেবে নিচ্ছে।
দলটির গোলকিপার হারনান গালিনদেস বলেছেন, ‘এটা কঠিন ম্যাচ হবে। তবে আমি আশা করি, নেদারল্যান্ডস আমাদের সমীহ করবে। আমার মনে হয় আর্জেন্টিনার হার এই বিশ্বকাপের শেষ চমক হবে না।’
ইকুয়েডর দলে অস্বস্তি ছিল কাতারের বিপক্ষে দুই গোল করা এনার ভ্যালেন্সিয়াকে নিয়ে। দলকে জেতানো ম্যাচে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন তিনি। তবে সেটা খুব গুরুতর নয় বলেই খবর। ফলে অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ডকে শুরুর একাদশেই দেখা যেতে পারে। নেদারল্যান্ডস ও ইকুয়েডর এখন পর্যন্ত দু’বার মুখোমুখি হয়েছি। দুটিই ছিল প্রীতি ম্যাচ। ২০০৬ সালে প্রথম সাক্ষাতে ১-০তে জিতেছিল ডাচরা। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। আজকের ম্যাচটি জমজমাট হবে এমনটাই প্রত্যাশা।