চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে ৬ ম্যাচে ১০ গোল করে শীর্ষে রয়েছেন রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির স্যামুয়েল বোয়েটাং। ৪ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে রীতিমতো গোল-উৎসব করেছেন ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড। ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে রহমতগঞ্জের ৬-১ গোলের জয়ে করেছেন ডবল হ্যাটট্রিক।   

বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে ‘ডবল হ্যাটট্রিক’ বিরল কোনো ঘটনা নয়। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে প্রথম ডবল হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন মেজর হাফিজউদ্দিন। ফায়ার সার্ভিসের বিপক্ষে ঢাকা মোহামেডানের ৬-০ গোলের জয়ে সব গোল এসেছিল মেজর হাফিজের কাছ থেকে। একই মৌসুমে ঢাকা আবাহনীর হয়ে দিলকুশার বিপক্ষে একাই ৭ গোল করেন কাজী সালাহউদ্দিন, যা এখনো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ঘরোয়া লিগে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত গোলের রেকর্ড। ১৯৮৪ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ১৫-০ গোলের ব্যবধানে হারায় দিলকুশাকে। ম্যাচে জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড আরিফ করেন ৬ গোল। ২০০৭ সালে পেশাদার লিগের প্রথম আসরেই মোহামেডানের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড মোয়াচুকু পল ম্যাকজেমস ডবল হ্যাটট্রিক করেন।

ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোল করার বিশ্বরেকর্ড রয়েছে পেসাং টিসেরিংয়ের দখলে। তিনি ভুটান ‘এ’ ডিভিশন লিগে ২০০৭ সালে ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের হয়ে ১৭ গোল করার অবিশ্বাস্য কা- ঘটান। আরআইএইচএস ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে তিনি দ্বিতীয়ার্ধে করেন ৯ গোল। ম্যাচে তার দল জিতেছিল ২০-০ গোলের ব্যবধানে। 

ইরাকের শোখান নুরালিদিন সালিহি আল হিলালের হয়ে ২০২২-২৩ মৌসুমের সৌদি নারী প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে শামা ক্লাবের বিপক্ষে ১৫ বার জালের দেখা পান। নুরালিদিন আন্তর্জাতিক ফুটবল ছাড়াও হ্যান্ডবল আর ফুটসালে অংশ নিয়েছেন ইরাক জাতীয় দলের পক্ষে।

ইউরোপের সর্বোচ্চ ফুটবল লিগে এক ম্যাচে ব্যক্তিগত ৭ গোলের রেকর্ড রয়েছে। ইংল্যান্ডের প্রথম বিভাগ লিগে ১৯৩৫ সালে টেড ড্রেক আর্সেনালের হয়ে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে করেছিলেন ৭ গোল। স্প্যানিশ লা লিগায় অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের অগাস্টিন আরানা ১৯৩১ সালে বার্সেলোনার বিপক্ষে এবং ১৯৫২ সালে বার্সেলোনার লাজলো কুবালা ৭ গোল করেন স্পোর্টিং গিহনের বিপক্ষে। ইতালীয় সিরি ‘এ’ ফুটবলে ডবল হ্যাটট্রিক রয়েছে সিলভিও পিওলা আর অমর সিভোরির। ১৯৭৭ সালে জার্মান বুন্দেস লিগার একমাত্র ডবল হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়েন এফসি কোলনের দিয়েতের মুলার। ত্রিশের দশকে ফ্রেঞ্চ লিগে এক ম্যাচে সাতটি করে গোলের দেখা পান আন্দ্রে আবেগলেন আর জন নিকোলাস। ইউরোপের বিগ ফাইভের বাইরে ১৯০৫ সালে হাঙ্গেরি লিগে বুদাপেস্টের জেনো কারেলি একাই ১১ গোল করেছিলেন অ্যাথলেটিকা এফসির বিপক্ষে।  

ল্যাটিনের দুই পরাশক্তি আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের সর্বোচ্চ লিগে নজর দেওয়া যাক। আর্জেন্টিনা প্রিমিয়ার লিগে বেনফিল্ডের হয়ে ১৯৭৪ সালে পুয়ের্তো কমার্শিয়ালের বিপক্ষে ৭ গোল হাঁকান হুয়ান তাভারনা। ব্রাজিলীয় সিরি ‘এ’ ফুটবলে একমাত্র ডবল হ্যাট্রিকের মালিক অ্যাডমুন্ডু। সেলেকাও জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড ভাস্কো দা গামার হয়ে ১৯৯৭ সালে ছয় গোল করেছিলেন ইউনিয়াও সাও হোয়াও ক্লাবের বিপক্ষে, যা ব্রাজিলীয় রেকর্ড।