
স্প্রিন্ট রানী শিরিন। ছবি: সংগৃহীত
৪৮তম জাতীয় অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটার নারীদের স্প্রিন্টে নৌবাহিনীর শিরিন আক্তারকে হারাতে পারেনি কেউ। ১৬তম বারের মতো অর্জন করেছেন বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী হওয়ার গৌরব। শিরিন ১২.০১ সেকেন্ডে ১০০ মিটার পাড়ি দেওয়ার পথে হারিয়েছেন নৌবাহিনীরই সুমাইয়া দেওয়ান (১২.১৫ সেকেন্ড) এবং বিকেএসপির আজমি খাতুনকে (১২.৫০ সেকেন্ড)।
শুধু ১০০ মিটার নয়, ২০০ মিটার দৌড় আর ৪*১০০ মিটার রিলেতেও পারঙ্গম শিরিন। ২০২৪ সালে ২০০ মিটার দৌড় শেষ করেন ২৪.৬৮ সময়ে, যা জাতীয় রেকর্ড। বিগত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে চারটি স্বর্ণ জিতেছিলেন শিরিন। সাতক্ষীরার শিরিন আক্তারের বয়স ৩০ বছর। বাবা আব্দুল মজিদ আর মা আঙ্গুরা বেগম। সাতক্ষীরার কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে থাকাবস্থায়ই দৌড়ঝাঁপের প্রতি ঝোঁক। নিজেই জানালেন, পড়াশোনায় খুব বেশি ভালো ছিলেন না। কিন্তু দ্রুত দৌড়াতে পারতেন। ছেলেদের সঙ্গে দৌড়ে প্রথম হয়ে স্কুলে সবার নজর কেড়েছিলেন। স্যারদের পরামর্শে বিকেএসপিতে ট্রায়াল দিয়ে টিকে যান। ২০০৭ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন ক্লাস সেভেনে। শুরুতেই কোনো এক প্রতিযোগিতায় ৪০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হন। দুর্দান্ত দৌড়বিদ হওয়ায় এইচএসসি পর্যন্ত বিকেএসপিতে কোনো বেতন দিতে হয়নি তাকে। ২০০৭-১২ পর্যন্ত শিরিন বালিকা আর কিশোরী বিভাগে ছিলেন দ্রুততম মানবী। ২০১৪ সালে জাতীয় অ্যাথলেটিকসে ১০০ মিটারে সোনা জয়ের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পান দেশের ‘দ্রুততম মানবী’ হিসেবে।
২০১৪ সালে এইচএসসি পাস করা শিরিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন। খেলাধুলার সুবাদেই চাকরি করেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে। ২০০৯ সালে যুব এশিয়ান গেমস দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক ঘটে শিরিনের। পরবর্তী সময়ে কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান বিচ গেমস, এসএ গেমস এবং রিও অলিম্পিক গেমসে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
শিরিন বলেন, ‘আমাদের সমাজে নারীদের জন্য খেলাধুলাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া সহজ নয়। আমাকেও অনেক বাধা পেরিয়ে আসতে হয়েছে। তবে এখন আমাকে দেখে নাকি অনেক মেয়ে সাহস পায়। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।’