ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে আর্জেন্টিনা

কলম্বিয়ান রেফারি আন্দ্রেস রোজাস শেষ বাঁশি বাজানোর আগে থেকেই ব্রাজিল সমর্থকদের মুখ ভার। জয় দেখতে এসে ফিরতে হয়েছে বড় হারের হতাশা নিয়ে। সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা ছিল যাদের কাছে, সেই রাফিনিয়া-ভিনিসিয়াসরা বলার মতো কিছুই করতে পারেননি।

দল হিসেবে কতটা পরিণত আর্জেন্টিনা। সুপার ক্লাসিকোতে তার প্রমাণটা বেশ ভালোভাবেই দিয়েছেন স্কালোনি শিষ্যরা। মেসি-মার্তিনেজের মতো তারকা ফুটবলারদের ছাড়াই ব্রাজিলকে রীতিমত ধরাশায়ী করে ছেড়েছে আলবিসেলেস্তারা। ৪-১ গোলের জয় নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের প্রথম দল হিসেবে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পেল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।

অবশ্য মাঠে নামার আগেই জাপান, নিউজিল্যান্ড ও ইরানের পর বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার। বাছাইপর্বের অন্য ম্যাচে উরুগুয়েকে বলিভিয়া হারাতে না পারায় বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলা নিশ্চিত হয়ে যায় তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।

২০ বছর পর লিওনেল মেসি ও নেইমারের কোনো একজনকে ছাড়া সুপার ক্লাসিকোতে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। দুই দলের দুই সেরা তারকা না থাকলেও এই ম্যাচ নিয়ে আগ্রহের একটুও কমতি ছিল না। এর মধ্যে রাফিনিয়ার আর্জেন্টিনাকে গোল করে হারানোর ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও জমজমাট করে তোলে।

কথার লড়াই জমিয়ে তুললে মাঠে তার প্রতিফল ঘটাতে পারেনি সেলেসাওরা। পুরো ম্যাচে প্রায় ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১২টি শট নিয়ে সাতটি লক্ষ্যে রাখতে পারে আর্জেন্টিনা। সেখানে ব্রাজিল নিতে পারে মোটে তিনটি শট, ওই একটিই ছিল লক্ষ্যে।

ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে ব্রাজিলকে বড় ধাক্কা দেয় হুলিয়ান আলভারেজ। থিয়াগো আলমাদার বাড়ানো বল বক্সে পেয়ে নিচু শটে জালে পাঠান এই আর্জেন্টাইন তারকা। শুরুর সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে সফরকারী ব্রাজিল। ১২তম মিনিটে ঠান্ডা মাথায় গোল দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। বলের যোগান দেন নাহুয়েল মলিনা।

অবশ্য ম্যাচের ৩০ মিনিট পেরুবার আগেই এক গোল শোধ করে ব্রাজিল। স্কোরশিটে নাম তোলেন ম্যাথিয়াস কুনহা। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোর ভুলে বল পেয়ে যান কুনহা, সেখান থেকে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং।

ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে ফের ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। তবে, আলমাদার জোরালো শট অসাধারণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক বেন্তো। সেই আক্ষেপ মেটাতে মাত্র এক মিনিট লাগে আর্জেন্টিনার।

৩৭তম মিনিটে এনজোর দারুণ ক্রস বক্সে পেয়ে চমৎকার ভলিতে গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ম্যাক অ্যালিস্টার। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-১। ব্রাজিলকে পাহাড়সম চাপে রেখেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

প্রথমার্ধের হতাশা ভুলে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াতে তিন পরিবর্তন আনে ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র। রদ্রিগো, মুরিলো ও জোয়েলিংটনের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন এন্দ্রিক, ওর্তিজ ও গোমেজ। তাতে অবশ্য খুব একটা লাভ হয়নি। ৬৩তম মিনিটে এন্দ্রিককে ফাউল করে বসেন ওতামেন্দি, ফ্রি-কিক পায় ব্রাজিল। জোরালো শট নিলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রাফিনহা।

উল্টো ৭১তম মিনিটে ব্রাজিলের হতাশা বাড়ান জিওভানি সিমেওনে। নিচু শটে ব্যবধান বাড়ানোর পাশাপাশি জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক গোল পেয়ে যান নাপোলিতে খেলা এই ফুটবলার। শেষদিকে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেনি ব্রাজিল। ৪-১ গোলের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh