প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা পিএসসির

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ২২:৪৪

বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন। ছবি: সংগৃহীত
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) কারও বিরুদ্ধে যদি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা প্রতারণা বা অন্য কোনো অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে, তাহলে তাঁদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে পিএসসি।
আজ সোমবার (৮ জুলাই) প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি জানায়, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল-২৪ গতকাল রবিবার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অধীন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার 'উপসহকারী প্রকৌশলী' পদের নিয়োগ পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এবং অন্যান্য নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রচার করেছে সে বিষয়ে বিপিএসসি'র দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
গত এক যুগে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে চ্যানেল-২৪ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবতা হলো, গত ১২ বছরে বিপিএসসি-তে অনুষ্ঠিত বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষা সম্পর্কে কোনো মহল থেকে কখনোই কোনো ধরনের অভিযোগ বা অনুযোগ ছিল না বিধায় এটি প্রমাণিত যে, ঐ সকল পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময়ে অনুষ্ঠিত বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে নতুন করে কোনোরূপ অভিযোগ উত্থাপনের অবকাশ নেই। প্রতিবেদনে গত ১২ বছরে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত এ সব পরীক্ষার বিষয়ে বিরূপ প্রচার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিপিএসসির ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি জানায়, গত ৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ শুক্রবার অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার "উপসহকারী প্রকৌশলী" পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ঐদিন পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে প্রতিবেদকের হোয়াটসঅ্যাপে আসে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে প্রতিটি বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষায় ন্যূনতম ৬ সেট প্রশ্নপত্র এবং নন-ক্যাডার পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪ সেট প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়। কোন্ সেটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তা নির্ধারণ করতে পরীক্ষা শুরুর ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পূর্বে লটারি করা হয়। বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষার ক্ষেত্রে লটারির সময় দেশের প্রথিতযশা দুইজন নাগরিক, কমিশনের চেয়ারম্যান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সদস্যসহ কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ উপস্থিত থাকেন। একইভাবে, নন-ক্যাডার পরীক্ষার ক্ষেত্রে কমিশনের চেয়ারম্যান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সদস্যসহ কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ উপস্থিত থাকেন। গত ৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ শুক্রবার বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার "উপসহকারী প্রকৌশলী" পদের নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করে সকাল ৯.২৫ মিনিটে লটারি করে কোন্ সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে সে বিষয়টি সকাল ৯.৩০ মিনিটে সংশ্লিষ্টদের এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। এ কারণে কোন্ সেট প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে তা পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে কারোরই জানার সুযোগ নেই। কমিশনের আওতাভুক্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রশ্নপত্র সমীক্ষণ ও মুদ্রণ সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে করা হয় এবং তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এ সব কারণে পরীক্ষা শুরুর পূর্বে প্রশ্নপত্র ফাঁস হবার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে। উল্লেখ্য, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি যে কোনো ব্যক্তির নজরে আসার সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ থাকে। কিন্তু পরীক্ষা অনুষ্ঠানের দুইদিন পরে চ্যানেল-২৪ কর্তৃক প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ কিনা তা নিশ্চিত হবার কোনো সুযোগ নেই।
বিপিএসসি'র কার্যক্রম ও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ সমাজসহ জনমনে সুদৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। বিপিএসসি'র নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম সকল মহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
সেই আস্থা ও বিশ্বাস সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে যথাসময়ে অভিযোগ না হওয়া সত্ত্বেও যদি কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ গত ০৫ জুলাই ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা প্রতারণা বা অন্য কোনো অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত প্রমাণ হয়, তাহলে কমিশন সংশ্লিষ্টের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।